অহং বৈশ্বানরো ভূত্বা – বিশদ পাঠ
অহং বৈশ্বানরো ভূত্বা প্রাণীনাং দেহমাশ্রিতঃ।
প্রাণাপানসমসযুক্তঃ পচাম্যন্নং চতুর্বিধম্।। (১৫/১৪)
((১৫/১৪)
আমি জঠরাগ্নি অর্থাৎ উদরের ভেতরকার ও অগ্নিরূপে প্রাণীদের দেহে অবস্থান করি এবং প্রাণ ও অপানবায়ু সঙ্গে যুক্ত হয়ে চার প্রকার খাদ্য পরিপাক করি।
বাবা বলেন, “ঈশ্বর আমাদের দেহের মধ্যে বসবাস করেন, খাদ্য গ্রহণ করেন, পরিপাক করেন, দেহের সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কে পরিপোষণ করে বল প্রদান করেন। এই শ্লোকে উল্লেখিত চার প্রকার খাদ্য হলো – চ্যর্ব, চোষ্য, লেহ্য এবং পেয়। চ্যর্ব অর্থাৎ যা চিবিয়ে খেতে হয়, চোষ্য, যা চেটে খেতে হয় এবং পেয়, যা পান করতে হয়।
স্বামীর চিন্ময়ানন্দ লক্ষণ বংশের এক দানশীল এবং ধার্মিক রাজার কাহিনী বলেন। এই রাজার সত্যব্রত নামে একজন বুদ্ধিমান ও ধার্মিক মন্ত্রী ছিলেন। এই দুইজনের শাসনে রাজ্যে শান্তি, সুখ এবং সমৃদ্ধি বিরাজ করত। প্রজারাও এদের শ্রদ্ধা করত। রাজসভায় মাঝেমধ্যেই বিশিষ্ট সাধু সজ্জন কবি এবং পণ্ডিতের আলোচনা সভার আয়োজন করা হতো। ওই সভায় ঈশ্বরের মহিমা এবং সাধুসন্তদের বাণী নিয়ে আলোচনা করা হতো। কাল ক্রমে রাজার ছেলে রাজ সিংহাসনের অধিকারী হল। সে ছিল আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত ঈশ্বরের অস্তিত্ব বুঝতে চাইত না; অর্থহীন অবৈজ্ঞানিক এবং কুসংস্কার বলে মনে করত। কিন্তু সে ছিল মহৎ হৃদয়। প্রকৃত সত্যকে না জেনেই বিদ্বান মানুষের সভা বন্ধ করতে চাইলো না। সে প্রধানমন্ত্রী সত্যব্রতর কাছে তিনটি প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইল।
- ঈশ্বর কে?
- তিনি কোথায় থাকেন?
- তিনি কি করেন?
মন্ত্রীকে এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য ৪১ দিন সময় দেওয়া হল। মন্ত্রী জানতেন তরুণ রাজাকে সন্তুষ্ট করা সহজ হবে না। এই কঠিন কাজ শুরু করার আগে তিনি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলেন, “ঈশ্বর আমাকে যথার্থ শক্তি দাও যাতে আমি এই যুবকে তোমার মহিমা সম্বন্ধে সম্যক ধারণা দিতে পারি। বয়স্ক মন্ত্রী বিভিন্ন মঠে, আশ্রমে গিয়ে মুনি ঋষিদের সঙ্গে দেখা করলেন। রাজার প্রশ্নের উত্তর খোঁজার উদ্দেশ্যে পুরান, উপনিষদ বিভিন্ন শাস্ত্র সমূহ পাঠ করলেন। সময় দ্রুত অতিবাহিত হতে লাগলো।
মন্ত্রীর পাচক মনিবের দুর্দশা লক্ষ্য করছিল।
সেখানে রাত্রে স্বপ্নে তার কাছে সকল প্রশ্নের উত্তর প্রতিভাত হল বৃদ্ধ পাচক মন্ত্রীকে জানালেন যে রাত সভায় সকল ক্লাবের সকল প্রশ্নের উত্তর দেবেন রাজ দরবারে উপস্থিত হয়ে পাচক রাজাকে বলল যতক্ষন না আপনি আমার শিষ্যত্ব গ্রহণ করছেন আমি আপনাকে এই চরম বাস্তব তত্ত্বের বিষয়ে বিশেষ জ্ঞান প্রদান করতে পারবোনা রাজা তৎক্ষণাৎ সম্মত হলেন তিনি পাচক এর সঙ্গে স্থান পরিবর্তন করলে
প্রথম প্রশ্ন –
পাচক গোশালা থেকে কালো গাভী নিয়ে আসতে বলল। একটি পাত্রে দুধ দোহন করা হল।
প্রশ্ন করা হল, এই পাত্রে দুধ আপনি দেখতে পাচ্ছেন?
উত্তর –
প্রশ্ন এর রং কি
সাদা ধবধবে সাদা
প্রশ্ন জেগেছে তার রং কি
উত্তর
প্রশ্ন গরুর দুধের জন্য কি খায়
উত্তর
প্রশ্ন তাহলে কাল গাভীর যে সবুজ ঘাস খায় তাকে সাদা দুধের রূপান্তরিত করে কে তোমার বিজ্ঞান কি এই কাজ করতে পারে যে শক্তি কাল গাভীর আহার সবুজ ঘাস খেয়ে সাদা দুধের পরিণত করে সেই শক্তি হলো ঈশ্বর
দ্বিতীয় প্রশ্ন- কোথায়
একটি সোনার থালায় বসানো একটি মোমবাতি এবং একটি দেসলাই যায় সব জানালা দরজা বন্ধ করে দেওয়া হলো চারিদিক অন্ধকার হয়ে গেল এবার পাকা ঘরের অন্ধকার দূর হয়ে যায় প্রশ্ন-উত্তর চারিদিকে পরিব্যাপ্ত ঠিক এমনিভাবে সর্বোপরি প্রাপ্ত বিভিন্ন নামে এবং বিভিন্ন রূপে ঈশ্বর এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে সকল কার্য সম্পাদন করেন কৃতজ্ঞতার সঙ্গে তরুণ রাজা পাচকের সকল উত্তর গ্রহণ করলেন।