রামের কাছে বিভীষণের আত্মসমর্পণ
রামের কাছে বিভীষণের আত্মসমর্পণ
রাবণ তার সকল মন্ত্রীদের রাজ সভায় ডাকলেন এবং সবাই তাঁর ভয়ে তাঁকে সমর্থন করলেন। একমাত্র বিভীষণ বললেন, “রাম সাধারণ মানুষ নন। আপনার মতো একজন জীবাত্মা কি একা চতুর্দশ লোকের অধীশ্বরকে বাধা দিতে বা আঘাত করতে পারবে? এই দিব্য পুরুষের প্রতি ঘৃণা ত্যাগ করুন আর তাঁর সেবক হওয়ার জন্য প্রার্থনা করুন। তাঁর পত্নীকে তাঁর কাছে ফিরিয়ে দিয়ে তাঁর অনুগ্রহ লাভ করুন।’’ রাবণ অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হলেন এবং তার শত্রুর প্রশংসা করার জন্য রাজসভা থেকে বহিষ্কার করলেন।
গুরুরা বাচ্চাদের বলবেন যে যত বড় বা রাশভারী মানুষ আমাদের কাছাকাছি থাকুন না কেন, আমাদের কখনও সত্য কথা বলতে ভয় পেলে চলবে না আর ধর্মাচারণে একনিষ্ঠ থাকতে হবে।
শিক্ষণীয় মূল্যবোধ : সত্যম্ বদ, ধর্মম্ চর।
হিরো হও – জিরো হ’য়ো না। (একজন সত্যিকারের হিরো/নায়ক সবসময় সত্যের পক্ষে থাকে আর সত্য কথা বলতে ভয় পায় না।)
বিভীষণ রামের নাম নিয়ে সমুদ্র পেরিয়ে মহেন্দ্র পর্বতে গেলেন। তিনি রামের সাক্ষাৎ প্রার্থনা করলেন। বানরেরা সন্দিগ্ধ হল, তারা বিভীষণকে বন্দি করতে চাইল। কিন্তু রাম ছিলেন সহানুভূতিশীল তাই তিনি বললেন একজন দুষ্ট লোকও যদি শরণাগত হয় তাহলে তার সাথেও দয়াপূর্ণ ব্যবহার করতে হয়। বিভীষণকে যখন রামের সামনে আনা হল তখন তিনি রামের চরণে লুটিয়ে পড়লেন। তিনি বললেন বিভীষণের জন্ম রাক্ষস কুলে, কিন্তু তিনি রামের কাছে সুরক্ষা চাইতে এবং আত্মসমর্পণ করতে এসেছেন। রাম বললেন “তুমি সকল প্রকার সৎ গুণের অধিকারী। নতুবা তুমি আমার দর্শন, স্পর্শন এবং সম্ভাষণ লাভ করার সুযোগ পেতে না। “
গুরুরা বাচ্চাদের বলবেন যে ভগবান করুণাময় , তিনি সদাই আমাদের ক্ষমা করেন। আমরা আমাদের ভুলের জন্য অনুতপ্ত হলে ও ভুলের পুনরাবৃত্তি না করার প্রতিশ্রুতি দিলে তিনি ভালবাসার সঙ্গে আমাদের গ্রহণ করেন। আমাদেরও বন্ধুদের ভালবাসতে ও ক্ষমা করতে হবে।
শিক্ষণীয় মূল্যবোধ :ভালবাসা হল দেওয়া ও ক্ষমা করা, স্বার্থপরতা হল পাওয়া আর ভুলে যাওয়া।। গুরুরা বাচ্চাদের এও বোঝাবেন যে, আমাদের স্বামির ও এই রকম দর্শন, স্পর্শন, সম্ভাষণের বহু ঘটনা আছে এবং কিভাবে সেই ঘটনাগুলি ভক্তের মন আনন্দ ও প্রশান্তিতে ভরিয়ে দিয়েছে।।
রাম বিভীষণের মাথায় জল ছিটিয়ে প্রতিশ্রুতি দিলেন তাঁকে লঙ্কার রাজা করবেন। রাম সকলকে বললেন বিভীষণকে একজন মিত্র হিসেবে দেখতে। সকলে মিলে সমুদ্র তটের দিকে এগোলেন।