The Story of Goddess Lakshmi
দেবতারা এবং অসুরেরা যখন অমৃতের সন্ধানে সমুদ্র মন্থন করছিলেন, তখন তাঁরা পরপর চৌদ্দটি মহামূল্যবান রত্ন পেলেন। তখনও মন্থন চলছে, এমনি একটা সময়ে সমুদ্র কন্যা দেবী লক্ষী আবির্ভূত হলেন। তিনি অপরূপা রূপসী এবং তাঁর সর্বাঙ্গ চমৎকার সব অলংকারে ভূষিত। তাঁর হাতে ছিল বৈজয়ন্তী মালা (বৈজয়ন্তী –পদ্ম ফুলের মতন একরকম ফুল )I তাঁর দিকে দৃষ্টিপাত করা মাত্র দেবতা ও অসুরদের মনে তাঁকে বিবাহ করার ইচ্ছে জেগে উঠলো। তাঁরা উৎসুক দৃষ্টিতে লক্ষীর দিকে চেয়ে রইলেন, দেখতে যে তিনি কাকে স্বামী রূপে নির্বাচন করেন। দেবী লক্ষী চারিদিকে চেয়ে দেখলেন, কিন্তু কারুকেই তাঁর পছন্দ হলো না। তারপর ভগবান বিষ্ণুর দিকে তাঁর চোখ পড়ল।
শ্রী বিষ্ণু শেষনাগের ওপর শয়ন করেছিলেন এবং পার্থিব কোনো ব্যাপারে তাঁর কোনো আগ্রহ ছিলোনা। তিনি কামনা করা দূরে থাক, লক্ষীর দিকে চেয়েও দেখলেন না। বিষ্ণু সর্বদাই আত্মসমাহিত এবং আনন্দমগ্ন ছিলেন। পার্থিব ব্যাপারে শ্রী বিষ্ণুর অনাসক্তি দেখে লক্ষী ভাবলেন যে ইনিই তাঁর স্বামী হওয়ার উপযুক্ত। তিনি তখন বিষ্ণুর কাছে গিয়ে তাঁর গলায় মালা পরিয়ে তাঁকে স্বামী হিসেবে বরণ করে নিলেন। যেহেতু শ্রী বিষ্ণু, ভাগ্যশ্রী, রাজ্যশ্রী, জয়শ্রী ইত্যাদি সকল শ্রী এর অধিকারী তাই লক্ষীদেবী শ্রী এর পদটি প্রাপ্ত হলেন। বিষ্ণুপত্নী হওয়ায় তিনি শাঁখের অর্থাৎ শব্দ উৎপাদনের নিয়ন্ত্রণ লাভ করলেন; তিনি চক্র অর্থাৎ কালের নিয়ন্ত্রণও প্রাপ্ত হলেন। পদ্ম হলো সকল জীবের মন ও হৃদয়; গদা হলো সেই শক্তি যা জগৎকে রক্ষা করে। এই সবই তাঁর হলো। সেই থেকে তিনি বিষ্ণুমায়া রূপে পরিচিত। তিনিই হলেন পুরুষের স্ত্রী তত্ত্ব বা প্রকৃতি। এইজন্যই তিনি দেবতা ও ঋষিদের দ্বারাও পূজিতা হন।
[Illustrations by Sainee, Sri Sathya Sai Balvikas Student]