বৈকুণ্ঠ কতদূর

Print Friendly, PDF & Email

বৈকুণ্ঠ কতদূর

Pandit narrating Gajendra Moksham

এই সহজ জিনিষটার সত্যতা এক লহমায় তোমাদের কাছে প্রকটিত হতে পারে যদি তোমাদের বুদ্ধি প্রখর ও মন সংস্কার মুক্ত হয়। অপ্রাসঙ্গিকতা এতে যতই জুড়ে থাকুক না কেন, সমস্যার মূল থেকেই তোমরা একে ধরতে পারবে।

এক মহাপণ্ডিত ব্যক্তি রাজদরবারে মহারাজা ও তার সভাসদদের সমক্ষে ভাগবতের “গজেন্দ্র মোক্ষ”র কাহিনী অতীব ধীমত্তার সংগে ব্যাখ্যা করছিলেন। দানব-কুমীরের মুখে আটকা পড়ে গজ মুক্তির জন্য আকুল ক্রন্দন করতে শুরু করলে, স্বর্গ থেকে (বৈকুণ্ঠ থেকে) ঈশ্বর কেমন করে দ্রুত নেমে এলেন সে কাহিনী তিনি বিবৃত করলেন। এ সময় তার অস্ত্রের জন্য অপেক্ষারও সময় ছিল না। বন্ধুদের ও ‘কেন বা কোথায় তিনি চলেছেন তাও বলার সময় ছিল না তাঁর।

সহসা মহারাজা প্রশ্ন করে উঠলেন, “আচ্ছা বলুন তো পণ্ডিত মশাই, এই বৈকুণ্ঠ জায়গাটা ঠিক কোথায়? “কতদূর ?” কিন্তু এই জ্ঞানী ব্যক্তির‌ও জানা ছিল না বৈকুণ্ঠ জায়গাটা ঠিক কোথায়। তিনি তাই অপ্রস্তুত হয়ে পড়লেন। রাজ দরবারের বাকী পণ্ডিতরাও তা জানতেন না।

একভৃত্য মহারাজের মাথায় পাখার বাতাস করছিলেন সিংহাসনের পিছনে দাঁড়িয়ে। যদি অপরাধ না নেওয়া হয়, তবে সে প্রশ্নের জবাবটা দিতে পারবে বলে জানাল। তার ধৃষ্টতায় পণ্ডিত ব্যথিত হলেন, কিন্তু মহারাজা তাকে উত্তর দিতে অনুরোধ করলেন। সে বলল, “মহারাজ ঐ গজের ক্রন্দন যতদূর থেকে শোনা যাচ্ছিল, বৈকুণ্ঠ ঠিক ততদূরে ছিল।” সত্যই তাই। ভক্তের হৃদয়ের আকুতিকে যদি ক্রন্দন, আর্তনাদ বা দীর্ঘশ্বাস হিসাবে ধরা যায়, ঈশ্বর সেই শব্দ যতদূর থেকে শোনা যায় ঠিক ততদূরেই থাকেন। ভক্তের ক্রন্দন শােনার জন্যই তিনি সদা-জাগরূক।

Servant giving the answer

প্রতিটি হৃদয়ের ক্রন্দন শােনার দূরত্বেই তার স্থিতি আর সেটিই তাঁর বৈকুন্ঠ।

এই অশিক্ষিত ভৃত্যটি বুঝেছিল, ঈশ্বর চরাচরে সর্বব্যাপ্ত, তাঁর করুণাও যে কী জিনিষ সে তাও উপলব্ধি করতে পেরেছে।

ঈশ্বর সর্বত্র বিরাজমান এবং তিনি হলেন করুণার প্রতিমূর্তি

[Ref: China Katha – Part 1 Pg:130]

 Illustrations by Ms. Sainee &
Digitized by Ms.Saipavitraa
(Sri Sathya Sai Balvikas Alumni)

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: