সীতা সতী
অডিও
কথা
- সীতা সতী সম বিশুদ্ধ হৃদয়ম্বুজাতাঃ
- বহ্বাঙ্গনাঃ করগৃহীতাঃ সুপুষ্পহারাঃ।
- স্তুন্বন্তি দিব্যানুতিভিঃ ফণীভূষণং ত্বাম্
- শ্রীসত্য সাই ভগবান তব সুপ্রভাতম্।।
অর্থ
যে সব রমণী সীতার ন্যায় পবিত্র, হৃদয় শতদলের পাপড়ি যাদের সাংসারিক বাসনা কামনার কলুষমুক্ত, যারা সংসারে বাস করেও সূর্যদেবতার প্রতি আকৃষ্ট, তারা সমস্বরে তোমার মহিমা কীর্তন করছে। তব মহিমা—অর্থাৎ কণ্ঠে ও সর্বাঙ্গে ফণীন্দ্রভূষণযুক্ত শিব মহিমা,পবিত্র ভজন গানে, হস্তে ফুলের মালা নিয়ে তারা তোমার গুণগানে রত। তে ভগবান শ্রীসত্য সাই, তোমার জাগরণে পূত একটি অভূতপূর্ব সুন্দর প্রভাতের প্রার্থনা জানাই।
ব্যাখ্যা
সীতাসতী | সীতার মত সতী এবং পবিত্র |
---|---|
সম | যারা সমান |
বিশুদ্ধ | বিশুদ্ধ |
হৃদ | হৃদয় |
অম্বুজাতা | পদ্মের মত |
বহু | অনেক |
অঙ্গনা | নারী |
কর গৃহীত | হাতে নেওয়া |
সুপুষ্প | সুন্দর ফুল |
হার | মালা |
শুণ্বন্তি | মহিমাণ্বিত |
দিব্যানুভূতি | দিব্য স্তুতি সহ |
ফণী | সাপ |
ভূষণম | অলংকৃত |
ত্বম | তুমি |
অন্তর্নিহিত তাৎপর্য্য
এখানে শিব অর্থ্যাৎ আত্মা।মহিলা ভক্ত বলতে আমাদের প্রত্যেকের মধ্যেকার শক্তির স্ত্রী অংশটিকে বোঝান হয়েছে।যেমন,ক্রিয়া শক্তি( কাজ করার ক্ষমতা, ইচ্ছা শক্তি,জ্ঞান শক্তি(জ্ঞান অর্জনের ক্ষমতা। যখন আত্মশক্তি জাগ্রত হয় তখন এই সকল শক্তির উন্মেষ হয়।
প্রকৃতপক্ষে এ যেন জীবাত্মা ও পরমাত্মা এবং জীব এবং শিবের মধ্যে বৈবাহিক সম্বন্ধ স্থাপন।ভক্তকে স্ত্রীর সঙ্গে তুলনা করা হয় যিনি সম্পূর্ণ শরনাগতির মালা তার প্রভুকে অর্পণ করেন। এটি হলো আনন্দময় কোষের স্তর।
সুপ্রভাতমের এর উদ্দেশ্য মানুষের মধ্যে সুপ্ত কুণ্ডলিনী শক্তিকে জাগ্রত করা।জাগরিত হলে এই শক্তি ষড়চক্রের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সহস্রার চক্রে হাজার পাপড়িযুক্ত পদ্মফুলে উপনীত হয়। মেরুদন্ডের একেবারে নীচে এই শক্তি নিদ্রিত অবস্থায় থাকে। গুরু কৃপা করলে এই শক্তি জাগরিত হয়। শিশুদের কুণ্ডলিনী যোগ সম্পর্কে একটা ধারণা দেওয়া প্রয়োজন বিশদ আলোচনার প্রয়োজন নেই। তাদের বলা হবে যে গুরুর কৃপায় আমাদের মধ্যে সেই শক্তি জাগরিত হয় যা আমাদের বুদ্ধি ও চেতনাকে আলোকিত করে। আমরা অন্য সাধারণ মানুষদের থেকে বেশি বুদ্ধিমত্তার অধিকারী হই।আমাদের পক্ষে কাম, ক্রোধ, লোভ,মদ, মোহ, মাৎসর্য—এই ছয়টি শত্রুকে জয় করা সহজ হয়। গভীর একাগ্রতা এবং কলাবিদ্যার প্রতি ভালোবাসার জন্য যেকোনো সংগীত বাদ্যযন্ত্র শিল্পী মধ্যে এই শক্তি জাগরুক থাকে। পার্থিব ও এবং আধ্যাত্মিক যেকোন ক্ষেত্রে যারা উৎকর্ষ অর্জন করেন তারা স্বভাবতঃই সাধনার উচ্চমার্গে প্রতিষ্ঠিত। যারা শুধুই পানাহারের মাধ্যমে জীবনকে উপভোগ করে কাটাতে চায় তারা জীবজন্তুর সমতুল অপেক্ষাকৃত নিম্নমার্গে বিচরণ করে। সমাজের জন্য সৎ কাজ করার আগ্রহ এবং শক্তি ঐশ্বরিক । শিশুদের মধ্যেকার সহজাত শক্তি কে সঠিক পথে অর্থাৎ উচ্চ আদর্শ এবং মূল্যবোধের পথে চালিত করাই হল বাল বিকাশ শিক্ষার উদ্দেশ্য। এর ফলে তারা সমাজে শান্তি,সম্প্রীতি ও প্রেমের বার্তা ছড়িয়ে দিতে পারবে।
আমাদের সর্বদা আত্মসচেতন থাকতে হবে।তবেই আমরা দিকভ্রষ্টের মতো এদিক সেদিক না ঘুরে সঠিক লক্ষ্যে অর্থ্যাৎ ঈশ্বরের কাছে ,সেই পরমধামে,সমহিমায় ফিরে যেতে পারব।