পুরুষঃ স পরঃ – বিশদ পাঠ
পুরুষঃ স পরঃ – বিশদ পাঠ
পুরুষঃ স পরঃ পার্থ ভক্ত্যালভ্যস্তুনন্যয়া।
যস্যান্তঃস্থানি ভূতানি যেন সর্বমিদং ততম্।।
(chap. ৮, verse ২২)
হে পার্থ, সকল জীব যাহার ভিতর অবস্থিত, যাঁহার দ্বারা এই সমস্ত জগত পরিব্যাপ্ত, সেই পরমেশ্বরকে অনন্য ভক্তির দ্বারা লাভ করা সম্ভব।
বাবা বলেন, “পরমেশ্বর, যার মধ্যে সৃষ্টি বিদ্যমান আবার যিনি সকল সৃষ্টিতে পরিব্যাপ্ত, তাকে পূজা পাঠের মধ্য দিয়ে নয়, একমাত্র প্রেম দ্বারা জয় করা যায়।”
এই জগৎ, জগদীশ্বর দ্বারা সম্পৃক্ত। ঈশ্বরের উপস্থিতি এবং মহিমা উপলব্ধি করবার জন্য নির্দিষ্ট কোন বিশেষ স্থান নেই। তিনি সর্বদা ও সর্বত্র সর্বভূতে বিরাজমান।
গোপিনীদের ভক্তি
অশিক্ষিত গোপিনীদের ভক্তি যে রুক্মিণী, সত্যভামা অথবা নারদের থেকেও অনেক বেশি গভীর, এই সত্য প্রমাণ করবার জন্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণ একবার একটি নাটকের অবতারণা করেন। তিনি প্রচন্ড মাথা ধরার ভান করেন আর সকলকে জানিয়ে দেন যে একমাত্র কোন প্রকৃত ভক্তের চরণ ধুলি মাথায় লাগালে তবেই তিনি যন্ত্রণামুক্ত হবেন। রুক্মিণী, সত্যভামা অথবা নারদ কেউই তাদের পদধূলি শ্রীকৃষ্ণের ললাটে লাগাতে রাজি হলেন না। নারদ অবশেষে গোপিকাদের শরণাপন্ন হলেন। এক বাক্যে তারা তাদের চরণ ধুলি দিতে রাজি হয়ে গেল, যদিও নারদ তাদের অবশ্যাম্ভাবী কর্মফলের কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন তাঁরা কিন্তু পিছপা হলেন না কারণ তাদের একমাত্র আকাঙ্ক্ষা ছিল কৃষ্ণকে যন্ত্রণামুক্ত করা। গোপিকাদের চরণধূলির স্পর্শে কৃষ্ণ সুস্থ হলেন।
দিব্যত্ব সকল কিছুর মধ্যে বিদ্যমান, এমনকি পদধূলিতেও। গোপিকারা সকল কিছুর মধ্যেই কৃষ্ণকে দর্শন করতেন। তাই নিজেদের পায়ের ধুলো যাতে কৃষ্ণ নিজেই বর্তমান, কৃষ্ণের মাথায় দিতে তাদের পাপবোধ হয়নি। নারদ উপলব্ধি করলেন, গোপিকাদের সর্বত্র, সর্বদা কৃষ্ণ দর্শন, সর্বোত্তম ভক্তির প্রকাশ।