শ্রুত্বা তবাদ্ভূতচরিত্রমখণ্ডকীর্তিম্
অডিও
কথা
- শ্রুত্বা তবাদ্ভূতচরিত্রমখণ্ডকীর্তিম্
- ব্যাপ্তং দিগন্তরবিশাল ধরাতলেহস্মিন্ ।
- জিজ্ঞাসু লোকঃ উপতিষ্ঠতি চাশ্রমেহস্মিন্
- শ্রীসত্য সাই ভগবান তব সুপ্রভাতম্।।
অর্থ
তোমার অপূর্ব কীর্তি ও যশ পৃথিবীর শেষ সীমান্তে ছড়িয়ে গেছে। যথার্থ সত্য-অন্বেষীরা উপস্থিত হয়েছেন ও দর্শন প্রত্যাশায় অপেক্ষমান। হে ভগবান শ্রীসত্য সাই, তোমার জাগরণের আশীষ ধন্য একটি মহিমামণ্ডিত সুপ্রভাতের প্রার্থনা জানাই।
ব্যাখ্যা
শ্রুত্বা | শুনে |
---|---|
তব | তোমার |
অদ্ভূত | বিষ্ময়কর |
চরিত্রম | গল্প |
অখন্ড | Day-অসীম |
কীর্তিম্ | যশ |
ব্যপ্তম্ | প্রসারিত হয়েছে |
দিগন্তর | সকলদিকে |
বিশাল | বিরাট |
ধরাতলে | ভূপৃষ্ঠে |
অস্মিন | এর উপর |
জিজ্ঞাসু | জানবার ইচ্ছা |
জিজ্ঞাসু | জানবার ইচ্ছা |
লোক | জনগণ |
উপতিষ্ঠতি | উপস্থিত |
আশ্রমেস্মিন | এই আশ্রমে |
অন্তর্নিহিত তাৎপর্য্য
ভগবান বাবার জীবন অসংখ্য চমৎকার এবং আশ্চর্য ঘটনায় পূর্ণ। “এগুলি হল তাঁর “ভিজিটিং কার্ড”, যা অবতারের ধরাধামে অবতীর্ণ হওয়ার কথা ঘোষণা করে।তাঁর আগমন সংবাদ সমগ্র বিশ্বে ছড়িতে পড়েছে। সত্য অন্বেষণকারী মানুষ তাঁর দিব্য সমীপে উপস্থিত হয়েছে।
ভগবান বাবার জীবন চমৎকারে পরিপূর্ণ। দেশ-বিদেশ থেকে বহু অধ্যাত্ম পিপাসু মানুষ জানবার আগ্রহ নিয়ে তার কাছে এসেছেন।
দিব্যত্ব কেন আকর্ষণ করে?
এই স্তবক আমাদের সেই সাধনার কথা মনে করিয়ে দেয় যার দ্বারা আমরা স্বামীর জীবন কাহিনীর এবং ভক্তদের অভিজ্ঞতার সঙ্গে নিজেদের একাত্ম করে ফেলতে পারি।
হে প্রভাময় দিব্য সত্য আমার চৈতন্য কে আলোকিত করো। তোমার দিব্য মহিমা যেন চিরকাল আমার মনের সঞ্চিত থাকে এবং আমাকে সর্বদা স্মরণ করিয়ে দেয় যে আমি তোমার শরণাগত। আমাদের মধ্যে পরিবর্তন আনবার জন্য আমাদের ভেঙ্গে নতুন করে গড়ে নেবার জন্য ঈশ্বর আমাদের আকর্ষণ করেন। অবতারের সংস্পর্শে এসে আমরা ভালো হতে শিখি। আমাদের মন পরিশুদ্ধ হয়। তার লীলা স্মরণ করলে আমাদের চিন্তা ভাবনা উন্নত হয়। ভগবান বাবার মহিমাপূর্ণ, উৎসাহব্যঞ্জক এবং প্রেমময় লীলা কাহিনী শ্রবণ করার জন্য আমাদের মন ব্যাকুল হয়। আমরা তার দিব্য হস্তের যন্ত্র হয়ে ওঠার উপযুক্ত হই। আমরা তার কৃপায় প্রত্যাশী হই। যত ধ্যান করা যায় জীবনের অর্থ তত স্বচ্ছ হয়। ধ্যান আমাদের মনকে ঠিক করে যাতে আমরা দিব্যত্বকে উপলব্ধি করতে পারি। দূর দূর দেশ থেকে পুত্তাপর্ত্তীতে বহু মানুষ আসেন। এদের মধ্যে খ্রিষ্টান , বৌদ্ধ, মুসলিম, ইহুদি প্রভৃতি বহু ধর্মের মানুষ আছেন প্রভু সাইয়ের লীলা কাহিনী এবং তার আশ্চর্য অলৌকিক রোগ নিরাময় ক্ষমতা তাদের আকর্ষণ করে। এই পুণ্য ভারত ভূমিতে অবতারের সংস্পর্শ পেয়ে তাঁরা নিজেদের মধ্যে পরিবর্তন আনতে চান। জাতি-ধর্ম-বর্ণের কোন ভেদাভেদ এখানে করা হয় না। ভগবান বাবা সকল সত্য পিপাসু মানুষকে সঠিক পথ প্রদর্শন করেন।
এই স্তবকে আমরা আনন্দময় কোষে উপনীত হই। আমাদের মনে পরমানন্দ বিরাজ করে। আমরা শুধুই আমাদের গুরুর কাহিনী শুনতে আগ্রহী হই। আমাদের চেতনা উচ্চমার্গের দিকে যাত্রা করে। আমরা আরো ভালো মানুষ হইয়ে উঠি। আমরা অনুভব করি আমাদের গুরু যিনি প্রকৃতই ঈশ্বর, তিনি সকল জীবের মধ্যে অধিষ্ঠান করেন।
স্বামির লীলা
আশ্চর্য নিরাময়
১৯৯০ সালে বৃন্দাবনে গ্রীষ্মকালীন শিবির চলাকালীন একজন যুবা অধ্যাপক এই অসাধারণ গল্পটি বলেন। একটি ছেলে পর্ত্তীতে কলেজের একটি নাটকের মহড়া দিচ্ছিল। নাটকের নাম ‘যীশু খ্রীষ্ট’। ছেলেটি একটি অন্ধ বালকের ভূমিকায় অভিনয় করছিল। এই বালকটির দৃষ্টি যীশুখ্রীষ্ট আশ্চর্যভাবে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। এই অংশটির মহড়া চলার সময় স্বামী প্রেক্ষাগৃহে ছেলেটির কাছে গিয়ে বললেন,”সাই এলেন এবং তুমি তোমার দৃষ্টি শক্তি ফিরে পেলে।“
সকলে এই কথা শুনে বেশ আশ্চর্য হলো। কারণ নাটকটি ছিল যীশুখ্রীষ্ট কে নিয়ে।
কিছুদিন পরে এই ছেলেটি অতীতে গবেষণাগারে কাজ করছিল। সে ভুল করে সালফিউরিক অ্যাসিডের সঙ্গে দুটি রাসায়নিক মিশিয়ে ফেলেছিল। ফলে বিস্ফোরণ ঘটল এবং ছেলেটির দুটি চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হলো। তার চিৎকারে অন্য ছেলেরা এসে তার চোখে যখন জল দিল তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। ডাক্তার এসে সন্দেহ করলেন ছেলেটি তার দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে। দুটি চোখের রেটিনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি ছেলেটির দুটি চোখে ব্যান্ডেজ বেঁধে দিলেন।
সন্ধেবেলা স্বামি ছেলেটিকে দেখতে এলেন। তাকে বিভূতি সৃষ্টি করে দিলেন এবং বিভূতি খেতে বললেন। চারদিন পর ব্যান্ডেজ খোলা হলে দেখা গেল ছেলেটি ক্ষীণ দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়েছে। আরো 15 দিন পর তার দৃষ্টি আস্তে আস্তে আরো স্বচ্ছ হল, আর একমাস পর সে তার দৃষ্টি পুরোপুরি ফিরে পেল। স্বামি তাকে বললেন,” পরের বার সাবধান”। ছেলেটি চিন্তাগ্রস্ত হলো। ভাবলো, আবার কি এই রকম ঘটনা ঘটবে ? স্বামি সব থেকে ভাল জানেন। কিছুদিন পর সত্যিই পরীক্ষাগারে আবার একটা বিস্ফোরণ হলো এবার ছেলেটির একটি চোখ নষ্ট হল। ডাক্তার সন্দেহ করলে রেটিনা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু এবার ডাক্তার ছেলেটিকে সরাসরি স্বামীর কাছে পাঠিয়ে দিলেন। স্বামি বিভূতি সৃষ্টি করে তার চোখে লাগিয়ে দিলেন। কয়েক দিনের মধ্যে ছেলেটির চোখ ভাল হয়ে গেল। এখন তার দুটি চোখেই স্বাভাবিক।
This is the message of the Suprabhatam.
[Source: Sri Sathya Sai Balvikas Primer II – For Group II – Sri Sathya Sai Books & Publications Trust]