শান্ত হয়ে থাকার সময় — শেখার প্রতি অনুরাগ বা ভালোবাসা

Print Friendly, PDF & Email

শান্ত হয়ে থাকার সময় — শেখার প্রতি অনুরাগ বা ভালোবাসা

১ম ধাপ –  ‘ প্রথমে আরামদায়ক ভঙ্গিতে চেয়ারে বোসো অথবা মাটিতে সুখাসনে বোসো এই ব্যাপারে নিশ্চিত হও যে তোমার শিরদাঁড়া সোজা আছে ও মাথা উঁচু ও সোজা আছে। একটা গভীর প্রশ্বাস গ্রহন করো ও নিঃশ্বাস ত্যাগ করো । আর একটি গভীর প্রশ্বাস গ্রহন করো…. এবং আর একটি…’
২য় ধাপ – ” এখন শরীরের টেনশন দূর করে শরীরকে শিথিল করো। তোমার আঙুলগুলি ছড়িয়ে দাও ও সেগুলি শিথিল করো । পায়ের মাংস পেশীগুলো আঁটোসাঁটো করো ও টানটান করে প্রসারিত করো এবং তারপর সেগুলো শিথিল করো। কাঁধদুটো পিছনের দিকে টানো এবং তারপর সেগুলো শিথিল করো কাঁধদুটো ওপরে ও নীচে ঝাঁকাও। বাঁ দিকে তাকাও, সামনে তাকাও, ডানদিকে তাকাও, সামনে তাকাও। এখন মুখের মাংস পেশীগুলো দৃঢ় করো তারপর শিথিল করো। তোমার পুরো শরীর এখন শিথিল ও ভার মুক্ত এমন অনুভব করো — তোমার কোনো রকম টেনশন বা মানসিক চাপ আর নেই। তুমি এখন খুব ভালো অনুভব করছো।

৩য় ধাপ – এখন তোমার শ্বাস প্রশ্বাস সম্পর্কে সচেতন হও। ফুসফুস বা শ্বাসযন্ত্র পূর্ণ করে একটি গভীর প্রশ্বাস গ্রহন করো ।তারপর তোমার সময় মত ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস ছাড়ো। শান্ত ভাবে তোমার চোখদুটো বন্ধ করে রাখো এবং যখন তুমি প্রশ্বাস গ্রহন করবে তখন তুমি কল্পনা করবে যে একটা শুদ্ধ আরোগ্যদায়ী শক্তি তোমার শরীরে প্রবেশ করছে এবং তোমাকে আনন্দ ভালোবাসা ও শান্তিতে ভরে তুলছে। যখন তুমি নিঃশ্বাস ছাড়ছো, কল্পনা করো যে তোমার যা কিছু অস্বস্তিকর অনুভূতি রয়েছে, যেমন – বিষন্নতা, ক্লান্তি, রাগ, বিরক্তি, ভয়, একঘেয়েমি, হিংসা অথবা আরও অন্য কিছু, সেসবকিছু তুমি নিঃশ্বাসের সঙ্গে ত্যাগ করলে এবং সব দুশ্চিন্তা ভুলে তুমি আনন্দের অনুভূতিতে পূর্ণ হলে। তিন থেকে চারবার এটি অনুশীলন করো। যা কিছু তোমাকে বিপর্যস্ত করতো সব একে একে তোমার নিঃশ্বাস ত্যাগের সাথে বাইরে বেরিয়ে যাবে ও ভেসে চলে যাবে।

৪র্থ ধাপ – মনে করো তুমি বিমান ভ্রমণে যাচ্ছ… তুমি এরোপ্লেনের ভিতরে প্রবেশ করলে এবং তুমি জানো যে তুমি পুরোপুরি নিরাপদ… এরোপ্লেনটি আস্তে আস্তে আকাশে উঠতে শুরু করলো… জানলা দিয়ে নীচে মাটির দিকে তাকাও… উঁচু নিচু প্রান্তর ও গাছে ভরা গাঢ় সবুজ অঞ্চলের দিকে তাকাও…

দেখ নদীগুলো মাঠের মধ্য দিয়ে কেমন এঁকে বেঁকে বয়ে চলেছে এবং সেই জলে গাছ পশুপাখি ও মানুষেরা সজীব ও প্রাণবন্ত… এখন আমরা পাহাড়ের ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছি, যে পাহাড়ে ভেড়ারা শান্তিতে চরে বেড়াচ্ছে… এখন আমরা আরও ওপর দিয়ে উড়ে চলেছি, বরফে ঢাকা পাহাড়ের চূড়ার ওপর দিয়ে উড়ে চলেছি। আলো ঝলমল সাদা বরফ চূড়ার সৌন্দর্য প্রাণভরা দেখো… আরোও দূরে আরও অনেক মাইল ধরে মরুভূমি, পাথুরে ও বালুকাময় অঞ্চলের ওপর দিয়ে উড়ে গেলাম।
আরও কত অঞ্চল রয়েছে যেখানে আমরা উড়ে যেতে পারি…

বৃষ্টি অরন্যের ওপর দিয়ে… বরফে আচ্ছন্ন উত্তর মেরুর ওপর দিয়ে উড়ে যেতে পারি… জীবনে আরও কত কি আবিস্কার করার রয়েছে
আরও কত জায়গায় যেতে হবে… পৃথিবীকে জানার আরও আনন্দময় অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে…

৫ম ধাপ –  এখন তোমার মনোযোগ আবার ক্লাসরুমে ফিরিয়ে আনো, তোমার চোখ খোলো ও যেহেতু ব্যায়াম শেষ হয়ে গেছে টান টান হয়ে বসো। তোমার পাশের জনের দিকে তাকাও ও একটু হাসো এবং তাকে তারিখ ও সময়টা বলো।

( এই নীরব উপবেশনের শারীরিক ব্যায়ামের পর, ছাত্রছাত্রীদের হয়তো পরস্পরের সাথে কথা বলে তাদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে চাইবে এবং এ ব্যাপারে তাদের উৎসাহিত করা উচিত, বিশেষত তাদের জিজ্ঞেস করা উচিত তারা কি রকম অনুভব করলো। এটি কোনো সৃজনশীল কাজ করার আদর্শ সময়, উদাহরণ স্বরূপ তারা ব্যায়ামের কিছু ছবি এঁকে ফেলতে পারে।)

Adapted from ‘Sathya Sai Education in Human Values’, Published by BISSE Limited

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।