যদা যদা হি বিশদ পাঠ
যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত।
অভ্যুত্থানমধর্মস্য তদাত্মানং সৃজাম্যহম্।। (৪/৭)
“যখনই এ জগতে ধর্মের পতন হয় এবং অধর্মের উদয় হয় তখনই আমি দেহধারণ করে পৃথিবীতে অবতার হয়ে নেমে আসি”।
ঈশ্বর নিজের উদ্যোগেই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টিকে সচল রাখতে তিনি প্রত্যেকের জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম কানুন তৈরি করেছেন। বিশ্বের প্রত্যেক মানুষের জন্য কিছু আচরণ নির্দিষ্ট করা আছে। যেগুলি পালন করা তার ধর্ম। যখন মানুষ এই ধর্ম থেকে বিচ্যুত হয়, সে অধর্ম করে। এটা অনেকটা শস্যের উপর আগাছা জন্মানোর মত। আগাছামুক্ত না করলে ফলন ভালো হয় না। যখন নিয়মশৃঙ্খলার অবলুপ্তি ঘটে, সকলে জীবনের আসল উদ্দেশ্য বিস্মৃত হয়, অসদাচার পৃথিবীকে চালিত করে, মানুষকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার জন্য তখন ঈশ্বর স্বয়ং পৃথিবীতে অবতীর্ণ হন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন যখন পৃথিবী কে উদ্ধার করার প্রয়োজন হয় তিনি নানা রূপে এবং নানা নামে ধরাধামে অবতীর্ণ হন। হিরণ্যকশিপু, যিনি ছিলেন মানুষ অথবা পশুর অবধ্য, তাকে বধ করার জন্য তিনি নরসিংহ (অর্ধেক মানুষ অর্ধেক সিংহ) রূপ ধারণ করেন। রাবণকে বধ করার জন্য তিনি রাম রূপে আবির্ভূত হন। নিষ্ঠুর এবং মন্দ রাজা কংস এবং কৌরবদের বিনাশ করতে তিনি কৃষ্ণ রূপে জন্মগ্রহণ করেন। পুর্বজন্মের সৎ এবং অসৎ কর্ম অনুসারে মানুষ জন্মগ্রহণ করে। মানুষের জন্ম কে বলে কর্মজন্ম। ঈশ্বরের দেহধারণ হলো লীলাজন্ম। তিনি স্বেচ্ছায় জন্মগ্রহণ করেন। সৎ মানুষের প্রার্থনার ফলস্বরূপ তথা অসৎ মানুষের অসৎকর্ম ঈশ্বরের জন্মগ্রহণ করার কারণ।