মূর্ত্তি ও দেবতা

Print Friendly, PDF & Email
মূর্ত্তি ও দেবতা

তোমরা দক্ষিণেশ্বরের মন্দির দেখেছো। এই মন্দিরের পূজারী ছিলেন ‘শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব’—তাও তোমরা জানো। এই মন্দিরে একটি ঘটনা ঘটেছিল। নন্দোৎসবের সময় রাধা গোবিন্দের যে যুগলমূর্ত্তি তাঁর অভিষেক করতে নিয়ে আসার সময় এই গোবিন্দ মূৰ্ত্তিটি পড়ে যায় এবং তার পা-টি ভেঙ্গে যায়।

Priest dropping Govindaji's idol

তখন মথুরাবাবু ও রাণী রাসমণি দু’জনেই পণ্ডিতদের ডাকলেন। এ ব্যাপারে কি করা যায়—সে বিষয়ে সকলের মতামত চাইলেন। তারা সকলে বিধান দিলেন যে, ভাঙ্গা মূর্ত্তি রাখা যায় না কাজেই এই মূৰ্ত্তিটিকে বিসর্জন দিয়ে নতুন মূৰ্ত্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেই মতই সব ঠিক হল যে ভাঙ্গা মূৰ্ত্তি বিসর্জন দিয়ে নতুন মূৰ্ত্তি প্রতিষ্ঠা করা হবে।

মথুরবাবু লক্ষ্য করে দেখলেন যে, রামকৃষ্ণদেব এ ব্যাপারে কোন কথা বলেন নি। রামকৃষ্ণকে মথুরবাবু ও রাণী রাসমণি—দু’জনেই খুব শ্রদ্ধা করতেন। রামকৃষ্ণকেই জিজ্ঞাসা করা হল, “আপনার কি মত?” রামকৃষ্ণ তাঁর স্বভাবসিদ্ধ উপলব্ধির আলোয় বললেন, “রাণীর জামাই এর যদি পা ভেঙ্গে যায়, তবে রাণী ঐ পা ভাঙ্গা জামাইকে ফেলে দিয়ে নতুন জামাইয়ের সন্ধান করবেন?” সবাই বুঝতে পারল তাদের ভুলটা। রামকৃষ্ণদেব নিজে এই মূৰ্ত্তিটিকে এমন করে জোড়া দিয়েছিলেন যে সেই মূৰ্ত্তিতেই পূজা হতে লাগল। মূর্তিটি বিসর্জন দেওয়া হয়নি।

Sri Ramakrishna fixing the broken leg of the image
কেন এই ভুলটা হল? গোবিন্দ মূৰ্ত্তিটিকে সবাই ঐ ইট, কাঠ পাথরের তৈরী মূর্তিই ভেবেছিল। রামকৃষ্ণই দেখিয়ে দিলেন যে,“তুমি মূর্তি বলে শুরু করছ কিন্তু তাকে দেবতা জ্ঞান করতে হবে। ঐ পাথরের মূর্ত্তি থেকে আবিষ্কার করতে হবে প্রকৃত দেবতাকে”।

প্রশ্নঃ
  1. কৃষ্ণের ভাঙ্গা মূর্তি সম্বন্ধে পুরোহিতরা কি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন?
  2. রামকৃষ্ণ এই ব্যাপারে কি মন্তব্য করেছিলেন?
  3. এই গল্প থেকে কি শিক্ষা পাওয়া যায়?

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।