পোশাকের অভ্যাস
পোশাক পরিচ্ছদ ধারণের অভ্যাস অংশত নির্ভর করে জলহাওয়ার উপর এবং অংশত সমাজ ও ধর্মীয় প্রভাবের উপর। ভারতবর্ষে’র প্রত্যেক অংশের নিজস্ব পোশাক আছে। এই পোশাক পরিচ্ছদ পরিধানের রীতি ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের অধিবাসীদের জাতি ও পেশা নির্ধারণ করে। বিদেশী শাসন ভারতীয়দের পোশাকের উপর কিছু প্রভাব বিস্তার করেছে। অধিকাংশ ভারতীয় মহিলার শাড়ীই সাধারণ পোশাক এবং ধুতি ও জোব্বা পুরুষদের। পাঞ্জাবের অধিবাসীরা সালোয়ার বা ঢিলা পায়জামাকে পছন্দ করে। বহু শতাব্দী ধরে মুসলমান ও ইংরাজদের প্রভাব সত্ত্যেও, আজও উত্তর প্রদেশের ও বঙ্গদেশের অধিবাসীদের ধুতিই পছন্দসই। তারা ঢিলে সার্ট’, ব্রীচেস ও পাগড়ি পরে। শিখেরা ধুতি পছন্দ করে না। পাগড়ির একটি ধর্মীয় তাৎপর্য আছে। বিভিন্ন প্রদেশে বিভিন্ন ধরনের শিরোভূষণ আছে। অনেক প্রদেশে শিরোভূষণ ব্যবহার করা হয় না। এই দেশেরই কয়েকটি অংশে লোকেরা নিজেদের সামাজিক পদমর্যাদা দেখানোর জন্য মাথায় ‘হ্যাট’ ব্যবহার করে। উচ্চপদস্থ সরকারী কর্ম’চারীগণ ‘শেরওয়ানি’ ও যোধপুর পরেন।
অভিনিবেশ সহকারে লক্ষ্য করলেই ভারতীয় স্ত্রী পুরুষের বৈচিত্র্যময় পোশাক পরিচ্ছদের বিভিন্ন ধরনের নমুনা দেখতে পাওয়া যায়। ভারতীর রীতি অনুযায়ী পোশাক পরিচ্ছদ ভারতের বিভিন্ন ঋতুর খুবই উপযোগী। আমাদের দেশের বয়স্ক নাগরিকেরা, যাঁরা সাধারণত পুরাতন প্রথানুযায়ী পোশাক পরিচ্ছদ পরেন, তাঁদের ভারতীয় তরুণীরা একটু অবহেলার দৃষ্টিতে দেখে থাকে। এটা কিন্তু রুচির দৈন্য ও পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিহীনতারই পরিচায়ক। জামা কাপড়ের প্রয়োজনীয়তা হল দেহকে আবৃত করা এবং শীত গ্রীষ্মের থেকে আমাদের রক্ষা করা। পরিষ্কার জামা কাপড় পরা পাশ্চাত্যানুসারী পোশাকের চেয়ে বহুগুণে শ্রেয়। পরিধেয় দ্রব্যের শ্রেণী বিভাগ অপেক্ষা ব্যক্তিটি কে- সেইটিই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এইজন্য প্রাচীন হিন্দু আচার্যে’রা বলেছেন- ‘উত্তম চরিত্রই হল শ্রেষ্ঠ পোশাক।’