শৃঙ্খলা
শৃঙ্খলা
শৃঙ্খলার অর্থ যথাযথ আচরণবিধি মনে চলার ক্ষেত্রে জনগণের প্রশিক্ষণ। নিয়মবিধি পালনের ক্ষেত্রে আমাদের পিছপা হওয়া উচিত নয়। এগুলো আমাদের উপকারের জন্যই। শৃঙ্খলা ছাড়া কখনো যশলাভ হয় না ।( ন শ্রেয় নিয়মং বিনা )। ব্যক্তির চরিত্র ও গুণের উৎকর্ষ সাধনের জন্য শৃঙ্খলার আবশ্যকতা রয়েছে। কুঅভ্যাস দূরীকরণ ও সুঅভ্যাস অর্জনে শৃঙ্খলা অত্যন্ত সহায়ক।
চরিত্রে গুণাবলি অর্জনের ক্ষেত্রে ভগবান শ্রী সত্যসাই বাবা একটি পদ্ধতি উল্লেখ করেছেন ।
চিন্তা কর্মের উদ্ভব ঘটায়
পরিবর্তে, কর্ম অভ্যাসের জন্ম দেয়
অভ্যাস মানবচরিত্র গঠন করে ।
চরিত্রের নির্ধারণ করে ভাগ্য ।
চরিত্রহীন জীবন হ’ল প্রদীপহীন মন্দিরের মত
(শ্রী সত্যসাই বাণী, খণ্ড ৮এ, পৃষ্ঠা- ২২৭)
প্রকৃতি থেকে আমাদের শৃঙ্খলা শেখা উচিত-
প্রকৃতিতে সবকিছুই তাদের নির্ধারিত আচরণবিধি মেনে চলে। সূর্য, চন্দ্র, গ্রহ, নক্ষত্র, জীবজগৎ- সবকিছুই নির্দিষ্ট নিয়মের অধীন। (গুরুরা সৌরজগৎ, সূর্যোদয়, রাস্তার সুনিয়ন্ত্রিত যান চলাচল প্রভৃতি চিত্রের মাধ্যমে দেখাবেন ও শৃঙ্খলা না থাকলে কী হত তা আলোচনা করবেন।)
“ তোমার মধ্যে ভক্তি থাকতে পারে, তোমার কর্তব্য তুমি পালন করতে পারো । কিন্তু তোমার মধ্যে শৃঙ্খলা না থাকলে তা অর্থহীন । জীবনের সবকিছু শৃঙ্খলা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়া প্রয়োজন।”—-ভগবান বাবা
শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবনযাপন করার ক্ষেত্রে ভগবান বাবা নিম্নোক্ত উপায় বলেছেন –
- ১. দিব্যপথ অনুসরণ করো-
খারাপ কিছু দেখবে না, যা কিছু ভালো তা-ই দেখবে
খারাপ কিছু শুনবে না, মা কিছু ভালো তা-ই শুনবে
খারাপ কিছু বলবে না, যা কিছু ভালো তা-ই বলবে
খারাপ কিছু ভাববে না, যা কিছু ভালো তা-ই ভাববে
খারাপ কিছু করবে না, যা কিছু ভালো তা-ই করবে - ২. বাসনার সীমিতকরণ-
সময় নষ্ট করো না
শক্তির অপচয় করো না
অর্থের অপচয় করো না
খাদ্যের অপচয় করো না - ৩. আধ্যাত্মিক শৃঙ্খলা অর্জনের ক্ষেত্রে প্রথম ধাপ হ’ল বাক্ সংযম। নম্র ভাবে কথা বলো। কখনো পাণ্ডিত্য বা ধনসম্পদের অহঙ্কার করবে না। বিনয়ী হও, মনে সেবার মানসিকতা পোষণ করো, কথা বলার ক্ষেত্রে সংযমী হও।। নীরবতার অনুশীলন করো । এইসব গুণাবলী তোমাকে অশান্তি, বিপদ ও অলস চিন্তা থেকে দূরে রাখবে। (ভগবান বাবার বাণী, খণ্ড ২, অধ্যায় ৬)
- ৪. প্রতিদিন অন্তত ১ ঘণ্টা ক’রে নীরবতার অনুশীলন করো। এটি তোমার শক্তি সঞ্চয় ক’রে মনের শান্তি সুনিশ্চিত করবে। সরল জীবনযাপন ও উচ্চচিন্তার বিষয়টিও অনুশীলন করতে হবে। (ভগবান বাবার বাণী, খণ্ড ৩০, অধ্যায় ১৭)