পঞ্চভূত
আমরা সকলে বৃষ্টির পর আকাশে রামধনু দেখেছি।এতে সাতটি রঙ আছে- বেগুনি,নীল,আকাশী,সবুজ, হলুদ, কমলা, লাল। এই রঙ গুলির উৎস আলোক রশ্মির সাদা অংশ। সাতরঙা রামধনু দেখে আমরা যতটা আনন্দ পাই, সাদা আলো দেখে ততটা পাই না।অথচ সাদা আলো ছাড়া রামধনুর অস্তিত্ব থাকতে পারে না। একই ভাবে ঈশ্বরের সৃষ্টি থেকে আমরা আনন্দ লাভ করি কিন্তু স্রষ্টার দিক থেকে আমাদের দৃষ্টি সরে যায়।
বৃষ্টির জলের ছোট ছোট কণা প্রিজমের মতো কাজ করে সূর্যরশ্মির সাদা অংশকে রামধনুর সাতটি রঙে ভাগ করে দেয়। ঠিক সেইরকমই আমাদের মন প্রিজমের মতো কাজ করে যা আমাদের ঈশ্বরের দিব্য আলোক হতে উদ্ভূত এবং পঞ্চভূত দ্বারা সৃষ্ট, বৈচিত্রময় ব্রহ্মান্ডকে উপভোগ করতে সাহায্য করে।
সাধারণত, সৃষ্টির ভিতর পঞ্চভূত নিজেদের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য বজায় রেখে চলে। আমরা পঞ্চভূত দ্বারা সৃষ্ট, তাই যদি আমরা নিজেদের শরীরের মধ্যে পঞ্চভূতের ভারসাম্য বজায় রাখি, তাহলে আমরা সুস্থ্য থাকব, প্রকৃতির পঞ্চভূতের ভারসাম্যও বজায় থাকবে।
গল্পঃ
একটা বোতলে অর্ধেকটা ভর্তি বাদাম ছিল। একটি ছোট ছেলের বাদাম দেখে খুব লোভ হল। সে বোতলের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে যতটা পারল মুঠো ভরে বাদাম তুলে নিল। দুর্ভাগ্যবশত বোতলের মুখটা ছিল খুব ছোট। বাদামভর্তি মুঠো সে কিছুতেই বোতল থেকে বার করতে পারল না। ফলে সে কাঁদতে শুরু করলো। তার বাবা পাশেই ছিলেন। তিনি ছেলেকে যতটা প্রয়োজন ততটা বাদাম হাতে রেখে বাকীটা বোতলে রেখে দিতে বললেন। ছেলেটি বাবার কথামতো কাজ করল, কয়েকটা বাদামসহ হাত সহজেই বোতল থেকে বেরিয়ে এল। ছেলেটি এবার খুশী হল।
গানঃ
জানি তুমিই করেছো এই রচনা
আকাশ, বাতাস, আলো, জল আর মাটির গ্রন্থনা।
হে ভগবান,
আমাদেরও উপাদান এই পাঁচ মৌলিক
যেমন প্রকৃতি ‘মা’-
আর যত জীব আছে লৌকিক।
ক্যুইজঃ
নীচে পঞ্চভূতের নাম লেখা হল। প্রতিটির পাশে চারটি করে শব্দ লেখা হল। সঠিক সমার্থক শব্দটি নির্বাচন কর।
আকাশঃ বিশ্ব, শূণ্য, গগণ, মেঘ বায়ুঃ বাষ্প, ঘূর্ণীঝড়, বাতাস, ঝঞ্ঝা অগ্নিঃ ধোঁয়া, আগ্নেয়গিরি, আগুণ, লাভা জলঃ বৃষ্টি, বারি, পুকুর, নদী পৃথিবীঃ ভূমি, পাহাড়, বালি, কাঁকর
প্রার্থনাঃ
প্রভু আমার,
জীবনদাত্রী, আলোকদাত্রী মম
কৃতজ্ঞচিত্তে আজি জানাই প্রণাম,
তব কারুণ্যে এই অপরূপ ধরাধাম।
শৈলশিখররাজি আরোহণ করিবার,
অতল জলধি আছে কাটিতে সাঁতার।
শুষ্ক মৃত্তিকায় যবে বরষার আলিঙ্গন,
মধুর সে সোঁদা গন্ধে ভরে প্রাণমন।
সংগীতধ্বনি করে হৃদয়ের উত্থান,
এক নিশ্বাসে পৌঁছায় স্বর্গের উদ্যান।
বাড়ায় দুহাত দেখো,বন্ধুরা যত- নতশিরে আজি প্রণমি সততঃ।
নীরব উপবেশনঃ
চোখ বন্ধ করে প্রকৃতির আনন্দকে উপভোগ করো।( এই সময় লঘু সঙ্গীত চলবে।)