খ্রীস্টধর্ম

Print Friendly, PDF & Email
খ্রীস্টধর্ম

খ্রীস্টধর্ম জগতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধর্মগুলির অন্যতম। এই ধর্মের অনুগামীর সংখ্যা প্রায় ৮০০ লক্ষ। অন্যান্য ধর্মগুলির মতনই খ্রীস্টধর্মের উৎপত্তিও এশিয়াতে হয়েছিল। বর্তমানে দেখা যাচ্ছে যে পৃথিবীর প্রতিটি কোণায় খ্রীস্টধর্মের অনুগামীরা রয়েছেন। যীশুখ্রীষ্টকে ঘিরে এই ধর্মমতটি গড়ে ওঠে। খ্রীষ্টধর্মের পবিত্র গ্রন্থ বাইবেল এর নিউ টেস্টামেন্টে যীশুর জীবনের কথা বলা আছে। বাইবেল মোক্ষ লাভের পথ দেখায়। তাই বলা যেতে পারে যে এটি যাত্রীর কাছে মানচিত্র, তীর্থযাত্রীর হাতের দন্ড এবং নাবিকের দিকনির্ণয়ের কম্পাস।

মানুষ মোজেসের শিক্ষা ভুলে গিয়েছিল। সমাজে আবার অনিশ্চয়তা ও অরাজকতা ফিরে এসেছিল। নৈতিকতার অস্তিত্বই লোপ পেয়েছিল। যখনি অধর্ম মাথা চাড়া দেয় ,তখনি ঈশ্বর তাকে দমন করার জন্য একজন অবতারকে পাঠিয়ে দেন। এইরকম সময়ে ডেভিডের পরিবার থেকে এলেন ঈশ্বরের পুত্র যীশু। তিনি মানুষকে রক্ষা করতে এলেন এবং এক নতুন ধর্মমতের প্রবর্তন করলেন। এই ধর্মই হল খ্রীষ্টধর্ম। বলা হয়ে থাকে যে মানুষের প্রতি অগাধ ভালোবাসার জন্য তিনি নিজের পুত্রকে পাঠালেন। যাতে যারা এই ঈশ্বরপুত্রকে বিশ্বাস করবে তাদের বিনাশ না হয় এবং তারা অনন্ত জীবনের অধিকারী হয়।

যীশুর জীবনী

ভারতবর্ষে একথা আমরা শুনেছি এবং পড়েছি যে পৃথিবীতে ঈশ্বরের অবতারের আবির্ভাবকালে বা কোন দৈবী সত্তার জন্মকালে কিভাবে বহু মঙ্গলচিহ্ন দেখা যায়। এর কারণ এই যে প্রকৃতি এবং দেবদূতগণ তাদের আনন্দকে দমন করতে পারে না। রাম, কৃষ্ণ ও সত্য সাইয়ের মতোই নানা মঙ্গলকারক ও অলৌকিক ঘটনার মধ্য দিয়ে আবির্ভাব হয়েছিল প্রভু যীশুর। মেরী ও জোসেফ ছিলেন খ্রীষ্টের মাতাপিতা। তারা ধর্মপরায়ণ ইহুদী ছিলেন। জোসেফ রাজা ভেভিডের প্রত্যক্ষ বংশধর ছিলেন। তিনি পেশায় ছিলেন ছুতোর। গ্যালিলি প্রদেশে ন্যাজারেথ শহরে তিনি বাস করতেন। খ্রীষ্টের জন্মের পূর্বেই তার ভাবী মাতা কুমারী মেরী গ্যাব্রিয়েল নামক দেবদূতের দ্বারা জ্ঞাত হয়েছিলেন যে তিনি ভগবানের কৃপা পেয়েছেন এবং ভগবানের পুত্র’ তাঁর পুত্ররূপে জন্মগ্রহণ করবেন। সে সময়ে মেরীর সঙ্গে জোসেফের বিবাহের বাগদান হয়ে গিয়েছিল; জোসেফও স্বপ্নে দেখেন যে দেবদূত তাঁকে বলছেন যে মেরীর একটি পুত্রসন্তান জন্মগ্রহণ করবে। তারা যেন পুত্রটির নাম রাখেন যীশু এবং এই শিশু ঈশ্বরের পুত্র হিসাবে জন্মাবেন ও মানুষকে পরিত্রাণ করবেন। দেবদূত জোসেফকে বলেন তিনি যেন মেরীকেই বিবাহ করেন এবং যীশুকে তাঁদের সন্তানরূপে প্রতিপালন করেন।

ইজরায়েল তখন রোমের শাসনাধীন ছিল এবং রাজকীয় আইন অনুসারে দেশের সকল অধিবাসীকে আদমশুমারির জন্য নাম নথিভুক্ত করতে হত। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মেরীকে নিয়ে জোসেফ ন্যাজারেথের ডেভিড শহরের দিকে রওনা হলেন। উদ্দেশ্য, নাম নথিভুক্ত করানো। সে সময়ে ডেভিড শহরের নাম ইহুদী ভাষায় ছিল বেথেলেহেম্। জোসেফও ছিলেন রাজা ডেভিডের বংশধর। যখন তারা বেথেলহেমে গিয়ে পৌঁছেন তখন কোনো সরাইখানা খালি ছিল না-ফলে সে রাত্রি তাঁদের একটি গোশালায় কাটাতে হয়। সেই রাতেই নব-যুগের প্রবর্তক ও মানবসমাজের পরিত্রাতা যীশু জন্মগ্রহণ করেন। শিশুকে তাঁরা কাপড়ে মুড়ে গরুর জাব খাওয়ার কাঠের গামলায় শুইয়ে রাখেন।

অনেক শতাব্দী আগেই ভবিষ্যৎবাণী হয়েছিল যে যীশুর জন্মসময়ে পূর্ব দিকের আকাশে একটি তারার উদয় হবে। পূর্বদেশের অধিবাসী তিনজন বিজ্ঞ লোক, যারা ঐ তারা দেখতে পেয়েছিলেন, তাঁরা ইহুদীদের রাজা হেরডের কাছে আসেন। তারা হেরডকে জিজ্ঞাসা করেন, ইহুদীদের ভবিষ্যৎ রাজা সেই শিশুটি কোথায় জন্মেছে? পুরোহিত ও দৈবজ্ঞরা তাদের বলেছিলেন যে ঐ শিশু বেথেলহেমে জন্মগ্রহণ করবে। দুষ্ট রাজা যখন ইহুদীদের ভবিষ্যৎ রাজার কথা শুনলেন, তখন তিনি ধুর্ততার সঙ্গেই ঐ তিনজন বিজ্ঞ পুরুষকে বলেন শিশুটির অনুসন্ধান করে ফিরে এসে তাঁকে সব জানাতে, যাতে তিনি শিশুর পূজার জন্য সেখানে যেতে পারেন। ঐ তিনজন বিজ্ঞ পুরুষ তারার নির্দেশ অনুসারে গোশালাটিতে যান এবং দিব্যশিশুটির দর্শন পান। বিজ্ঞপুরুষেরা দেখতে পান যে ছোটো ছোটো আঙুলগুলি কি কি শুভ ও অশুভ তা নির্দেশ করছে, পদযুগল সর্বব্যাপী ঈশ্বরের শরীরের ভার বহন করছে; দেহের চর্ম পার্থিব সকল জ্ঞানকে আবৃত করে রেখেছে এবং ধীর শাস-প্রশ্বাস ঈশ্বরের শ্বাস-প্রশ্বাস রূপে প্রতীয়মান হচ্ছে। এই দেখে ঐশ্বরিক আনন্দে পরিপ্লাবিত হয়ে তারা নতজানু হয়ে তার পূজা এবং জগতের ঐশ্বর্যের অধিকারীকে স্বর্ণ, কুন্দুরু ও গন্ধরস তাদের ভক্তি উপহার রূপে নিবেদন করেন। তারপর তারা রাজা হেরডের কাছে না ফিরে বা শিশুর কথা কিছু না জানিয়ে ফিরে গেলেন। কারণ রাজার দুষ্ট অভিপ্রায়ের কথা ঈশ্বর তাদের জানিয়ে দিয়েছিলেন।

কয়েকজন মেষপালক-যারা মেষ চরাত—তারাও একজন দেবদূতের দ্বারা এই সুসংবাদ পেয়ে তৎক্ষণাৎ শিশুটিকে পূজা করার উদ্দেশে বেথেলহেম যাত্রা করে। মেষপালকেরাও দিব্যশিশুটিকে দর্শন করে তাদের হৃদয় ও চক্ষুকে পরিতৃপ্ত করে।

প্রভুর কাছ থেকে একজন দেবদূত এসে জোসেফকে বলেন, “ওঠো! শিশু ও তার মাতাকে নিয়ে মিশরে পলায়ন কর; আর আমি যতদিন তোমাকে না বলি, ততদিন সেখানে থাক; কেননা হেরড শিশুটিকে বধ করার জন্য তার অনুসন্ধান করবে।

জোসেফ সেই মতোই পলায়ন করলেন। ইতিমধ্যে রাজা হেরড আদেশ দিলেন যে, দেশে দুই বছরের কম বয়সী যত শিশু আছে তাদের যেন হত্যা করা হয়। এরপর হেরডের মৃত্যু হয় এবং দেবদূত কর্তৃক এই সংবাদ জ্ঞাত হয়ে জোসেফ ও মেরী জুডিয়ার উত্তরে গ্যালিলি প্রদেশের ন্যাজারেথ শহরে ফিরে আসেন।

যীশুর শৈশবকাল সম্বন্ধে বিশেষ কিছু জানা যায় না, তবে এটুকু জানা যায় যে বারো বছর বয়সে তিনি পাস্‌ওভার (মিশরীয়দের অত্যাচার হতে ইজরায়েলিদের অব্যাহতি লাভের বাৎসরিক পর্ব) উৎসবে যোগদান করার জন্য পিতামাতার সঙ্গে জেরুজালেম শহরে এসেছিলেন। উৎসবের দিনগুলি শেষ হওয়ার পর তাঁর পিতামাতা জেরুজালেম থেকে ফিরে যান। কিন্তু তাঁদের অজ্ঞাতে যীশু মন্দিরে থেকে যান। তিনদিন অনুসন্ধানের পর পিতামাতা যীশুকে মন্দিরে দেখতে পান কিন্তু তারা এবং মন্দিরে উপস্থিত সকল লোকেই বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে দেখেন যে যীশু সর্বজ্ঞানের অধীশ্বর রূপে ধর্মীয় নিয়ম ও বিশ্বাসের সম্পর্কে মন্দিরের পুরোহিত ও উপস্থিত ব্যক্তিদের সঙ্গে ব্যাখ্যা এবং আলোচনা করছেন। মেরী যখন যীশুকে বললেন যে তারা কত চিন্তিত হয়েছিলেন এবং কেনই বা তিনি রয়ে গেলেন, তখন যীশু উত্তর দেন, ‘তোমরা কেন আমার অনুসন্ধান করছিলে? তোমরা কি চাও না যে আমি আমার পিতার কার্য তদারক করি?’ সরল মাতাপিতা তার কথা ঠিক বুঝতে না পেরে বিহ্বল হয়ে রইলেন। যাই হোক তাঁরা যীশুকে ন্যাজারেথে ফিরিয়ে নিয়ে যান।

এরপর ত্রিশ বৎসর বয়স পর্যন্ত যীশুর আর কোনো ইতিবৃত্ত পাওয়া যায় না। সেন্ট লুক ঐ সময় সম্বন্ধে জনসাধারণের অবগতির জন্য এক লাইনের একটি বিবৃতিতে বলেছেন যে, ‘পরে যীশু জ্ঞান ও বয়সে এবং ঈশ্বর ও মনুষ্যের নিকটে অনুগ্রহে বৃদ্ধি পাইতে থাকিলেন।’ সাধারণ্যে প্রচলিত বিশ্বাস এই যে ঐ বছরগুলি যীশু পরমপিতা ঈশ্বরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নির্জনে চিন্তায় মগ্ন ছিলেন।

যীশুর দীক্ষা

যীশুর দীক্ষাদাতার নাম জন। তিনি ছিলেন জাকারিয়া এবং এলিজাবেথ এর সন্তান। জর্ডন নদীতে জন যীশুর দীক্ষা সম্পন্ন করেন। দীক্ষা এক শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়া। দীক্ষা সমাপ্ত হওয়া মাত্র যীশু দেখলেন যে একটি কপোতের মতন ঈশ্বরের আত্মা তাঁর মধ্যে অবতীর্ন হলেন। স্বর্গ থেকে দিব্যবাণী হল,” ইনি আমার প্রিয় পুত্র,আমি তার প্রতি অত্যন্ত সন্তুষ্ট।”

তাঁর আগমনের উদ্দেশ্য

যীশু তাঁর তিরিশ বছর বয়স থেকে ধর্মপ্রচার শুরু করেন। তিনি বারোজন শিষ্যকে বেছে নিলেন। তাদের সঙ্গে নিয়ে তিনি তাঁর ধর্মমত প্রচারের কাজ শুরু করলেন। তাঁর বাণীতে ছিল ঈশ্বরের সেই প্রেমের কথা যা মানবজাতিকে উদ্ধার করবে। যীশু বলেছিলেন যে কোনো পাপ করলে তার জন্য অনুশোচনা করতে হবে। যীশু বলেছিলেন যে প্রত্যেক মানুষকে ঈশ্বরের প্রতি এবং তার সহ মানবের প্রতি তার যে কর্তব্য তা পালন করতে হবে। করুণা,দয়া ও প্রেমময় অনুকম্পায় ভূষিত যীশু ছিলেন শান্ত,সুশীল ,শান্তির রাজকুমার। তিনি গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে, ইহুদীদের প্রার্থনা মন্দিরে এবং গ্রাম ছাড়িয়ে সর্বত্র ধর্মশিক্ষা প্রদান করতেন। যীশু অসুস্থকে সুস্থ করে তুলতেন। যে বিচলিত তাকে সান্ত্বনা দিতেন, এমনকি মৃতদেহে প্রাণ সঞ্চার করতেন। তাঁর জনপ্রিয়তা ইহুদী পুরোহিতদের মনে ঈর্ষার সঞ্চার করল তারা ষড়যন্ত্র করে গোপনে যীশুকে বন্দী করে তাঁকে হত্যা করতে চাইল।

ইহুদীদের উৎসব ‘পাস্ ওভার’ এর জন্য যীশু গ্যালিলি থেকে জেরুসালেমে গেলেন। তাঁর ‘শেষ সান্ধ্য আহার’ এর পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হল। তিরিশটি রৌপ্য মুদ্রার জন্য যীশুর শিষ্যদের একজন,তাঁর নাম জুডাস, সে যীশুর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করল। সে যীশুর গ্রেফতারে কর্তৃপক্ষের সহায়ক হল। ‘ফারিসিরা’ অর্থাৎ ইহুদী পুরোহিতেরা যীশুর নামে মিথ্যা অভিযোগ আনল। অন্যায়ভাবে তাঁর বিচার করল এবং শেষে চূড়ান্ত অমানবিকতার সঙ্গে তাঁকে ক্রূশবিদ্ধ করল। সেই সময় যীশুর বয়স ছিল মাত্র তেত্তিরিশ। যদিও তাঁকেপেরেক দিয়ে ক্রূশ থেকে ঝোলানো হয়েছিল এবং কশাঘাত করা হয়েছিল তবুও তাঁর হৃদয় প্রেমে প্লাবিত ছিল এবং যারা তাঁকে ক্রূশবিদ্ধ করেছিল, তিনি তাদেরই জন্য প্রার্থনা করছিলেন। তাঁর প্রার্থনা ছিল,” হে পিতা ,আপনি ওদের রক্ষা করুন। ওরা কি করছে ,তা ওরা জানেনা।” যে দিন যীশুকে ক্রূশবিদ্ধ করা হয়েছিল। প্রত্যেক বছর সেই দিনটি ‘গুড ফ্রাইডে’ নামে শোকদিবস রূপে পালিত হয়। অবশ্য ক্রূশবিদ্ধ হওয়ার পরের পরদিন, তাঁর প্রতিজ্ঞা মতন যীশু তাঁর কবর থেকে উঠে, ভক্তদের দর্শন দেন। এই দিনটি হল ‘ইস্টার সানডে’ যা আনন্দের দিন রূপে উদযাপিত হয়। চল্লিশ দিন ধরে যীশু তাঁর ভক্তদের সামনে আবির্ভূত হন। চল্লিশ দিনের দিন তিনি তাদের নিয়ে ‘মাউন্ট অফ অলিভস’ এ যান। সেখানে তিনি তাদের আশীর্বাদ করেন এবং দেশে দেশে তাঁর সুসমাচার বা শিক্ষা প্রচার করার কথা বলেন। তারপর যীশু তাদের আশ্বস্ত করেন যে পৃথিবীর শেষদিন অবধি তিনি তাদের সঙ্গে থাকবেন। এরপর তিনি স্বর্গে আরোহণ করেন।

যীশুর শিক্ষা

সেই পাহাড়ের চূড়ায় যীশু তাঁর শিষ্যদের যে শিক্ষা দিয়েছিলেন, তা বিগত বিশ শতক ধরে মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করেছে এবং অনন্তকাল ঠিক একই ভাবে মানুষের জীবনে তার প্রভাব থাকবে।
যীশুর প্রধান শিক্ষাগুলি:

শত্রুকে ভালোবাস ; যারা তোমায় ঘৃণা করে ,তাদের উপকার কর; যারা তোমায় অভিসম্পাত করে, তাদের আশীর্বাদ কর; যারা তোমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে তাদের জন্য প্রার্থনা কর।
প্রতিবেশীকে ততটাই ভালোবাসতে হবে, যতটা নিজেকে ভালোবাস।

একগালে চড় মারলে অন্য গাল বাড়িয়ে দাও। অন্যকে যখন দেবে, তখন তার পরিবর্তে কিছু ফিরে পাবার প্রত্যাশা করবেনা। ঈশ্বর যেমন করুণাময়, ঠিক তেমন করুণাময় হও। অন্যের প্রতি এমন কোন আচরণ করোনা, যা তুমি চাওনা যে সে তোমার প্রতি করুক। অন্যলোকের বিচার করতে যেওনা, আগে নিজেকে সংশোধন কর। তুমি যদি অন্যের বিচার না কর, তাহলে ঈশ্বরও তোমার বিচার করবেন না। অন্যদের ক্ষমা কর, তাহলে ঈশ্বর তোমায় ক্ষমা করবেন।

যীশু মানুষকে বলতেন, আমি যা বলছি তা কেবল শুনলে হবেনা। জীবনে সেগুলি পালন করতে হবে।

যীশু লোককে বলতেন, তোমাদের প্রয়োজনীয় অন্ন, বস্ত্র বা পানীয়ের জন্য চিন্তা করোনা। ঈশ্বর ঠিক জানেন তোমার কি প্রয়োজন। তিনি তা পূর্ণ করবেন। তাঁর সাম্রাজ্য এবং তিনি কি চান, তাকে তোমার জীবনে সবচেয়ে বেশী প্রাধান্য দাও। তিনি তোমাকে রক্ষা করবেন। যীশু অধিকাংশ সময় গল্পচ্ছলে শিক্ষা দিতেন। এবং নীতিকথা শেখানোর জন্য উদাহরণের সাহায্য নিতেন।

প্রথমে খ্রীষ্টধর্ম এক সার্বজনীন গির্জার অধীনে ছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে তা দুটি সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে যায়;

  1. ক্যাথলিক এবং
  2. প্রটেস্টান্ট।

পোপ হচ্ছেন ক্যাথলিক দের ধর্মীয় প্রধান এবং রোম এর ‘ভ্যাটিকান’ ধর্মীয় প্রধানের কেন্দ্র।

যীশু আমাদের নতুন মানুষ হয়ে উঠতে বলেন। আমাদের অহংকার ও স্বার্থপরতা ত্যাগ করতে হবে। তিনি বলেন, স্বর্গ আকাশে অবস্থিত কোন স্থান নয়। এটি একটি আধ্যাত্মিক অবস্থা, যা নিজের অন্তরে অনুভব করতে হয়। যীশু খুব জোর দিয়ে যে কথাটি বলতেন তা হল, মানব সেবাই মাধব সেবা। মানুষকে একজন সৎ স্যামারিটান এর মত করে বাঁচতে হবে। যারই সমস্যা হবে জানবে সেই তোমার প্রতিবেশী। অন্যের প্রতি প্রেমকে এমনই হতে হবে যে ,তার জন্য তুমি প্রাণ দিতেও প্রস্তুত থাকবে, যেমন যীশু দিয়েছিলেন।

সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে খ্রীষ্টান ধর্ম প্রেমের ধর্ম। সেই ধর্মে আন্তরিক সততা ,আত্মনিবেদন ও আনুগত্যের সঙ্গে মানুষের সেবা করার কথা বলা হয়েছে।

খ্রীস্ট ধর্মের প্রার্থনা

আওয়ার ফাদার হুইচ আর্ট ইন হেভেন;
হ্যালোড বি দাই নেম,
দাই কিংডম কাম,
দাই উইল বি ডান্‌
অ্যাজ ইন হেভেন, সো অন আর্থ।
গিভ আস দিস ডেইলি আওয়ার ডেইলি ব্রেড
অ্যান্ড ফরগিভ আস আওয়ার ট্রেসপাসেস
অ্যান্ড উই ফরগিভ দোস হু ট্রেসপাস অ্যাগেনস্ট আস
অ্যান্ড লিড আস নট টু টেম্পটেসান
বাট ডেলিভার আস ফ্রম ইভিল।
ফর দাইন ইস দা কিংডম,
দ্য পাওয়ার অ্যান্ড দ্য গ্লোরি।
ফর এভার অ্যান্ড এভার।

আমেন

[হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতা, তোমার নাম সকল পুণ্যকর্মে সংযোজিত হোক; তোমার রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হোক; স্বর্গে এবং পৃথিবীতে তোমার ইচ্ছাই পূর্ণ হোক; আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য যুগিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ; আমাদের পাপ ক্ষমা কর, যেমন আমরাও নিজেদের অপরাধীদের ক্ষমা করি; আমরা যেন প্রলোভনে না পড়ি এবং মন্দ হতে রক্ষা পাই।]

প্রতীক চিহ্নঃ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: