God resides in everyone
কাশী শহরে সেদিন ছিলো এক রৌদ্রোজ্জ্বল সকাল। সেই দিনটি ছিলো কাশী বিশ্বনাথের দিন এবং তিনি ছিলেন প্রধান ভূমিকায়, তার উদ্দেশ্য ছিলো জীবনের মহিমান্বিত নীতিকে প্রকাশিত করা। তিনি এক ভিখারীর রূপ ধারণ করে, অপরিচ্ছন্ন অবিন্যস্ত চেহারায়, সামান্য পোশাক পরে হাতে ভিক্ষাপাত্র নিয়ে বেরিয়ে পরলেন। পরমেশ্বর শিব কাশীর পথে পথে ভিক্ষার সন্ধানে ঘুরতে লাগলেন। তিনি ধনী ব্যাক্তিগণের দরজায় কড়া নেড়ে কোনো সাড়া পেলেন না, শূন্য হাতে ফিরে এলেন। আরও সমৃদ্ধ রাস্তা ধরে একটির পর একটি বাড়িতে তিনি গেলেন। কিন্তু এককণা মাত্র খাদ্যও তাকে কেউ দিলো না।
সূর্য তখন অস্তগামী; মন্দিরে মন্দিরে ঘন্টা ধ্বনি শোনা যাচ্ছে এবং ভক্তগণ নৈবেদ্যর থালা নিয়ে ভিড় করে মন্দিরে প্রবেশ করছে। কিন্তু স্বয়ং পরমেশ্বরকে পথে এক মুহূর্তের জন্যেও কেউ লক্ষ্য করছে না। অবশেষে তিনি ক্লান্ত হয়ে একটি নির্জন স্থানে যেখানে নর্দমার জল পবিত্র গঙ্গা নদীতে মিশেছে, সেখানে এসে বসলেন। সেখানে চারটি কুকুরের দ্বারা পরিবৃত হয়ে এক কুষ্ঠ রোগী বসেছিলো। একটি বাটিতে তার খাবার ছিলো এবং সে সেটা ছয় ভাগে ভাগ করছিলো। চারটি ভাগ সে কুকুরগুলোকে দিলো ও পঞ্চম ভাগটা তার নিজের জন্য রাখলো।
কুষ্ঠ রোগীর কাছে সামান্য কিছু পাওয়া যাবে দেখে প্রভু তার কাছে হাত বাড়িয়ে দিলেন এবং তিনি খাবার পেলেন। কুষ্ঠ রোগীটি প্রভুকে সেটা খেয়ে নেবার জন্য আদেশ করলেন। প্রভু তাকে জিজ্ঞেস করলো,” তুমি কি জানো আমি কে?” কুষ্ঠ রোগী আবার বললো,”আগে আপনার খাবার খেয়ে নিন।” প্রভু চিৎকার করে আবার সেই একই প্রশ্ন করলো। কুষ্ঠ রোগীর জোরালো উত্তর, “আপনি স্বয়ং প্রভু, কাশী বিশ্বনাথ।” প্রভু তাকে জিজ্ঞাসা করলেন,” তুমি কি করে জানলে?” কুষ্ঠরোগীর নম্রতার সাথে যথার্থ উত্তর, “তিনি ছাড়া আর কে আমার মত একজন কুষ্ঠ রোগীর হাত থেকে খাদ্য গ্রহণ করবেন!” ঈশ্বর সকলের মধ্যে রয়েছে এবং তিনি কখনও মানুষে মানুষে বিভেদ করেন না
এটাই হল সুক্ষ্ম সত্য যা কুষ্ঠ রোগী প্রকাশ করেছিলো। প্রভু বিষ্ময়ে বাকরুদ্ধ হলেন এবং বুঝতে পারলেন তিনি তার প্রকৃত ভক্তকে খুঁজে পেয়েছেন।
[Illustrations by Sreedarshine. H, Sri Sathya Sai Balvikas Student]