বিশ্বমঞ্চে উত্তরণ
বিশ্বমঞ্চে উত্তরণ
১৮৯৩ খ্রীস্টাব্দের ৩১ মে তিনি তাঁর ঐতিহাসিক আমেরিকা ভ্রমণের জন্য বোম্বাই যাত্রা করেন।
তিনি চীন, জাপান, ক্যান্টন ইত্যাদি অতিক্রম করে জুলাই মাসের মাঝামাঝি শিকাগো উপস্থিত হন। ক্যান্টনে গিয়ে তিনি কয়েকটি বৌদ্ধ-মন্দির দর্শ’ন করলেন এবং জাপান গিয়ে তিনি সেখানকার অধিবাসীদের পরিচ্ছন্নতা বোধ ও বাণিজ্যিক অগ্রগতিতে বিমুগ্ধ হলেন। শিকাগো সহরের ঐশ্বর্য’ আড়ম্বর এবং পাশ্চাত্য জগতের প্রতিভাশালী ব্যক্তিদের সমাবেশ তাঁকে শিশুর মতোই বিস্ময়াবিষ্ট করে। সেপ্টেম্বর মাসের আগে ধর্ম’মহাসভার অনুষ্ঠান হবে না, এবং সুপারিশ পত্র না পেলে কেউ সভ্য হতে পারবে না- একথা শুনে তিনি খুবই হতাশ হয়ে পড়লেন। হতাশা বোধ করলেও, তিনি ভগবৎ ইচ্ছাতে নিজেকে সমর্পণ করলেন এবং বোস্টন শহরে চলে গেলেন, কারণ শিকাগো থেকে বোস্টনে ব্যয় ছিল কম। ট্রেনে যাবার সময় মিস্ ক্যাথেরিন স্যানবর্ন’ নামক মহিলার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়; তিনি বিবেকানন্দকে তাঁর আতিথ্য গ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানান। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জন হেনরি রাইট-এর সঙ্গে এই মহিলা বিবেকানন্দের পরিচয় করিয়ে দেন। ঐ অধ্যাপক বিবেকানন্দের দর্শনশাস্ত্রে ব্যুৎপত্তি ও গভীর জ্ঞান দেখে বিস্ময়ান্বিত হন। তিনি ধর্ম’মহাসম্মিলনের সভাপতিকে বিবেকানন্দের জন্য এক পরিচয় পত্র দিলেন যাতে তিনি শ্রদ্ধাভরে উল্লেখ করলেন, ‘এই ব্যক্তির জ্ঞান এত বেশি যে আমাদের সকল অধ্যাপকের সম্মিলিত জ্ঞানও তার সমান নয়।’ অধ্যাপক বিবেকানন্দকে বললেন, ‘আপনার কাছে পরিচয় পত্র চাওয়া, আর সূর্যকে তার কিরণ দেওয়ার অনুমতি আছে কিনা জিজ্ঞাসা করা একই ব্যাপার।’
ধর্ম’মহাসম্মিলন শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগে বিবেকানন্দ শিকাগোর উপস্থিত হলেন, কিন্তু তিনি অবাক হয়ে দেখলেন যে, প্রাচ্যের অতিথিবর্গ’কে যে সমিতি অভ্যর্থনা জানাবেন, তাদের ঠিকানা তিনি হারিয়ে ফেলেছেন। জামাণভাষীদের অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় তাঁর ভাষা কেউ বুঝতে পারে নি। অবশেষে ক্লান্ত হয়ে রেল স্টেশনের মাল ওজনের জায়গায় একটি বাক্সের মধ্যে রাত্রির জন্য আশ্রয় নিলেন। সকালে উঠে তিনি খোঁজ করতে লাগলেন যদি কেউ তাঁর এই বিপদে সহায়তা করেন। কিন্তু কালো গাত্রচর্মে’র জন্য কোনো সাহায্য পাওয়া সম্ভব হয় নি। বৃথা চেস্টায় পরিশ্রান্ত হয়ে, ভগবানের ইচ্ছায় নিজেকে সমর্পণ করে তিনি রাস্তার ধারে বসে পড়লেন; হঠাৎ বিপরীত দিকের এক সুদৃশ্য প্রাসাদ থেকে একজন সম্ভ্রান্ত মহিলা বাইরে বেরিয়ে এসে তাঁর কাছে গিয়ে তাঁকে সাহায্য করতে চাইলেন। তিনি হলেন শ্রীমতী জর্জ’ ডব্লিউ. হেল, এবং যতদিন বিবেকানন্দ আমেরিকাতে ছিলেন তাঁর স্থায়ী ঠিকানা ছিল ঐ ভদ্রমহিলার গৃহ। হেল পরিবারের লোকেরা সবাই বিবেকানন্দের অনুরক্ত শিষ্য হলেন।
১৮৯৩ খ্রীস্টাব্দের ১১ সেপ্টেম্বর ধর্ম মহাসভার উদ্বোধন হল। চারুকলা বিদ্যালয়ের প্রশস্ত কক্ষ দেশের প্রায় ৭০০০ শীর্ষ স্থানীয় সংস্কৃতিবান ব্যক্তি দ্বারা পূর্ণ ছিল। সমগ্র পৃথিবীতে প্রচলিত প্রত্যেক ধর্মে’র প্রতিনিধি মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। বিবেকানন্দ প্রথমে হিন্দুধর্মের প্রতিনিধি হিসাবে পরিগণিত হলেও, তিনি যে বিশেষ কোনো ধর্ম-সম্প্রদায়ের দৃষ্টি- ভঙ্গি অপেক্ষা আরো কোনো সুগভীর তথ্য জানাবেন সে কথা পরে প্রকাশ পেল; তিনি আধ্যাত্মিক সত্যের সার্বজনীনতা সম্পর্কিত সুপ্রাচীন ভারতীয় নীতিকে জানালেন। এর পূর্বে, বিবেকানন্দ কোনোদিনই এত বৃহৎ ও বৈশিষ্ট্যসম্পূর্ণ সভায় ভাষণ দেন নি। তিনি অত্যন্ত ঘাবড়ে গেলেন, কিন্তু যখন তাঁর পালা আসল, তখন তিনি বিদ্যাদেবী সরস্বতীকে স্মরণ করে তাঁর ভাষণের প্রারম্ভেই ‘আমেরিকার ভগিনী ও ভ্রাতাগণ!’ এই বলে সম্বোধন করেন। তৎক্ষণাৎ বিশাল দর্শকমণ্ডলী উচ্চৈস্বরে তাঁকে সাধুবাদ দিতে লাগলেন। ঐ সাধুবাদ পূর্ণ দুই মিনিট ধরে চলেছিল। সাতহাজার দর্শক দাঁড়িয়ে উঠলেন এমন কিছুকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে যা সম্বন্ধে তাঁরা সঠিক সংজ্ঞা নিরূপণে অক্ষম ছিলেন। তিনি কিন্তু বলে চললেন, ‘আপনারা আমায় যে হার্দ্য অভ্যর্থনা করেছেন তার জন্য আমার হৃদয় আনন্দে উদ্বেল হয়ে উঠেছে। পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা প্রাচীন সন্ন্যাসী সম্প্রদায়ের মুখপাত্র হিসাবে আমি আপনাদের অভিবাদন জানাচ্ছি এবং সেই সঙ্গে আমি যাবতীয় হিন্দুজাতি ও হিন্দুসম্প্রদায়ের কোটি কোটি নরনারীর মুখপাত্র হিসাবে আপনাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
এই ভাষণ ৩,৪ মিনিটের বেশি দীর্ঘ সময়ের জন্য ছিল না, কিন্তু ঐ স্বল্পস্থায়ী বক্তৃতা ধর্ম’মহাসভাকে প্রবলভাবে আকৃষ্ট করেছিল; হিন্দুধর্মের উদার সহনশীল ভাবধারা- যাতে বলা হয়েছে যে বিভিন্ন ধর্ম একই ঈশ্বরের কাছে পৌঁছবার বিভিন্ন পথ ছাড়া আর কিছুই নয়। বিবেকানন্দ বললেন, ‘আমরা সকল ধর্মকে সমদৃষ্টিতে দেখি এবং সকল ধর্মকে সত্য বলে বিশ্বাস করি। যে জাতি পৃথিবীর সমুদয় ধর্ম ও জাতির উপদ্রুত ও আশ্রয়লিপ্স জনগণকে অকাতরে আশ্রয় দান করে থাকে, আমি সেই জাতির অন্তর্ভুক্ত বলে নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করি।’ উপসংহারে তিনি বলেন- ‘আমি সর্বতোভাবে আশা করি যে- এই ধর্মসম্মিলনের সন্মানার্থে আজ সকালে যে ঘণ্টাধ্বনি চতুর্দিকে নিনাদিত হয়েছে, সেই ধ্বনিই যেন সর্ববিধ ধর্মোন্মত্ত তরবারি অথবা লেখনীর দ্বারা উদ্ঘাটিত বহু নির্যাতন এবং একই লক্ষ্যের উদ্দেশ্যে অগ্রসরমান ব্যক্তিদের মধ্যে সর্ববিধ অসদ্ভাবকে সমূলে ধ্বংস করে।’ এই ধরনের কথা এই বিশাল সম্মেলনে কেবলমাত্র একজন হিন্দুদ্বারাই উক্ত হতে পারে- যে হিন্দুর সর্বধর্ম সহনশীলতা ও সর্বধর্ম ঐক্যবোধের বিশ্বাস রামকৃষ্ণের উপলব্ধির প্রত্যয়ে পরিণত হয়েছে। বিবেকানন্দের আন্তরিকতায় প্রদীপ্ত সরল ভাষা, তাঁর মহান ব্যক্তিত্ব ও উজ্জ্বল মুখভাব এবং তাঁর গৈরিক পোশাক এতই মনোমুগ্ধকর হয়েছিল যে পরদিন সব সংবাদপত্র বিবেকানন্দকে ধর্ম মহাসভার শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি বলে ঘোষণা করল এক ভিক্ষাপাত্রধারী সরল সন্ন্যাসী ‘অধ্যাত্ম সম্রাট’ রূপে পরিগণিত হলেন।
ধর্ম’মহাসভায় স্বামীজির বাকি ভাষণগুলি দর্শকমণ্ডলী যথোচিত শ্রদ্ধা ও গণগ্রাহিতার সহিত শ্রবণ করলেন- কারণ প্রদত্ত ভাষণের সবগুলিই সর্ব’-ব্যাপকতার সুরে অনুরণিত হয়েছিল।
সময়ে সময়ে তিনি ভারতবর্ষে’র দারিদ্র্যের কথাও উল্লেখ করেন, ‘যে দুর্ভাগ্য আজ প্রাচ্যকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে তা ধর্মের অভাব নয়, খাদ্যের অভাব। তারা আমাদের কাছে খাদ্য চায়, কিন্তু হায়! আমরা তাদের দিই প্রস্তর খণ্ড। বুভুক্ষুকে অধ্যাত্মবিদ্যা শিক্ষা দেওয়া তাকে অপমানেরই নামান্তর।’ তিনি আমেরিকার খ্রীস্টান সম্প্রদায়কে, যাঁরা পৌত্তলিকদের আত্মাকে রক্ষা করার জন্য দেশে বিদেশ ‘মিশনারী’ পাঠান, তাঁদের জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে তাঁরা কেন অনাহার থেকে এই লোকেদের জীবনকে রক্ষার চেষ্টা করেন না?
২৭ সেপ্টেম্বর শেষ অধিবেশনের দিন, স্বামীজি আবার ভাষণের জন্য উঠে সুম্পষ্ট ভাবে বললেন- ‘এই ধর্মমহাসভায় ধর্মসমন্বয়ের সম্বন্ধে অনেক কথা বলা হয়েছে, কিন্তু সেই সমন্বয়- একটি ধর্মের অভ্যুদয় ও অপর একটি ধর্মের বিনাশ দ্বারা সাধিত হবে না। আমার কি ইচ্ছা যে একজন খ্রীস্টান একজন হিন্দু হন? ঈশ্বর তা না করুন। আমার কি ইচ্ছা যে কোনো হিন্দু বা বৌদ্ধ-খ্রীস্টান হন?- ঈশ্বর যেন তা না করেন। কোনো খ্রীস্টান যেমন হিন্দু বা বৌদ্ধ হবে না, সেরূপ একজন হিন্দু বা বৌদ্ধ খ্রীস্টান হবে না, প্রত্যেক ধর্ম অবশ্যই অন্য ধর্মের অন্তর্নিহিত ভাবকে গ্রহণ করবে- তবুও তার নিজস্ব স্বাতন্ত্র্যকে বজায় রেখে নিজের ভাবধারায় বর্ধিত হতে হবে।’
স্বামী বিবেকানন্দ শিকাগোতে সাফল্যের পরে তিন বছর আমেরিকাতে ছিলেন এবং প্রত্যেক দিনই ও প্রায় সর্বক্ষণই ধর্ম’ আলোচনা করতেন। তিনি আমেরিকা এসেছিলেন নিজের মাতৃভূমির কথা বলতে ও ভারতবর্ষের দুঃখ দারিদ্র্যের জন্য আমেরিকার নিকটে অর্থসাহায্যের জন্য আবেদন করতে। কিন্তু তিনি সমস্ত পাশ্চাত্য দেশগুলিতে এক ঐশ্বরিক ভাবধারা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। তিনি তাঁর শ্রোতাদের বলতেন বস্তুতন্ত্রবাদ ত্যাগ করে হিন্দুধর্মে’র প্রাচীন আধ্যাত্মিকতাকে শিক্ষা করতে। যার জন্য তিনি চেষ্টা করতেন, তা হল মূল্যবোধের আদান-প্রদান। তিনি পাশ্চাত্যের যে গুণ-গুলিকে সমাদর করেছেন, তা হল- প্রাণশক্তি, উদ্যম ও সাহস- যেগুলি তিনি ভারতে কোথাও দেখেন নি।
বেদান্ত-বক্ততায় সব সময়ে তিনি বলতেন- ‘আমাদের প্রত্যেকের মধ্যেই ভগবান আছেন; একজন দেবদূত ও একটি পিপীলিকার মধ্যে কোনো পার্থক্য দেখো না।’ অন্যভাবে বলতে গেলে বলতে হয় যে, আমাদের প্রত্যেকেই নিজের দৈবী সত্তাকে পুনরায় আবিষ্কার করার জন্য জন্মেছে। তাঁর প্রিয় গল্প ছিল- একটি সিংহ, যে নিজকে মেষ বলে কল্পনা ততদিনই করেছিল, যে পর্যন্ত না তাকে অপর একটি সিংহ নদীর জলে তার প্রতিচ্ছবিকে দেখিয়ে দিয়েছিল। তিনি শ্রোতাদের বলতেন, ‘তোমরাও সিংহ স্বরূপ। তোমরা পবিত্র, অনন্ত ও পরিপূর্ণ ব্যক্তি- সত্তা। যাঁর জন্য তুমি গীর্জায় গিয়ে, মন্দিরে গিয়ে কাঁদছ, প্রার্থনা করছ- সে তো তুমি নিজেই।’ হিন্দু ধর্ম’মত- যাতে রাম, কালী, বিষ্ণু কৃষ্ণ প্রভৃতি দেবদেবীকে বিভিন্ন সম্প্রদায় ভক্তি করে সে-সব সম্বন্ধে তিনি বিশেষ কিছু বলতেন না। তাঁর গুরুদেব- যিনি ছিলেন সাক্ষাৎ দিব্যপুরুষ এবং মাত্র দশবৎসর পূর্বে’ জীবিত ছিলেন- সে সম্বন্ধেও খুব কমই প্রকাশ করতেন। পাশ্চাত্য দেশে রামকৃষ্ণের মহিমা সম্বন্ধে কেন যে তিনি বিশেষ কিছু বলতে চাইতেন না- তার কারণ হিসাবে তিনি বলেছেন, ‘যদি আমি রামকৃষ্ণের ব্যক্তিসত্তা সম্বন্ধে প্রচার করতাম তবে হয়তো অর্ধেক পৃথিবীকে ধর্মান্তরিত করা যেতে পারত- কিন্তু তা হত স্বল্পস্থায়ী: সেইজন্য আমি রামকৃষ্ণের নীতিসমূহকে প্রচার করেছি। যদি লোকে ঐ নীতি গ্রহণ করে, তবে নিজে হতেই তারা রামকৃষ্ণের ব্যক্তিত্বকেও গ্রহণ করবে।’
তিনি ইংলণ্ডে তিনমাসের জন্য ভ্রমণে গেলেন এবং দেখলেন যে, তাঁর ধর্মীয় বাণী সেখানেও প্রভুত সাড়া জাগিয়েছে। এখানে তিনি বিখ্যাত মনীষী ম্যাক্সমুলারের দেখা পান। তারপর তিনি আমেরিকাতেই তাঁর কার্য’ধারাকে স্থিত করতে চান এবং নিউইয়র্কে’ বেদান্ত সমিতি সংগঠিত করেন। এই সমিতি কোনো বিশেষ সম্প্রদায়ভুক্ত ছিল না; এর উদ্দেশ্য ছিল বেদান্তের প্রচার ও সর্বধর্মের মূল যে সার্বভৌম নীতি তারই আরোপণ। তিান রাজযোগ ও জ্ঞানযোগ নামে পুস্তক রচনা করেন। তিনি ইউরোপও ভ্রমণ করেন। তিনি যেখানেই গেছেন সেইখানেই তাঁর অনুরাগী ভক্তেরা সমবেত হত- তাঁদের মধ্যে ছিলেন সস্ত্রীক ক্যাপটেন স্যাভিয়ার এবং ছিলেন মিস্ মার্গারেট নোবেল, যিনি ‘সিস্টার নিবেদিতা’ নামে অধিক পরিচিত। এইবার তাঁর মাতৃভূমি তাঁকে আহ্বান করছিল এবং মাতৃভূমির অধিকার সূত্রেই তাঁর ধর্মীয় বাণী শুনতে চেয়েছিল। এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে লণ্ডন থেকে তিনি ১৮১৬ খ্রীস্টাব্দের শেষদিকে ভারত অভিমুখে যাত্রা করেন।