গুরুর ব্রহ্মা শ্লোক – কার্যক্রম
গুরুর ব্রহ্মা শ্লোক – কার্যক্রম
কার্যক্রম লক্ষ্য – বালবিকাশ প্রথম বিভাগের শিশুরা যাতে ত্রিদেব অর্থাৎ ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর এবং তাদের কার্য সৃষ্টি, স্থিতি ও প্রলয়ের ধারণাটি
প্রয়োজনীয় উপাদান – টব অথবা থালা —-কাঁচের, মাটির অথবা টিনের কৌটো, সার, কিছু রাগি বা সরষের বীজ।
প্রণালী –
- ক্লাসে কতজন শিশু আছে তার ভিত্তিতে তিন বা চার জনের দল তৈরী করতে হবে।
- প্রত্যেক দলকে একটি করে টব বা কানা উঁচু থালা দিতে হবে।
- প্রতিটি দলকে বলতে হবে ,নিজেদের টব /থালাতে লেবেল লাগাতে। তাতে তাদের দলের এবং বীজের নাম লেখা থাকবে।
- প্রতিটি দলকে পাত্রে সার ভরতে বলতে হবে।
- এরপর বীজ পোঁতার আগে ঐ সারমটিতে জল দিতে হবে।
- প্রত্যেককে বীজগুলিকে ভালো করে লক্ষ্য করতে বলতে হবে, তাদের প্রকার, আয়তন, আকার, বর্ণ এইসব দেখতে হবে।
- বীজ থেকে যাতে অংকুর হয় এবং সেটি একটি সুন্দর গাছ হয় তার জন্য তাদের কী কী দিতে হবে, সেই বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।
- প্রতিটি দলকে বীজগুলি গুনতে হবে, তারপর সেগুলিকে নিজেদের পাত্রে রেখে জলের ছিটে দিতে হবে।
- প্রতিটি দলকে বলতে হবে যে পাত্রগুলি তারা জানলার ধারে অথবা এমন কোনও জায়গায় রাখবে যাতে সেটি পর্যাপ্ত পরিমাণ সূর্যের আলো পায়।
- প্রতিটি শিশুকে পালাক্রমে গাছটির ওপর নজর রাখার দায়িত্ব দিতে হবে; তারা সঠিক পরিমাণ জল গাছে দেবে, আর নিশ্চিত হবে যে গাছটি খুব বেশী অথবা খুব কম সূর্যের আলো পাচ্ছেনা, ইত্যাদি।
- এই পুরো প্রক্রিয়ার সময় গুরু তাদের সঠিক পথে পরিচালনা করবেন। যে ছোট অংকুর বা গাছে আগাছা জন্মেছে সেগুলিকে সাবধানে নির্মূল করতে হবে।
- ক্লাসে উদ্ভিদের ক্রমবিকাশ সম্পর্কে আলোচনা করতে হবে।
- কয়েকদিনের মধ্যেই শিশুরা দেখতে পাবে কীভাবে বীজগুলি থেকে অংকুরোদ্গম হচ্ছে এবং সপ্তাহখানেকের মধ্যে তারা উৎসাহিত হয়ে দেখবে যে চারাগাছ বেরোচ্ছে।
- দলগুলিকে বলতে হবে নিজেদের মধ্যে অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে। কেন এবং কীভাবে তারা আনন্দ পেয়েছে সেকথা পরস্পরকে জানাবে। বীজ থেকে গাছের জন্ম ,নিয়মিত যত্নের দ্বারা তাদের রক্ষা করা এবং টব থেকে অবাঞ্ছিত আগাছা সরিয়ে ফেলার নাশক ক্রিয়ার এই পুরো কার্যক্রমটি তে অংশ নিতে পেরে তাদের কেমন লেগেছে সেটা তারা জানাবে।
এর থেকে আমরা কি শিখলাম – গুরু কীভাবে ব্রহ্মার মতন সৃষ্টি করেন, বিষ্ণুরূপে পালন করেন এবং শিবরূপে আমাদের ভিতর থেকে অসৎগুণগুলিকে নির্মূল করেন। সৃষ্টি, পালন এবং ধ্বংসের এই পুরো প্রক্রিয়াটি আমাদের মঙ্গলের জন্য করা হয়; যাতে আমরা একজন সৎ মানুষ হয়ে বড়ো হয়ে উঠতে পারি। গুরু এখানে খোদাই করে সেই রূপটি ফুটিয়ে তোলেন।