ভূমি -1
ভূমি -১
ভূমিকা
পাঁচটি মৌলিক উপাদানই ঈশ্বর সৃষ্ট, সুতরাং দিব্য। সেই কারণে আমাদের পূর্বপুরুষেরা পঞ্চভূত কে দেবতা জ্ঞানে পুজো করতেন। আমরা ভূমি – এই উপাদান কে ভূদেবী অথবা ধরিত্রী মাতা হিসেবে পূজা করি। ভূমির যথাযথ ব্যবহার এবং তাকে কলুষমুক্ত রাখা আমাদের কর্তব্য।
গুণ
ভূমির পাঁচটি গুণ – শব্দ, রূপ, স্বাদ এবং গন্ধ। ভূমি থেকে আমরা খাদ্য ও শক্তি পাই ধরিত্রী মাতা আমাদের জীবনকে সচল রাখতে সাহায্য করেন। ধরিত্রী আমাদের সহ্য এবং উদারমনস্কতার শিক্ষা দেয়। ধরিত্রীর বুকের উপর দিয়ে হালকা, ভারী নানা ধরনের গাড়ি চলাচল করে। আমরা যত্রতত্র খনন কাজ করি। ভূমিতে লাঙ্গল দিয়ে চাষ করি। ভূমি নীরবে সবকিছু সহ্য করে। পরিবর্তে আমাদের খাদ্য, জ্বালানি (কয়লা) বিভিন্ন খনিজ পদার্থ দেয়।
গল্প
ফ্রান্সে একটি ছেলে ছিল। সে লাভা পাখি খুব ভালোবাসতো। লাভা পাখি খুব সুন্দর মিষ্টি গান করতে পারে। ফ্রান্সের মানুষ আবার এই পাখির মাংস খেতে খুব ভালোবাসে।
একদিন ওই ছেলেটি লাভা পাখির ডাক শুনতে পেল। চারিদিকে খুঁজে সে দেখল একজন লোক একটা খাঁচায় করে একটা লাভা পাখি বিক্রি করতে নিয়ে যাচ্ছে। ছেলেটি জানত যে ওই পাখি কিনবে সে ওকে মেরে ফেলবে এবং ওর মাংস খাবে। পাখিটা যেন ছেলেটির কাছে সাহায্য চাইছিল। ছেলেটি পাখি বিক্রেতাকে পাখির দাম জিজ্ঞাসা করল। তার নিজের কাছে অত পয়সা ছিল না। বিক্রেতাকে অনুরোধ করলো একটু অপেক্ষা করার জন্য। দৌড়ে সে গেল বাড়িতে মায়ের কাছে। মাকে বাড়িতে পেল না। বাকি টাকার জন্য সে তার মাস্টার মশাই এর কাছে ছুটে গেল। মাস্টারমশাই সঙ্গে সঙ্গে তাকে টাকা দিলেন।
সেদিন ছিল ভীষণ গরম। প্রচন্ড রোদ্দুরের মধ্যে দৌড়ে দৌড়ে সে গেল পাখি বিক্রেতার কাছে। সে দেখল এক মহিলা পাখিটির দরদাম করছে। ছেলেটি টাকা দিয়ে পাখিটিকে কিনে নিল। পাখিটির প্রাণ বাঁচাতে পেরে তার মনে খুব আনন্দ হল। পাখিটাও খুশি হয়ে গান করতে লাগল। পাখিটাকে একটা খাঁচার মধ্যে করে ছেলেটি ফাঁকা জায়গায় গেল এবং খাঁচার দরজা খুলে দিল। কৃতজ্ঞচিত্তে লাভা পাখি তার দিকে দেখল। তারপর নীল আকাশে ডানা মেলে উড়ে চলে গেল।
উদ্ধৃতি
অথর্ব বেদ অনুসারে আমাদের মনোভাব এইরূপ হওয়া উচিত – “ধরিত্রী আমার মা, আমি ধরিত্রীর সন্তান।” এখানে বক্তব্যের উপর গুরুত্ব দেওয়ার জন্য একই কথা দুবার বলা হয়েছে আমরা যদি এই উক্তিটি বারবার বলি আর এই মনোভাব পোষণ করি তাহলে আমরা নিশ্চয়ই ধরিত্রী মা তাকে মুক্ত রাখতে পারব এবং ভূমি এই মৌলিক উপাদানকে সংরক্ষণ করতে পারব।
নীরব উপবেশন
শিশুদের কোন এক গ্রামে মানস ভ্রমণে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে তারা মাঠের ধারে চুপ করে বসবে আর মনে মনে চিন্তা করবে –
- চারিদিকে ছোট-বড় নানা রকম গাছ।
- আকাশে সূর্য ঝলমল করছে, মৃদুমন্দ বাতাস বইছে।
- ট্রাক্টর এর সাহায্যে জমিতে লাঙ্গল দেওয়া হচ্ছে। নলকূপ থেকে জল পড়ছে জমিতে। অন্যদিকে ভুট্টার ক্ষেত। ভুট্টা থেকে আমরা আটা পাই। তার থেকে অনেক রকম খাবার তৈরি হয়
- আমাদের জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই রয়েছে চারিপাশে। আমরা প্রয়োজন অনুসারে গ্রহণ করতে পারি। অযথা মজুত করে রাখার কোনো প্রয়োজন নেই।
- পৃথিবী যেন প্রেমের স্বর্ণভূমি। পশুপাখিরা স্বাধীনভাবে প্রকৃতিকে উপভোগ করছে।