বিদ্যালয় (2)

Print Friendly, PDF & Email
শিরোনাম: কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের মনোভাব
দৃশ‍্যপট: মেরীর স্কুল
চরিত্র: মেরী ও তার মা, ২/৩ জন শিক্ষিকা
গল্প সম্পর্কিত মূল‍্যবোধ: শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন
দৃশ্য
(মেরী তার মা সুসানের সাথে স্কুল বারান্দায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। সে স্কুলের বেতন দিতে এসেছে। কয়েকজন শিক্ষিকা তাদের সামনে দিয়ে গেলেন।)
সুসান: মেরী, তুমি কেনো ওনাদের অভিবাদন করলেনা?
মেরী: আমি যখন প্রথম শ্রেণীতে পড়তাম, তখন ওনারা আমার শিক্ষিকা ছিলেন। এখন ওনারা আমায় পড়ান না।
মেরী: (হঠাৎ) শুভ সকাল ম‍্যাম 
গণিত শিক্ষিকা: শুভ সকাল
মেরী: মা, এবছর উনি আমার অঙ্ক শিক্ষিকা।
সুসান: মেরী, তুমি সঠিক কাজ করছো না।
মেরী: কেনো মা?
সুসান: তুমি সেই সব শিক্ষিকাদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা বন্ধ করে দিয়েছো যে সব শিক্ষিকারা তোমায় এখন পড়ান না। বাছা, ওনারা তোমার জন্য যা করেছেন, তা তোমার কখন‌ই ভুলে যাওয়া উচিত নয়।
(সুসান বলে চললো)
তুমি কি জানো একবার ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি শঙ্করদয়াল শর্মা তার দপ্তরের কাজে মাস্কাট গিয়েছিলেন? যখন ভারতীয় বিমান মাস্কাটে অবতরণ করলো, ওমানের সুলতান নিজে বিমান বন্দরে গিয়েছিলেন তাকে স্বাগত জানাবার জন্য। এ দৃশ্য দেখে প্রত‍্যেকে অবাক।
মেরী: অবাক হয়ে গেলো! কিন্তু কেনো?
সুসান: কারণ এই প্রথম তিনি কোনো বিদেশী রাষ্ট্রনায়ককে স্বাগত জানাবার জন্য বিমান বন্দরে উপস্থিত হলেন।
মেরী: কিন্তু এর কারণ কি হতে পারে! (একটু চিন্তা করে) ও হ‍্যাঁ, আমি বুঝতে পেরেছি।
কারণটা হল উনি আমাদের মহান ভারতবর্ষের রাষ্ট্রপতি। আমি ঠিক বলছি তো?
সুসান: (একটু হেসে) যখন বিমান অবতরণ করলো, সুলতান তাকে স্বাগত জানাবার জন্য বিমানের ভিতরে প্রবেশ করলেন‌।
মেরী: ভিতরে প্রবেশ করলেন!
সুসান: শুধু তাই নয়। বিমান থেকে নেমে আসার পর, সুলতান নিজে রাষ্ট্রপতিকে গাড়ি চালিয়ে নিয়ে গেলেন।
মেরী: সত‍্যি!
সুসান: হ‍্যাঁ সোনা। পরে যখন সাংবাদিকেরা সুলতানের কাছ থেকে তার এই অভূতপূর্ব আচরণের কারণ জানতে চাইলেন, সুলতান উত্তরে জানালেন যে শ্রী শর্মা ভারতবর্ষের রাষ্ট্রপতি বলে তিনি তাকে বিমান বন্দর থেকে আনতে জাননি।
মেরী: কিন্তু তাহলে! কেনো!
সুসান: সুলতান ভারতবর্ষে পড়াশোনা করেছেন এবং যখন তিনি পুনেতে পড়াশোনা করতেন, শ্রী শর্মা তার অধ‍্যাপক ছিলেন।
মেরী: হায় ঈশ্বর! কী অসীম শ্রদ্ধা ছিলো সুলতানের তার শিক্ষকের জন্য, যে শিক্ষকের কাছে অত বছর আগে পরেছেন, তাও আবার অন‍্য দেশে।
সুসান: এখন বুঝতে পারছো তো প্রিয় কন্যা, কেনো এই ঘটনাটি তোমাকে বললাম?
মেরী: আমি বুঝতে পেরেছি মা । আমি খুব অনুতপ্ত।
(ঠিক তখন একজন শিক্ষিকা তাদের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন)
মেরী: শুভ সকাল ম‍্যাম।
শিক্ষিকা: তোমার নতুন ক্লাস কেমন লাগছে মেরী?
মেরী: খুব ভালো ম‍্যাম। কিন্তু এবছর আপনার অভাব খুব বোধ করবো।
শিক্ষিকা: (একটু হেসে) আমারও এক‌ই অনুভূতি প্রিয় ছাত্রী।
মেরী: মা, গতবছর জুলি ম‍্যাম আমাদের ক্লাস টিচার ছিলেন। 
(সুসান হাসিমুখে  সপ্রশংস ভঙ্গিতে মেরীর পিঠ চাপড়ে দিলেন।)

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: