ওঁ সহনাববতু শ্লোক – বিশদ পাঠ
এটি উপনিষদের একটি প্রার্থনা। প্রতিটি শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের বলা হয় যে শিক্ষা হ’ল পারস্পরিক আদানপ্রদানের বিষয় এবং এটি চলাকালীন গুরু ও শিষ্যের মধ্যে সামান্য ক্রোধ বা রাগের উদ্ভব হ’লে সমগ্র প্রক্রিয়াটি বিফল হয়।
আমরা (গুরু ও গ্রহীতা) প্রার্থনা করি যে আমাদের আধ্যাত্মিক জ্ঞানের সঞ্চার ঘটানো উচিত, অধ্যয়নের ফলে প্রাপ্ত জ্ঞানের প্রসার ঘটানো উচিত। আমরা এও প্রার্থনা করি যে আমাদের নিজ নিজ দক্ষতার প্রয়োগ ঘটিয়ে সর্বদা সম্প্রীতি ও সমণ্বয়ের মধ্যে বাস করা উচিত।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থী- উভয়ের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ থাকা উচিত।
শিক্ষণ হ’ল এমন এক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী পারস্পরিক সহযোগিতা করে, এবং এটি অবশ্যই একটি আনন্দদায়ক ও উপযোগী মাধ্যম হওয়া উচিত। ক্ষণ অর্থ এক মুহুর্ত এবং আমি প্রতি মুহূর্তে তোমাদের ভালো বিষয়ে শিক্ষা দিতে চাই। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যখন শিক্ষক শ্রেণীতে প্রবেশ করেন, শিক্ষার্থীরা তাকে তাঁর প্রদত্ত জ্ঞানের স্বীকৃতিস্বরূপ সম্মান জানায়। শিক্ষকেরও সেই সম্মান প্রাপ্তির ক্ষেত্রে যথাযথ দায়িত্ব পালন ও নিঃস্বার্থ সেবার মাধ্যমে যোগ্য হওয়া উচিত।
শিক্ষার্থীরা শিক্ষককে ভয় থেকে শ্রদ্ধা করবে না, তারা শ্রদ্ধা করবে ভালোবাসা থেকে। শিক্ষার্থীদের আতঙ্কিত করতে পারে এরকম সমস্ত উপায় শিক্ষককে এড়িয়ে চলতে হবে। শিক্ষা হ’ল একটি ধীর প্রক্রিয়া, ঠিক যেভাবে একটি ফুল ধীরে ধীরে একটি একটি ক’রে পাপড়ি মেলতে শুরু করে ও তার সুগন্ধ দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এই প্রক্রিয়া সাহায্য পেতে পারে সেই শিক্ষকের কাছ থেকে তাঁর মধ্যে জ্ঞান, বিনয়, নিয়মানুবর্তিতা, বিচারবোধ বর্তমান, যিনি শুধুমাত্র একই বিষয়ের বারবার পুনরাবৃত্তি করে চলেন না। উদাহরণ ই হ’ল সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষণ মাধ্যম।
[Ref:- Sathya Sai Speaks vol 1]