ওম- ভগবান শ্রী সত্য সাইবাবার দিব্যবাণী

Print Friendly, PDF & Email
ওম- ভগবান শ্রী সত্য সাইবাবার দিব্যবাণী
  • ওম অবিকারী, শাশ্বত, সর্বব্যাপী পরমেশ্বরের প্রতীক———ওম মহাকাশে তারাদের গতির শব্দ; এ সেই শব্দ যার অভিব্যক্তি হয় সেই প্রভাতে যেদিন সৃষ্টির অভিলাষ নিরাকারকে (যার আকার নেই) গতিমান করল। SSS VI Chap XLII
  • যে কোনো ক্ষুদ্রতম গতি থেকেও শব্দ উৎপন্ন হয়। তোমাদের শ্রবণ ক্ষমতা সীমিত বলে, তোমরা সেটা শুনতে পাওনা। চোখের পলক পড়লেও শব্দ হয়;ফুলের পাপড়ির ওপরে যখন শিশির পড়ে, তারও শব্দ হয়। যেকোনো সামান্য বিক্ষোভে যদি সাম্য বিচলিত হয়, তার থেকেও অবশ্যই শব্দ উৎপন্ন হবে। যে গতির সাহায্যে ব্রহ্ম নিজের সৃষ্ট মায়াতে নিজেকেই আবৃত করলেন এবং তার ফলে যে শব্দ উৎপন্ন হল ,তাই হল প্রণবশব্দ বা ওম। গায়ত্রীতে ওমের বিশদ ব্যাখ্যা রয়েছে এবং সেই কারণে গায়ত্রী এতটাই মহিমান্বিত ও মূল্যবান, যে তার ধ্যান দিয়েই আধ্যাত্মিক জীবনের পথ চলা শুরু হয়। SSS IV Chap XVIII.
  • যদি তোমাদের শোনবার ক্ষমতা থাকে তাহলে প্রতিটি শব্দেই শুনতে পাবে, ওম ঈশ্বরের উপস্থিতি ঘোষনা করছে। পঞ্চভূতের প্রতিটিই ‘ওম “এই শব্দ উৎপন্ন করে। মন্দিরে যে ঘন্টা বাজে তাও ঘোষনা করে যে ওম সর্বব্যাপী ঈশ্বরের প্রতীক। ঘন্টাধ্বনি যখন ওম বলে তখন তোমাদের অন্তরে জেগে ওঠেন। তোমরা হৃদয়ে তাঁর উপস্থিতি অনুভব করো। মন্দিরের গর্ভগৃহের সামনে ঘন্টা বাজানোর এটাই তাৎপর্য। SSS I, Chap IX.
  • অন্য সব শব্দ বা পদের সঙ্গে ওমের পার্থক্য কোথায়? ওঙ্কারের উচ্চারণে এবং যে লক্ষ্যের সে প্রতীক ,তার এক অনন্য সাধারণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। অন্য অক্ষর যখন উচ্চারিত হয়, তখন ওষ্ঠ,জিহ্বা, গাল ও চোয়াল ব্যবহৃত হয়। কিন্তু ওঙ্কারের উচ্চারণে এদের কারোকেই সক্রিয় হতে হয়না। এটি ওঙ্কারের একটি অনন্যসাধারণ বৈশিষ্ট্য। এই কারণেই একমাত্র “ওম “কেই অক্ষরম (অবিনাশী )বলা যায়। অন্য সকল শব্দই বিভিন্ন ভাষার প্রকাশ।
  • শ্রেষ্ঠ (আধ্যাত্মিক) উপদেশ হল প্রণব, পবিত্র অক্ষর ওম; সেটি ধর্মউত্তাল তত্ত্ব, দর্শন এবং অতীন্দ্রিয়াবাদের বহু তত্ত্বের সমাহার। শিশুরা যখন প্রথম হাঁটতে শেখে তখন তাদের তিন চাকাওয়ালা একটি জিনিস দেওয়া হয় যার ডান্ডা ঠেলে ঠেলে তারা হাঁটতে শেখে। ওম আধ্যাত্মিক পথে যারা শিশু তাদের হাঁটার জন্য এমনই এক কল। এর তিনটি চাকা হল মন্ত্রের তিনটি উপাদান অ, উ এবং ম। প্রাণ বায়ুর মধ্যে যে আদি শব্দ ধ্বনিত হয়, সেটা ওম। SSS Chap XLVI.
  • হাতল বাঁশি হল কৃষ্ণ চতুর্বেদ অভিব্যক্তি ও সম্প্রাসারণ এবং ওম হল তাদের সার।
  • ওম রাম তত্ত্বের প্রতীক। রাম, লক্ষণ, ভরত ও শত্রূঘ্ন এই চার ভাই হল, ঋক, যজুঃ, সাম এবং অথর্ব বেদের প্রতিভূ। SSS XXX IV, Chap IX.
  • প্রণব জপ্ (ওঙ্কার নাম জপ্ এবং এই রহস্যময় অক্ষরের ধ্যান )উত্তাল ঢেউকে শান্ত করে। বেদে কথিত ঈশ্বর বিষয়ক এবং ঈশ্বরের আরাধনা পদ্ধতি বিষয়ক সকল শিক্ষার সার হল ওম।; ওম ইতি একাক্ষরম ব্রহ্ম —ওম এই একটি অক্ষর স্বয়ং ব্রহ্ম।
  • একবার শ্রী রামকৃষ্ণ এক নেশাগ্রস্ত ব্যক্তিকে বলেন যে সে দিনে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ আফিমই খেতে পারে; তিনি তাকে একটি খড়ি বা চক দিয়ে বললেন, সেটি প্রত্যহ ওজন করে, তার সমপরিমাণ আফিম সে খেতে পারে। কিন্তু সঙ্গে তিনি একটি শর্ত দিলেন; তার এই কু -অভ্যাসকে জয় করতে শর্তটি কতটা উপকারী সেটি ওই নেশাগ্রস্ত ব্যক্তি তখন বোঝেনি। শর্তটি ছিল এই যে ,প্রত্যেকবার ওজন করার, তাকে একবার শ্লেটে ওম লিখতে হবে। এইকথা মেনে নিল; প্রতিবার ওম লেখার সঙ্গে সঙ্গে চকের ওজন কমতে লাগলো, এবং এইভাবে একদিন সেটি ফুরিয়ে গেল। আফিমে বুঁদ হয়ে থাকার শান্তি থেকে ঈশ্বর আসক্তির চিরস্থায়ী শান্তিতে তাকে নিয়ে যেতে সাহায্য করল ‘ওম।’. SSSVII Chap XLIII
  • ওম তিনটি শব্দের সমষ্টি;
  • অ (aa) যা নাভি থেকে উৎপন্ন হয়, উ (oo) যা কণ্ঠ ও জিহ্বা থেকে প্রবাহিত হয় এবং ম (mm) যা বদ্ধ ওষ্ঠে গিয়ে সমাপ্ত হয়।
  • अ नाभीपासून उत्पन्न होतो, ॐ घशातून जीभेपयंत येतो आणि म म्हणून मिटलेल्या ओठांनी त्याची सांगता होते.
  • টি যতটা সম্ভব ধীরে নীচু থেকে ক্রমশঃ উচ্চগ্রামে উচ্চারণ করতে হবে। আবার নামার সময়ে তেমনি ধীরে ধীরে নামতে হবে; যতক্ষণ না ‘ম’ এর উচ্চারণের শেষে হৃদয়ের কন্দরে নীরবতা অনুভূত হয়।
  • অতক্ষণ শ্বাস ধরে রাখতে পারিনা বলে দুটি খেপে উচ্চারণ কোরোনা।
  • যতক্ষণ না এমন অবস্থায় পৌছবে, যখন ওঠার সময় এবং নামার সময়ে ও সেই ক্রমে নীরবতায় পৌঁছে যাওয়ার সময় সেটি তোমাদের নাড়িয়ে দিয়ে যাচ্ছে, ততক্ষণ তোমাদের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
  • এ গুলি যথাক্রমে জাগ্রৎ, স্বপ্ন ও সুষুপ্তি এবং তারও পরে যে চতুর্থ অবস্থা আছে, তারই প্রতিভূ। এটি আরো একটি জিনিষকে বোঝায়, তা হল নিজের ব্যাক্তিত্বরূপ পুষ্প ধীরে ধীরে কেমন করে ফলে পরিণত হয় এবং নিজের অন্তরের সার থেকে মিষ্ট রসে নিজেকে পূর্ণ করে তোলে। তারপরেই বৃক্ষ থেকে তার মুক্তি ঘটে। SSS X Chap XIII.
  • প্রশান্তি নিলয়মে এরকম নিয়ম আছে যে প্রত্যুষে একুশবার ওঙ্কার করা হয়।
  • সংখ্যাটি কোনো যুক্তি ছাড়াই নির্ধারিত হয়নি; তার নিজস্ব তাৎপর্য রয়েছে। আমাদের পাঁচটি কর্মেন্দ্রিয় ও পাঁচটি জ্ঞানেন্দ্রিয় আছে; এ ছাড়া প্রাণ (পঞ্চ প্রাণশক্তি বা বায়ু) আমাদের বাঁচিয়ে রাখে; তারপরে আছে পঞ্চকোষ (আবরণ), যা দিব্য জ্যোতি বা সত্যস্বরূপকে ঘিরে রাখে। এই সবগুলি জুড়লে কুড়িটি হয়।
  • অতএব একুশবার ওঙ্কার এই কুড়িটি উপাদানকে শুদ্ধ করে এবং নির্মল করে;এবং মানুষকে সেই একুশতম দ্রব্যে পরিণত করে, যা তখন সত্যের সঙ্গে চরম মিলনের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। জীবতত্ত্ব মিলে যায় পরমতত্ত্বের সঙ্গে। SSS XIV Chap III.
  • জীবতত্ত্বকে কুড়িটি মাথাওয়ালা একটি ঘোড়ার সওয়ারী বলে কল্পনা করা যায়।.
  • প্রণব উচ্চারণের শেষে তিনবার ‘শান্তি’ বলে তোমরা প্রক্রিয়াটি শেষ করো। এতে নির্মল করা ও শুদ্ধ কারার প্রক্রিয়াটি সমাপ্ত হয়।
  • প্রথম শান্তি উচ্চারণ আমাদের আধিভৌতিক (দেহের) শুদ্ধির জন্য করা হয়।
  • দ্বিতীয় শান্তি উচ্চারণ করা হয় আধিদৈবিক (মনের) শুদ্ধির জন্য।
  • তৃতীয় শান্তি উচ্চারণ করা হয় আধ্যাত্মিক (আত্মার) শুদ্ধির জন্য।
  • প্রণব উচ্চারণ তোমাদের শক্তি দেবে ,মনের সব বিক্ষোভ শান্ত করবে এবং কৃপার বর্ষণকে ত্বরান্বিত করবে। SSS XIV Chap III
অন্যান্য A/V রেফারেন্স:

ডাক্তার শ্রীকান্ত সোলা একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ যিনি ব্যাঙ্গালোরের” শ্রী সত্য সাই ইনস্টিটিউট অফ হায়ার মেডিকেল সাইন্সেস” এর সঙ্গে যুক্ত।. তিনি ২০১২ সালের ১২থেকে ১৪ই অক্টোবর U .S .এর এক নম্বর এলাকার সত্য সাই সেবা সংস্থা আয়োজিত’ সাইলেন্ট রিট্রিট ‘এ বক্তব্য রাখেন। তাঁর বক্তৃতার চতুর্থ পর্যায়ে ডাক্তার সোলা আমাদের আদি শব্দ ওমের ( AUM ) এর উচ্চারণ এবং তার পিছনের যুক্তি সম্পর্কে সাই যা শিক্ষা দিয়েছেন তার থেকে সংগৃহীত জ্ঞানের এক একটি মুক্তার সঙ্গে আমাদের পরিচয় করান। ডাক্তার সোলার ভাষণটি দেখতে নিম্নোক্ত লিংকটিতে ক্লিক করুন:

http://saicast.org/2012/20121012sola.html
[Source : SSS -7, Chap. 43]

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।