অসতো মা শ্লোক – বিশদ পাঠ
অসতো মা শ্লোক- বিশদ পাঠ
‘প্রশান্তি বাহিনী’ গ্রন্থে স্বামী বলেছেন:
ভগবানের আশীর্বাদধন্য হয়েও মানসিক শান্তি বজায় রাখতে হবে ও ধৈর্যের সাথে প্রতীক্ষা করতে হবে। সাধনার ফলস্বরূপ আসে শান্তি। যে সাধনার সাথে আপনি যুক্ত, সেই সাধনা ও শান্তিমন্ত্রের সাথে এই জ্ঞানকে যুক্ত করুন।
“ অসতো মা সদগময়
তমসো মা জ্যোতির্গময়
মৃত্যোর্মা অমৃতং গময়,”
এটি হ’ল শান্তিমন্ত্র। এই মন্ত্রের অর্থ বহুজন বহুভাবে দিয়েছেন, কেউ কেউ বিশদে, আবার কেউ কেউ সংক্ষেপে।
- “হে প্রভু, যখন আমি জাগতিক বস্তুর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে সুখলাভের চেষ্টা করি, তখন আমাকে সেই মোহ থেকে মুক্ত ক’রে প্রকৃত সুখের পথে চালনা করো।” এটি হ’ল প্রথম প্রার্থনা।
- “যখন জাগতিক বস্তুসকল আমাকে আকর্ষণ করে, তখন সেই অন্ধকার কে দূর করো যা আত্মাকে আচ্ছন্ন করে।” এটি হ’ল দ্বিতীয় প্রার্থনা।
- “হে প্রভু, সমস্তকিছুতে বর্তমান আত্মার উৎকর্ষ থেকে প্রাপ্ত অমৃতত্ব বা পরমানন্দের দিব্যত্ব নিয়ে আমাকে আশীর্বাদ করো।” এটি হ’ল তৃতীয় প্রার্থনা। এটিই এই মন্ত্রের প্রকৃত অর্থ।
প্রকৃত ভক্ত সর্বদা ভগবানের মধ্যেই বাস করেন। তার নিজের মঙ্গল-অমঙ্গল সম্বন্ধে জ্ঞানলাভের কোনোরূপ সময় থাকেনা। তার মনের এক এবং একমাত্র বিষয় হয় ঈশ্বর লাভ। উদাহরণ ছাড়া এই বিষয়টি বোঝা কঠিন। একটি ছোট শিশু তার মাকে খোঁজার জন্য ‘মা, মা’ ব’লে ভয়ে চিৎকার করতে করতে দৌড়োয়। তার মা তাকে নিয়ে কোলে বসান। শিশুটি কান্না থামায় ও সকল ভয় থেকে মুক্ত হয়। কিন্তু শিশুটি কি তার কিছুক্ষণ আগের অবস্থা ও বর্তমান অবস্থার মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারে? না, এটি বোঝাটাও প্রয়োজনীয় নয়।
একইভাবে যিনি ঈশ্বরের সেবা করতে চান, সেই শুভ সময় আসা মাত্রই তিনি নিজেকে তার মধ্যে সম্পূর্ণ রূপে নিয়োজিত করবেন, সেই মুহুর্তে কোনপ্রকার দুশ্চিন্তা বা সমস্যা থাকে বিচলিত করতে পারবে না। সেই দিব্য সময় আসার আগে পর্যন্ত দুশ্চিন্তা বা সমস্যা তাকে বিচলিত করতে পারে, তারপর সমস্ত মনোযোগ সেই দিব্য অভিজ্ঞতা লাভের ক্ষেত্রে নিয়োজিত হয়। অতীতের কষ্ট ও সমস্যা তখন আর মনে আসে না।
[Ref: http://saibaba.was/vahini/prashanthivahini.html]