সত্য-ই ঈশ্বর (৩)
ঘটনাটা হচ্ছে কোলহাপুরের এক স্কুলের একটা ক্লাসের। শিক্ষক ছাত্রদের অঙ্কের কয়েকটা দুরূহ বিষয়ের সমাধান করতে দিয়েছেন। কিছুক্ষণ বাদে ছাত্রদের ভেতরে গুঞ্জন রব তার কানে এলো। যে অঙ্ক করতে দেওয়া হয়েছে, তার পাঠ ক্লাসে শেখানোই হয়নি; এই নিয়ে ছাত্রদের মধ্যে অসন্তোষ চলেছিলো, আর এর জন্যে তাদের পক্ষে অঙ্ক গুলো করা সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষকও তার ভুল বুঝতে পারলেন।
<
কিন্তু তিনি দেখতে পেলেন যে, ক্লাসের একজন মেধাবী ছাত্র গোপাল একমনে লিখে চলেছে। কাছে গিয়ে তিনি দেখলেন যে, সে সমস্ত অঙ্ক নির্ভুল ভাবে করেছে। তিনি তাকে বললেন, “বাঃ, তুমি তো দিব্যি অঙ্কগুলো শেখার আগেই করে দিলে। খুব ভালো গোপাল, তুমি সামনের বেঞ্চিতে গিয়ে ব’সো। গোপাল উঠে দাড়িয়ে বিনীত ভাবে বললে, “স্যার, আমার নিজের বুদ্ধিতে এই অঙ্ক গুলো আমি করিনি। আমার এক মামাতো দাদা গত সপ্তাহে কোল্হাপুরে এসেছিলেন, সেই সময়ে তিনি আমায় এই অঙ্ক শিখিয়েছিলেন। অঙ্ক তার প্রিয় বিষয়। তিনি আমাকে এই অঙ্কগুলো শিখিয়েছিলেন বলেই আমি করতে পারলাম। এর জন্য আমি প্রথম জায়গা দখল করতে পারি না।
গোপালের এই সত্যনিষ্ঠায় শিক্ষক অত্যন্ত সন্তুষ্ট হলেন। তার যা প্রাপ্য নয় এমন কোন খ্যাতি বা প্রশংসা নিতে সে রাজী হয়নি। এই ছেলেটি আর কেউ নয়, স্বয়ং গোপাল কৃষ্ণ গোখলে, মহান, সমাজ সংস্কারক। মহাত্মা গান্ধী এঁকে অন্যতম গুরু বলে সম্মান করতেন। গোখলে দরিদ্রদের সেবার জন্য Servants of India Society (সারভেন্টস অফ ইন্ডিয়া সোসাইটি) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন; আজ তা সুপরিচিত।
প্রশ্নঃ
- শিক্ষক গোপালের কথায় সন্তুষ্ট হয়েছেন কেন?
- (ক) আমাদের যে খ্যাতি বা প্রশংসা প্রাপ্য নয়, তা আমরা পেলে, নেবো না কেন? যদি আমরা নিই তাহলে কি হবে?
- সত্য-ই ঈশ্বর নামের তিনটি গল্প থেকে তোমরা কি শিক্ষা পেলে?