পশ্য মে পার্থ বিশদ পাঠ
- পশ্য মে পার্থ রূপানি শতশোহম সহস্রশঃ।
- নানাবিধানি দিব্যানি নানাবর্ণাকৃতীনি চ।।
(১১/৫)
হে অর্জুন (পৃথার পুত্র)! নানা রঙ ও আকৃতি বিশিষ্ট আমার শত শত এবং সহস্র সহস্র বিভিন্ন রূপ দর্শন করো।
অর্জুন শ্রীকৃষ্ণকে বারংবার বিশ্বরূপ দর্শন করাবার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছিলেন। তার অভিলাষের কথা জানতে পেরে কৃষ্ণ বললেন, “অর্জুন তুমি সাধারণ চোখ দিয়ে আমার দিব্য মহিমা দর্শন করতে পারবে না। সুতরাং আমি তোমাকে দিব্যদৃষ্টি দান করব।” দিব্যদৃষ্টি দান করার পর কৃষ্ণ অর্জুনকে বিশ্বরূপ দর্শন করালেন। অর্জুন কৃষ্ণের মধ্যে সমগ্র ব্রহ্মাণ্ড দর্শন করলেন। তিনি কৃষ্ণের মধ্যে সূর্য, চন্দ্র, গ্রহ প্রভৃতি স্বর্গীয় বস্তু দর্শন করলেন। পঞ্চভূত (ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ, ব্যোম) দর্শন করলেন। সাধু, সন্ত এবং সমস্ত জীব জগত দর্শন করলেন।
সমগ্র ব্রহ্মান্ড দিব্যত্ব দ্বারা পরিব্যপ্ত। সকল বস্তু দিব্যত্বের অংশ। অসংখ্য দিব্য বস্তু দ্বারা নির্মিত মহাজগতকে বলা হয় ‘বিশ্ব বিরাট’। আমাদের এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে একই দিব্যত্বের অংশ হিসেবে গণ্য করতে হবে।
হাওয়ার্ড মরফেট রচিত ‘ম্যান অফ মিরাকল’ বইটিতে এই বিষয়ে অনেক দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। মরফেট হায়দ্রাবাদের ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডঃ রাও এর অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেছেন।
একদিন পুট্টাপর্তীতে বাবা একটা অমসৃণ গ্রানাইটের টুকরো হাতে দিয়ে ডঃ রাওকে জিজ্ঞাসা করলেন, “এই পাথরটিতে কি আছে?” ডঃ রাও কয়েকটি খনিজ পদার্থের নাম করলেন।
বাবা – আমি এগুলোর কথা বলিনি। আরো গভীরে যাও।
ডঃ রাও – ও, বুঝেছি অনু, পরমাণ্ ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রন।
বাবা – না, না। আরো গভীরে যাও।
ডঃ রাও – আমি জানিনা স্বামী!
বাবা গ্রানাইট পাথরটি হাতে নিয়ে তার ওপর ফুঁ দিলেন। ডঃ রাও বলেছেন, একবারও গ্রানাইট পাথরটি তার চোখের আড়াল হয় নি। বাবা যখন তাকে গ্রানাইটটি ফেরত দিলেন তখন সেটি বংশীধারী কৃষ্ণের মূর্তিতে রূপান্তরিত হয়েছে। বিস্মিত ভূতাত্ত্বিক লক্ষ্য করলেন পাথরটির রং এবং উপাদানে কিছু পরিবর্তন হয়েছে। বাবা বললেন তোমার অনু-পরমানু ছাড়াও ওই পাথরের মধ্যে ঈশ্বর আছেন। ঈশ্বর হলেন আনন্দময় এবং মধুর। তুমি মূর্তিটির পা থেকে কিছুটা অংশ ভেঙে খাও। ডঃ রাও অনায়সে মূর্তিটির পা ভাঙ্গতে পারলেন। খেয়ে দেখলেন, সেটি সুমিষ্ট লজেন্স।
এই ঘটনার পর ডঃ রাও বলেছিলেন, তিনি সেইদিন হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন। ঘটনাটি ছিল আধুনিক বিজ্ঞানের ব্যাখ্যার অতীত। এমনকি বর্তমান যুগের যুক্তিবাদী মানুষের কাছে ওই ঘটনার কোনো ব্যাখ্যা ছিল না।