কুম্ভকর্ণের মৃত্যু
কুম্ভকর্ণের মৃত্যু
ছয় দিন ধরে ভয়ঙ্কর যুদ্ধ চলল,অবশেষে রাক্ষসরা পরাজিত হল। কিন্তু রাবণ পরাজয় স্বীকার করতে নারাজ। তিনি তাঁর ভাই কুম্ভকর্ণের কাছে গেলেন সাহায্যের জন্য। কুম্ভকর্ণ তাঁকে এই কথা বোঝাবার চেষ্টা করলেন যে তিনি অন্যের স্ত্রী কে অপহরণ করে অত্যন্ত জঘন্য কাজ করেছেন। রাবণকে রামের কাছে ক্ষমা চাইতেও বললেন, কিন্তু রাবণ তার কথায় কর্ণপাত করলেন না। অবশেষে রাবণকে সাহায্য করার জন্য কুম্ভকর্ণ যুদ্ধ ক্ষেত্রে গেলেন। উনি সুগ্রীব কে তার বাহুর মধ্যে নিষ্পেষিত করে যুদ্ধ ক্ষেত্রের বাইরে নিয়ে চলে গেলেন। কুম্ভকর্ণ ঘোষণা করলেন যে রাজাকে তুলে নিয়ে গিয়ে তিনি বানর সেনাকে পরাজিত করলেন। কিন্তু সুগ্রীব চাতুর্যের সঙ্গে তাঁর খপ্পর থেকে বেরিয়ে এসে আবার আক্রমণ শুরু করে। যদিও বানরেরা ভীত হয়ে পড়ে এবং অনেকেই তাদের প্রাণ হারায়। তখন রাম লক্ষ্মণকে বললেন সময় এসেছে যুদ্ধ ক্ষেত্রে অবতীর্ণ হওয়ার আর বললেন অফুরন্ত তীরের তূণ নিয়ে আসতে। কোদন্ড ধনুকে সশস্ত্র হয়ে রাম যুদ্ধ ক্ষেত্রে অবতীর্ন হলেন। তাঁর তীরের আক্রমণ প্রতিরোধ করতে অক্ষম হয়ে, রাক্ষসরা পালিয়ে গেল। কুম্ভকর্ণ আপ্রাণ চেষ্টা করলেন যুদ্ধ করতে কিন্তু রামের হাতে তাঁর জীবনাবসান হল। তাঁর শরীর থেকে একটি দ্যুতি বেরিয়ে এসে রামের মধ্যে লীন হয়ে গেল।
গুরুরা বাচ্চাদের বলবেন :
তারা যেন কখনও এমন কাউকে সমর্থন না করে যে অন্যায্য ও অন্যায় কাজে লিপ্ত থাকে, সে যদি তার নিকট বন্ধুও হয় তবুও না। তারা যেন তাদের ওই ভুল পথ থেকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করে, আর যদি তারা তাদের সততার পথে ফিরিয়ে আনতে রাজি করাতে না পারে তাহলে যেন নিজেরাই এই মানুষগুলোর কাছ থেকে সরে আসে। এই ধরনের মানুষের সঙ্গে চললে, তাদের জীবনও ওদের মতো ধ্বংস হয়ে যাবে।
শিক্ষণীয় মূল্যবোধ :জীবনের ABC : বদ সঙ্গ পরিত্যাগ করো আর সদা সতর্ক থাকো / নিজের কর্ম, চিন্তা, চরিত্র ও হৃদয়ের দিকে দৃষ্টি রাখো।
[গুরুরা ভগবান মহাবিষ্ণুর দ্বারপাল জয় ও বিজয়ের গল্প বর্ণনা করবেন – আর বাচ্চাদের বলবেন যে, তাদের ভুল কাজ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যে জয় ও বিজয়, ত্রেতা যুগে রাবণ ও কুম্ভকর্ণ রূপে জন্মগ্রহণ করেন। সেই জন্যেই কুম্ভকর্ণের মৃত্যু হয় রামের ( বিষ্ণুর অবতার) হাতে আর অবশেষে তিনি রামের মধ্যে বিলীন হয়ে যান। জয় ও বিজয়ের অভিশাপ এবং তিনটি ভিন্ন যুগে তাদের তিনবার জন্মগ্রহন করার কথা বেদানুদ্ধারতে শ্লোকটি শেখাবার সময় বর্ণনা করা যায়।]