হনুমান সঞ্জীবনী নিয়ে এলেন
বানররা নগরীতে প্রবেশ করায় রাবণের পুত্র মেঘনাদ অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হলেন। তিনি একজন প্রথিতযশা যোদ্ধা। তাই যখন বানরেরা দেখল মেঘনাদ ধনুকে তীর সংযোজন করছেন, তাদের যুদ্ধ করার স্পৃহা হারিয়ে গেল। লক্ষণ ও মেঘনাদ যখন যুদ্ধ করেছিলেন, সেই সময় মেঘনাদ ব্রহ্মা প্রদত্ত অত্যন্ত শক্তিশালী অস্ত্র ‘শক্তি’ লক্ষণের হৃদয়ের দিকে নিক্ষেপ করলেন। অস্ত্রাঘাতে লক্ষণ মূর্ছিত হয়ে মাটিতে পড়ে গেলেন।। হনুমান তাঁকে তুলে রামের কাছে নিয়ে এলেন। তারপর হনুমান লঙ্কার চিকিৎসক সুসেনকে তাঁর গৃহ সমেত তুলে রামের সম্মুখে নিয়ে এলেন। সুসেন বললেন, এক ধরনের বিশেষ ঔষধি গুল্ম হিমালয়ের নিকট সঞ্জীবনী পাহাড়ে পাওয়া যায়। লক্ষণকে বাঁচাবার জন্য সেইটি প্রয়োজন। তাই হনুমান তৎক্ষণাৎ দ্রোণ পর্বত মালার উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন এবং সঞ্জীবনী পাহাড়ে পৌছে গুল্মটি খুঁজতে লাগলেন। কিন্তু অত গাছ পালার মধ্যে হনুমান চট করে গুল্মটি চিনতে পারলেন না। তাই সম্পূর্ণ পাহাড়টি উৎপাটন করে হাতের তালুতে করে আকাশ পথে নিয়ে এলেন।
গুরুরা বাচ্চাদের বলবেন, হনুমান শুধু প্রচন্ড দৈহিক শক্তির অধিকারী ছিলেন তা নয়, তাঁর উপস্থিত বুদ্ধি ও প্রত্যুত্পন্নমতিত্ব প্রশংসনীয়। দ্রুত গুল্মটি খুঁজে না পেয়ে, হনুমান কিন্তু শুধু চিন্তা করে অযথা সময় নষ্ট করলেন না। তিনি বিকল্প উপায় বের করলেন। সমগ্র পাহাড়টিকে উৎপাটন করে লঙ্কায় তুলে নিয়ে এলেন, কারণ সময় তখন দ্রুতগতিতে কমে আসছিল। এই উপস্থিত বুদ্ধি তাঁকে লক্ষণকে বাঁচাতে সাহায্য করল এবং তিনি রামের আশীর্বাদ ধন্য হলেন। আমরাও যদি কোন সমস্যায় পড়ি, তখন বিভ্রান্ত হয়ে, সময় যেন নষ্ট না করি।
ভগবানের কাছে প্রার্থনা করে সমস্যা থেকে উদ্ধার পাওয়ার বিকল্প রাস্তা ভাবা উচিৎ।
শিক্ষণীয় মূল্যবোধ : সময়ের অপচয়, জীবনের অপচয় ।
হনুমান লঙ্কায় পৌঁছলে, সুসেন গুল্মটি খুঁজে নিয়ে লক্ষণের ওপর প্রয়োগ করলেন, লক্ষণের জ্ঞান ফিরে এল। রাম আনন্দে লক্ষণকে আলিঙ্গন করলেন। খুশী হয়ে রাম সুসেনকে এই বলে আশীর্বাদ করলেন যে, তিনি যে কোন বিপদে সুসেনকে রক্ষা করবেন।
গুরুরা বাচ্চাদের বলবেন ভালো কাজ সব সময়ই পুরস্কৃত হয়। এবং আমাদের প্রত্যেকটি ভালো কাজই স্বামীকে খুশি করে।
শিক্ষণীয় মূল্যবোধ : মানব সেবাই মাধব সেবা /ভগবানকে খুশি করো, মানুষকে খুশি করো।