রাম ও সীতার দিব্য বিবাহ
জনক রাজার কন্যা সীতা, ছোটবেলায় খেলতে খেলতে তার খেলনা হরধনু রাখা বাক্সের নিচে চলে গেল। তার সঙ্গীরা কিছুতেই বাক্সটা সরাতে পারল না। সীতা অবলীলাক্রমে তার ছোট্ট হাত দিয়ে সেই ভারী বাক্স সরিয়ে খেলনা বার করে আনলেন। সে থেকে রাজা জনক ঠিক করলেন, ঐ ধনুকে যিনি জ্যা পরাতে পারবেন তার সাথেই সীতার বিবাহ দেবেন।
সভাস্থলে হরধনু আনা হলে রাজা জনক উপস্থিত সকলকে ওই ধনুকে জ্যা পরাতে বললেন। সকলেই ব্যর্থ হল।বিশ্বামিত্রের আদেশে রাম এগিয়ে গেলেন।বাম হাত দিয়ে তিনি বাক্সের ঢাকা খুলে ফেললেন আর ডান হাত দিয়ে অত্যন্ত সহজেই তিনি ধনুকটিকে তুলে ফেললেন। রামচন্দ্র ধনুক জ্যাযুক্ত করে তাতে শর সংস্থাপন করলেন। তারপর শর নিক্ষেপ করার জন্য আকর্ণ জ্যা আকর্ষণ করা মাত্র প্রচন্ড টংকার শব্দে হরধনু বিদীর্ণ হল।
রাজা জনক বিশ্বামিত্র কে সাষ্টাঙ্গ প্রণাম করে বললেন, “রাম নিশ্চয় দৈব শক্তির অধিকারী। তিনি রামের সাথে সীতার বিবাহের প্রস্তাব দিলেন। বিশ্বামিত্রকে সম্বন্ধটির মধ্যস্থতা করার জন্য অনুরোধ জানালেন। দশরথের কাছে এই সংবাদ পৌঁছানো মাত্র তিনি আনন্দিত চিত্তে সম্মতি দিলেন এবং লোকলস্কর সমভিব্যাহারে মিথিলয় এসে উপস্থিত হলেন।
গুরু মন্তব্য–
জীবনের যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে মা-বাবার সঙ্গে আলোচনা করে তাদের আশীর্বাদ নিয়ে তবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
মূল্যবোধ- পিতা-মাতার প্রতি শ্রদ্ধা ও তাদের কথা মেনে চলা।
দশরথের চার পুত্রের বিবাহ একসাথে সম্পন্ন হল। রাম বিবাহ করলেন সীতাকে; লক্ষণ বিবাহ করলেন সীতার ভগিনী উর্মিলাকে; ভরত এবং শত্রুঘ্ন যথাক্রমে জনকের ভ্রাতা কুশধ্বজের কন্যা মান্ডবী এবং শ্রুতকীর্তিকে বিবাহ করলেন। সকলে আনন্দ করতে লাগলেন।