ধর্ম

Print Friendly, PDF & Email
ধর্ম

বাবা ধর্মকে এইভাবে ব্যাখ্যা করেন, “ধর্ম হল মনের ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রিত করে সর্বদা ন্যায় আচরণ করা।” ধর্ম আচরণ তখনই করা যায়, যখন মানুষ তার ইচ্ছাকে নির্ভুল ভাবে চালিত করতে পারে।

ধর্ম আচরণ, সুসমঞ্জস ব্যক্তিত্বের অপরিহার্য উপাদান। মানুষের ইচ্ছাকে কর্মে সঠিকভাবে প্রয়োগের মধ্যে যে সামঞ্জস্য, তাই ধর্ম।

ভারতীয় মতে, শারীরিক, নৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক সকল কর্তব্য ও দায়বদ্ধতাই ধর্মের মধ্যে পড়ে।ধর্ম, সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত, জন্ম থেকে মৃত্যু,মানুষের সকল কর্মকে নিয়ন্ত্রণ করে।

সার কথা এই যে, মানুষের নৈতিক আচরণ যা তার নিজের পক্ষে ও সকলজনের পক্ষে মঙ্গলের হয়, তাই ধর্ম। বলা হয়, ‘ধারয়তি ইতি ধর্ম’। ধর্মই সমগ্র বিশ্বকে ধরে রাখে ও পোষণ করে। সে সৃষ্টির সকল ন্যায় ও সামঞ্জস্যের রক্ষাকারী। সবাই সৃষ্টির শৃঙ্খলের একটি জোড়। ঠিক যেমন শৃঙ্খলের নির্বিঘ্ন কার্যকারিতার জন্য প্রতিটি জোড়ের ঠিক থাকা প্রয়োজন, তেমনই বিশ্বের নিখুঁত অবস্থান ও সুশৃঙ্খল চলনের জন্য প্রত্যেকের আচরণ ত্রুটিহীন হওয়া প্রয়োজন।

জীবনে নৈতিক ও ধার্মিক দিনযাপন ছাড়াও আমাদের উচিত নিয়মিত ও সর্বদা সকল কর্মকে ঈশ্বরের পূজারূপে উৎসর্গ করা। এইভাবে আমরা জীবনে যাই করি না কেন, তার নৈতিক ভিত্তি ছাড়াও একটি আধ্যাত্মিক অভিযোজন থাকা প্রয়োজন। জীবনে যে চারটি পুরুষার্থ রয়েছে অর্থাত ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষ, ধর্ম তার প্রথম ও প্রাথমিক আদর্শ।

সত্যম বদ ধর্মম চর (সত্য কথা বলো ও ধর্ম আচরণ করো)।

সত্য ও ধর্ম এই দুটি স্তম্ভের উপরেই মানব জীবনের প্রাসাদটি দাঁড়িয়ে আছে। সত্যের আদর্শের বাস্তব জীবনে প্রয়োগ হল ধর্ম। যা বলছি তাকে কর্মে রূপ দেওয়াই ধর্ম। স্বামী ধর্ম বাহিনীতে বলেছেন, “যে ব্যক্তি নিজের অহমিকাকে দমন করে, স্বার্থপর বাসনিগুলিকে জয় করে, নিজের পাশব অনুভূতি ও প্রবৃত্তিকে ধ্বংস করে এবং দেহকেই আত্মা মনে করার স্বাভাবিক প্রবণতাকে ত্যাগ করে, সে অবশ্যই ধর্মের পথে চলছে। সে জানে যে ধর্মের উদ্দেশ্য, ঢেউকে সমুদ্রে মিশিয়ে দেওয়া,আত্মাকে পরমাত্মায় লীন করে দেওয়া।”

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: