সর্বধর্মান – বিশদ পাঠ
সর্বধর্মান – বিশদ পাঠ
সর্বধর্মান পরিত্যজ্য মামেকং শরণং ব্রজ।
অহং ত্বাং সর্বপাপেভ্যো মোক্ষয়িষ্যামি মা শুচঃ।।
(chap ১৮, verse ৬৮)
সকল ধর্ম এবং অধর্ম (সদাচার এবং অসদাচার কর্তব্য) ত্যাগ করে তুমি একমাত্র আমাকেই স্মরণ কর। আমি তোমাকে সকল পাপ হতে মুক্ত করব। শো’ক ক’রো না।
কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ ক্ষেত্রে সামনে কৌরব সেনাবাহিনীকে দেখে অর্জুন চোখের জল ফেলতে লাগলেন। সেনানীদের মধ্যে ছিলেন তার গুরুজনেরা এবং শিক্ষকেরা যাদের তিনি একান্ত আপনার জন ভাবতেন। কৃষ্ণ তাকে নিজের কর্তব্য অর্থ্যাৎ অধর্মের বিরুদ্ধে লড়াই করা হতে বিচ্যুত না হতে বললেন। কৌরব এবং তাদের সমর্থকরা ছিল অধর্মের শক্তি। বাবা ব্যাখ্যা করেছেন, “ঈশ্বরের মহিমা কীর্তন করার জন্য তাঁর নির্দেশিত পথে চল। কোনটা ধর্ম এবং কোনটা অধর্ম এই বিষয়ে আলোচনা ক’রো না। সকল কিছুই আসলে পরমাত্মা আর কিছু নয়। এই বিশ্বাসে অটল থেকো”।
সুতরাং তাঁর ইচ্ছার কাছে নতি স্বীকার করা এবং তার পরিকল্পনার কাছে আত্মসমর্পণ করা ছাড়া আর কিছু করার নেই। ফলের আশা না করে শাস্ত্র এবং ধর্মগ্রন্থ গুলিতে নির্দেশিত পথে সব কাজ করো। এই হল নিষ্কাম কর্ম। “হরিপ্রসাদ” ভেবে সব কর্তব্য কর্ম করে যাও। এটাই একমাত্র কাজ বাকি সকল কিছু তার ওপর ছেড়ে দাও। ফলাফল, পরিণতি সবকিছু। তবেই তোমার জীবন পবিত্র হবে সার্থক হবে। তুমি ঈশ্বরের কৃপা লাভ করবে। যারা ধর্মের পথে থাকে তাদের জীবনে অনেক বাধা বিঘ্নের সম্মুখীন হতে হয় কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা জয়লাভ করে। যারা অধার্মিক পথ অবলম্বন করে তারা সাময়িকভাবে ধন-দৌলত সুখ-সম্ভোগ ডুবে থাকে বটে কিন্তু কোন না কোন দিন তারা ধ্বংস হয়। পাণ্ডব এবং কৌরবেরা এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। ঈশ্বর নির্দেশিত পথে যখন আমরা আমাদের কর্তব্য করি তখন ঈশ্বর নিশ্চয়ই আমাদের রক্ষা করবেন। “ভয় পেয়ো না”, তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেন। কোন চরম শক্তিশালী অস্ত্রও ঈশ্বরের অনুগ্রহের সমতুল্য হতে পারে না।