- Sri Sathya Sai Balvikas - https://sssbalvikas.in/bn/ -

পাঁচটি মূল্যের আত্মীকরণ

Print Friendly, PDF & Email [1]
[vc_row][vc_column el_class=”bn-hind-siliguri”][vc_column_text el_class=”bn-hind-siliguri”]
মহাজাগতিক নৈতিক শৃঙ্খলা

বিশ্বে একটি নৈতিক শৃঙ্খলা বিদ্যমান। সবকিছুই কয়েকটি অলঙ্ঘ্য নিয়মের দ্বারা শাসিত হয়ে থাকে। সৃষ্টির প্রতিটি কণা,প্রতিটি প্রজাতি ও প্রাণীই কিছু নৈতিক দায়বদ্ধতা ও কর্তব্যের বাঁধনে বাঁধা। ঈশ্বরের এষণায় যে নকসা আঁকা আছে,তাতে প্রতিটি বস্তু ও প্রাণীর জীবনেরই একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য রয়েছে। যখন সবকিছু সেই ধর্মের বলয়ের মধ্যে থাকে ও যখন প্রতিটি বস্তু/নর/নারী নিজের নিজের ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলে,সেগুলি লঙ্ঘন করেনা, একমাত্র তখনই মহাজগতে শৃঙ্খলা,শান্তি ও সামঞ্জস্য বজায় থাকে। তখনই সৃষ্টির জন্য ঈশ্বরের যে পরিকল্পনা ও উদ্দেশ্য,সেগুলি স্বীয় লক্ষ্যে পৌঁছে সার্থকতা লাভ করে।

বলা হয় যে ঈশ্বর নিজের রূপের মতন করেই মানুষকে রূপ দিয়েছেন। তার অর্থ দাঁড়ায় এই যে মানুষের মধ্যে কিছুটা অন্তত ঐশ্বরিক গুণাবলি রয়েছে। মানুষের বোধ ও বুদ্ধিতে এই কথাই মনে হয় যে তিনি সম্পূর্ণ নিঁখূত এবং সর্বগুণ সমন্বিত, তাই না? যথার্থই তিনি সকল পবিত্র গুণের আধার। যেহেতু মানুষ তাঁরই প্রতিচ্ছবি,তাই মানুষের হৃদয়েও এই সকল দিব্য গুণগুলির কিছুটা থাকবে, অন্তত পক্ষে তার বীজগুলি উপস্থিত থাকবে। এই বীজগুলি যাতে পরিপূর্ণ রূপে অঙ্কুরিত ও প্রস্ফুটিত হয় তার জন্য এবং মানুষ যাতে সেই দিব্য উৎকর্ষতাকে ও গুণগুলিকে বিকশিত করে জীবনের পথে চলতে পারে তার জন্য, ঈশ্বর তাকে প্রয়োজনীয় বৃত্তিগুলি উপহার দিয়েছেন, বিশেষ করে বুদ্ধি ও বিচার ক্ষমতা।

মানুষ ঠিক ও ভুলের বিচার করতে পারে। তার চিন্তাকে অন্তর্মুখী করার ক্ষমতা আছে।তার নিজের আচরণকে সংযত করার ক্ষমতা আছে।সে নিজের সাধনার দ্বারা নিজের চৈতন্যকে ঊর্দ্ধে নিয়ে যেতে পারে।এইভাবে মানুষ সার্বিক চৈতন্যে পৌঁছে তার যাত্রা সমাপ্ত করতে পারে। সে যা সত্য ও প্রকৃত তার পূর্ণ রূপের দর্শন লাভ করতে পারে। জন্ম থেকেই সে সৃষ্টির যেকোন প্রাণীর থেকে বিবর্তনের সোপানের অনেক ঊর্দ্ধে বিরাজ করে। পশুরা আত্মসচেতন হয় না। তারা সহজাত প্রবৃত্তি ও আবেগের দ্বারা শাসিত হয়ে তদনুযায়ী আচরণ করে থাকে। মানুষের কথা আলাদা। তার ধী শক্তি আছে। সে যুক্তির আলোয় বিচার করে নিজের আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে; নীচ প্রবৃত্তিকে সে দমন করতে পারে; মানুষ নিজের প্রকৃতিকে ছাড়িয়ে যেতে পারে; নিজের ঔজ্জ্বল্যকে নিজেই ছাপিয়ে যেতে পারে। মনুষ্যত্বকে অতিক্রম করে নিজেকে দিব্যত্বের স্তরে নিয়ে যাবার সকল সম্ভাবনা তার অন্তরে নিহিত আছে। পশু থেকে মানুষ, মানুষ থেকে ঈশ্বর, এই হল বিবর্তনের ধারা।

নিজেদের দিব্যত্বের স্তরে উন্নীত করা হয়তো একটি সুদূর প্রসারী পদ্ধতি। হয়তো বহু জন্ম লাগবে। কিন্ত মনুষ্য পদবাচ্য হয়ে,জীবনের প্রাথমিক মূল্যবোধগুলি মেনে তদনুযায়ী জীবন যাপন করার শক্তি অবশ্যই আমাদের সবার মধ্যে আছে। কিন্ত আমরা যদি নিজেদের ওপর নিয়ন্ত্রণ না রাখি এবং আমাদের অন্তরে যেসব পাশব প্রবৃত্তি ও তাড়নাগুলি বিগত জন্মগুলি থেকে আমাদের ওপর তাদের ছায়া ফেলছে,তাদের ইচ্ছামতন চলতে দিই, এবং নিজেদের প্রকৃতিকে পুণর্নির্মান ও তার সংস্কৃতি সাধন করার বিন্দুমাত্র চেষ্টা না করি,নিজেদের আচরণ যদি বিশৃঙ্খল ও অনিয়ন্ত্রিত হয়,তাহলে আমরা কখনই নিজেদের মনুষ্যত্বের উপযুক্ত বলতে পারিনা; সেক্ষেত্রে,বিবর্তনের সোপানের ঊর্দ্ধ ধাপে থাকা সত্ত্বেও মানুষ বলে গ্রাহ্য হওয়ার সকল দাবী আমাদের ত্যাগ করতে ও হারাতে হবে।

আমাদের আচরণ কেমন হওয়া উচিত, তার পথনির্দেশ করার জন্য, আমাদের শাস্ত্রে নৈতিক মূল্যবোধগুলির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাত কী করা ঠিক ও কোনটা করা ঠিক নয় তা বলা হয়েছে। এগুলিকে ধর্ম শাস্ত্র বলা হয়। যদি আমরা এগুলি মেনে চলি,এই বিধিগুলিকে অতিক্রম না করি,তাহলে আমরা প্রমাণ করতে পারব যে আমরা মানুষ এই পদলাভের অধিকারী। একমাত্র তাহলেই, মহাজগত যে নৈতিক শক্তির দ্বারা শাসিত হয়,তার সুরে আমরা সুর মেলাতে পারব।

মানবজাতির জন্য পাঁচটি মূখ্য বিধি বা জীবনের পাঁচটি মূল্যবোধ:

সকল নৈতিক বিধি অর্থাত ধর্ম শাস্ত্রকে সংক্ষিপ্ত আকারে, জীবনের পাঁচটি মূল্যবোধের সাহায্যে ব্যক্ত করা যায়। এগুলি হল,১) সত্য, ২)ধর্ম ৩) শান্তি ৪) প্রেম ও ৫) অহিংসা। সকল নৈতিক বিধি এই পাঁচটি মূল্যবোধের মধ্যে পড়ে ও এগুলির দ্বারা পরিধিকৃত। এরা পৃথিবীর সকল ধর্মের ভিত্তি স্তম্ভ স্বরূপ; ভগবান শ্রী সত্য সাই বাবার লক্ষ্যেরও এগুলি স্তম্ভ। এদের দ্বারা নির্দেশিত পথকেই আমাদের জীবনের পথ করে নিতে হবে। আসুন, আমরা এগুলি বোঝবার চেষ্টা করি যাতে আমরা সেগুলিকে নিজেদের জীবনে সম্পূর্ণ ভাবে গ্রহণ করতে পারি,সেগুলির অভ্যাস করতে পারি, দৈনন্দিন জীবনে তার প্রয়োগ করতে পারি। এইভাবেই তো আমরা আরো মহান হতে পারব।

  1. সত্য
  2. ধর্ম
  3. শান্তি
  4. প্রেম
  5. অহিংসা
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]