যুদ্ধ শুরু হল

Print Friendly, PDF & Email
যুদ্ধ শুরু হল

The War Begins

রাম সকল মুখ্য নেতাদের ডাকলেন। তাঁদের শহরের চারটি দ্বার রুদ্ধ এবং সুরক্ষিত করবার কাজে নিযুক্ত করলেন । বানরদের নেতা সুগ্রীব, ভল্লুকদের নেতা জাম্ববান আর রাক্ষসদের নেতা বিভীষণ একসঙ্গে মিলিত হলেন। তাঁরা সিদ্ধান্ত নিলেন তাঁদের সৈন্যদের চারজন সেনাপতি ও পরামর্শদাতার অধীনে ভাগ করে দেবেন। তারপর তাঁরা রামের চরণ স্পর্শ করে আশীর্বাদ নিলেন এবং শত্রুকে আক্রমণ করার নির্দেশ দিলেন।

গুরুরা বাচ্চাদের বোঝাবেন যে, প্রভু রাম একজন আদর্শ দলপতি। যদিও তিনি অবতার, সর্বজ্ঞ ও সর্বশক্তিমান, তবুও তিনি তাঁর দলের কাউকে হেয় করেন নি, বরং প্রত্যেককে স্বীকৃতি দিয়েছেন, সবার সঙ্গে যুদ্ধের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন, সবার মতামত চেয়েছেন। উনি ধৈর্য ধরে সবার মতামত শুনেছেন, তাঁর দলের সকল সদস্যের সহজাত প্রতিভাকে মর্য্যাদা

দিয়েছেন — বানর বা ভল্লুক বলে তাদের ছোট করেননি এবং তাদের ক্ষমতা অনুযায়ী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজে তাদের নিয়োজিত করেছিলেন।

শিক্ষণীয় মূল্যবোধ : এই পৃথিবীতে সকল সৃষ্টির মধ্যে কোনো না কোনো সম্ভবনা সুপ্ত থাকে। প্রকৃতির সকল সৃষ্টিকে তাই শ্রদ্ধা করা উচিৎ।

[গুরুরা তাদের বিচক্ষণতা প্রয়োগ করে এই বিষয়টি শিশুদের সঙ্গে আলোচনা করবেন– ছাত্র যদি খুব ছোট হয় তাহলে তাদের বয়সোচিত উদাহরণ দিয়ে বোঝাতে হবে।]

বানররা পাথরের চাঁই ও গাছ বহন করে আনতে লাগল। হৃদয়ে রামকে অধিষ্ঠিত করে এবং জিহ্বায় রাম নাম করতে করতে তারা লঙ্কায় প্রবেশের পথ তৈরি করে নিল।

পূর্ব দ্বারে ঝড়ের মতো ঝাপিয়ে পড়ল নলের নেতৃত্বাধীন সেনার দল, দক্ষিণ দ্বারের সেনাদের পরিচালনা করলেন অঙ্গদ আর পশ্চিম দ্বার আক্রমণ করল হনুমানের সেনাদল। শহরের উত্তর প্রান্তের প্রহরায় ছিলেন স্বয়ং রাবণ, তাই স্বয়ং রাম তার সঙ্গে যুদ্ধ করলেন। বানরেরা প্রবল ভাবে যুদ্ধ করে সর্বত্র জয়ী হল। রাত্রি নামলে, রাক্ষসদের শক্তি ও রোষ দ্বিগুণ বৃদ্ধি পায় কারণ তারা নিশাচর প্রাণী। রাম আগ্নেয়াস্ত্র তূণ থেকে বের করে নিক্ষেপ করার ফলে চতুর্দিক আলোকিত হয়ে উঠল। বানর ও ভল্লুকেরা দ্বিগুন শক্তি ও উৎসাহের সঙ্গে শত্রুদের প্রতিরোধ এবং নিধন করতে থাকল।

গুরুরা বাচ্চাদের বলবেন যদিও অসুরের তুলনায়, বানরেরা দুর্বল প্রাণী, তবুও তারা শত্রু নিধন করতে সক্ষম হয় কেবল মাত্র প্রার্থনা, নাম স্মরণ ও শরণাগতির দ্বারা।

আত্মবিশ্বাস ও ভগবানের প্রতি ভক্তি ও বিশ্বাস দ্বারা জীবনের যে কোনো প্রতিকূলতায় জয়লাভ করতে পারি। সফলতা অর্জনের জন্য আমাদের একনিষ্ঠ প্রচেষ্টা করতে হবে।

শিক্ষণীয় মূল্যবোধ : হৃদয়ে রাম, হাতে কাজ।

[এই পৃথিবীতে ভগবানের নাম নিয়ে আমাদের জন্য নির্ধারিত সকল কাজ করতে হবে ]

পূর্ণ প্রচেষ্টাই হল পূর্ণ জয়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: