ইস্টার

Print Friendly, PDF & Email
ইস্টার
আলোকিত করার উৎসব।

যীশুর শিষ্যদের চেয়ে বেশী আশ্চর্য কেউ হননি, যখন তারা শোনেন, যে মানুষটিকে শুক্রবারে মারা যেতে দেখলেন, রবিবার সেই মানুষটিই হেঁটে বেড়াচ্ছেন! কিন্তু যীশু বারবার তাদের সামনে আবির্ভুত হওয়ায়, তারা আর অস্বীকার করতে পারেন নি। যীশুর শরীরে পেরেকের চিহ্নের ওপর হাত দেওয়ার পরই থমাস বিশ্বাস করেছিলেন (জন ২০- ২৪–২৪)। পুনরুত্থান আসলে ক্রুশবিদ্ধের করুণ ঘটনাকে মানবিকতার বিজয়ে পরিণত করে।

ইস্টারের আধ্যাত্মিক মহিমা ঃ-

ইস্টার আলোর প্রার্থনা। পুনরুত্থিত যীশুর কাছে আমরা অসত্য থেকে সত্যে নিয়ে যাওয়ার, অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে যাওয়ার ও মৃত্যু থেকে অমৃতে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রার্থনা করি।

আধ্যাত্মিক মুক্তির পথে, সবার কাছে যীশুর ক্রুশ থাকে বহন করার জন্য। ক্রুশ হল প্রারব্ধ আর জাগতিক প্রবণতার প্রতীক, যা আমার চেতনার, অবচেতনার ও অচেতনের বিভিন্ন স্তরের গভীরে থাকে।

যীশু কর্ম করার শ্রেষ্ঠ পথ আমাদের বলেছেন, “নিজের ক্রুশ নাও আর প্রভুকে অনুসরণ করো।“কেবল তখনই তুমি জীবনযুদ্ধ জয় করার জন্য নিশ্চিত হতে পারবে। প্রিয় স্বামীও আমাদের একই পদ্ধতি বলেছেন ঃ– প্রভুকে অনুসরণ করো, দানবের মুখোমুখি হও, শেষ পর্যন্ত লড়াই করো, খেলা সমাপ্ত করো।

অহংকার অদৃশ্য হলে, ঈশ্বর পুনরুত্থিত হবে। এটাই হল ক্রুশের অর্থ ঃ আমিকে কেটে ফেলা। এটাই খ্রীষ্টধর্মের সারমর্ম।

খৃষ্ট ধর্মের ক্রুশ অহং ত্যাগের প্রতীক।যখন আমরা ক্রুশবহনকারী যীশুকে অনুসরণ করবো, অর্থ্যাৎ আধ্যাত্মিক পথে আমাদের অহংকারকে দমনের চেষ্টা করবো, তখন আমরা আমাদের মধ্যেকার আমিত্ব, যা ক্রোধ, লোভ, ঘৃণা, বিদ্বেষ এবং মোহ দ্বারা আচ্ছন্ন, তাকে ক্রুশবিদ্ধ করবো, সাথে সাথে নিজেকে সত্য, ধর্ম, শান্তি ও প্রেমের মহিমায় উজ্জ্বল অমৃতত্বে উন্নীত করবো।

“ঈশ্বর স্বয়ং পৃথিবীর সকল দুঃখ, কষ্টের ভার নেন যাতে মানুষের মনে শুধুই প্রেমের অনুভূতি হয়।প্রকৃতপক্ষে, ঈশ্বরের কোন কষ্ট ভোগ নেই আর সেই জন্যই তোমাদেরও কষ্ট ভোগের কোনো কারণ নেই! সমগ্র জগৎই প্রেমে পরিব্যপ্ত! তুমি কষ্টও পাও এই প্রেমেরই জন্য। সর্বত্র শুধু প্রেম আর প্রেম- দুঃখ,কষ্ট ভোগের কোন স্থান নেই।”

(সত্য সাই বাবা – ২৫ শে ডিসেম্বর ১৯৭০)

চল্লিশ দিনের প্রার্থনা, উপবাস ও দানধ্যানের (যাকে লেন্ট বলা হয়) শেষে আসে ক্যাথোলিকদের ইস্টার রবিবার। গুড ফ্রাইডেতে, যেদিন যীশুকে ক্রুশিবিদ্ধ করা হয়, সেইদিন, আধ্যাত্মিক কৃচ্ছসাধন ও আমিত্ব বর্জন করে নিজেদের আধ্যাত্মিক ভাবে মৃত্যুবরণের জন্য প্রস্তুত করা হয়, যাতে নব জীবন নিয়ে প্রভুর সঙ্গে উত্থিত হওয়া যায়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।