একটি ছেলে এবং ভাল্লুকের কাহিনী
একটি ছেলে এবং ভাল্লুকের কাহিনী
এক পাহাড়ী গ্রাম, কিছু লোক এক নদীর ধারে চাষবাস করছিলো। এমন সময় সেখানে এলো বৃষ্টি, ঘোর বৃষ্টি। তোমরা হয়তো অনেকেই জানো, পাহাড়ে যখন খুব বৃষ্টি হয় তখন নদীর জলও খুব বেড়ে যায়। এরা যে নদীর ধারে চাষ করছিল, সেই নদীর জলটা বেড়ে গেল। বৃষ্টি পড়ছে, কাজেই তাদের চাষের কাজও বন্ধ। তারা দেখছিল, এই নদীর জলটা কি রকম তাড়াতাড়ি করে বেড়ে যাচ্ছে, ফুলে উঠছে। তাদের মধ্যে একজনের নজরে পড়ল যে নদীর মাঝখান দিয়ে একটা কম্বল ভেসে যাচ্ছে। তখন একজন বলল, “দাঁড়া, দাঁড়া, ঐ কম্বলটাকে আমি তুলে অনি, আমার একটা কম্বলের দরকার।” অন্যেরা তাকে বারণ করে বলল, “যাস্নে বাবা, এই পাহাড়ী নদীতে ঢল নেমেছে এবং দারুণ জোর এর স্রোত।” কিন্তু সে কথা শুনলো না জলে লাফিয়ে পড়ল।
সে খুব ভাল সাঁতার জানতো, মাঝখানে গিয়ে সেই কম্বলটাকে ধরল। কিন্তু আসলে এটা কম্বল নয়, এক ভাল্লুক মহুঁয়া খেয়ে বেশ নেশায় বুঁদ হয়ে ঘুমোচ্ছিল। এমন সময় হঠাৎ বৃষ্টি হয়ে গেছে, নদীর জলও বেড়ে গেছে আর সেই জলে বেচারী ভাল্লুক ভেসে গেছে। তখনও তার নেশা ভাল করে যায়নি, সে নদীর জলে ভাসতে ভাসতে চলেছে আর এই লোকটা গিয়ে কম্বল মনে করে ভাল্লুকটাকেই ধরেছে। যেই ভাল্লুকটাকে ধরা, ভাল্লুকটাও ওমনি লোকটাকে জাপটে ধরেছে। লোকটা বুঝতে পেরেছে, যে একটা কিছু তাকে ধরেছে, ছাড়াবার চেষ্টা করছে কিন্তু ছাড়াতে পারছে না, ছটফট করছে। নদীর ধারে তার বন্ধুরা দেখছে যে ওর যেন একটা কিছু অসুবিধা হচ্ছে, সে আসতে পারছে না। তখন তারা সবাই চেঁচিয়ে বলল, “ওরে ভাই, তুমি কম্বল ছেড়ে দাও,-“ইস কম্বলি কো ছোড় দো, হিঁয়া পর চলি আও”। তখন লোকটি উত্তর দিল, “মায় তো ছোড় দেতা হুঁ, লেকিন কম্বলি নেহি ছোড়তা।” ভাল্লুক তখন তাকে আর ছাড়ে না।
এই পৃথিবী প্রলোভনের জায়গা। এই লোভ ঐ ভালুকের মতন ; তুমি যদি তাকে ধরতে চাও তুমি কিছু পাবে না, কিন্তু সে তোমায় ধরে ফেলবে, তখন আর তুমি বাঁচতেও পারবে না।
প্রশ্নঃ
- ছেলেটি নদীতে কি দেখতে পেল?
- সে কি করলো?
- তার সঙ্গীরা তাকে কি পরামর্শ দিল?
- ছেলেটির কি হলো?