নাসিরুদ্দীন
নাসিরুদ্দীন
তুর্কী শহরে মোল্লা নাসিরুদ্দীন নামে এক ব্যক্তি ছিলেন। তিনি তার জ্ঞান ও রসিকতার জন্য বিখ্যাত ছিলেন। এবং এখনও তার স্মৃতির উদ্দেশ্যে প্রতি বছর একটি মেলা হয়।
এই মোল্লা নাসিরুদ্দীন একদিন একটি সাবান নিয়ে এলেন এবং স্ত্রীকে বললেন, এই সাবান দিয়ে তার জামাটা পরিষ্কার করে দিতে। স্ত্রী যখন জামাটি পরিষ্কার করতে গেলেন তখন একটি কাক কোথা এসে থেকে ঐ সাবানটি নিয়ে পালিয়ে গেল। এতে তার স্ত্রী খুব উত্তেজিত হয়ে ভীষণ চিৎকার করতে লাগলেন। এবং খুব বিরক্ত প্রকাশ করতে লাগলেন। নাসিরুদ্দীন চিৎকার শুনে ছুটে এলেন। বললেন, “কী হয়েছে? তুমি এত উত্তেজিত হয়ে পড়েছ কেন?”
স্ত্রী বললেন, “দেখো ঐ কাকটা আমার সাবানটা নিয়ে পালিয়ে গেছে।” নাসিরুদ্দীন কাকটার দিকে এক পলক তাকিয়ে বললেন, “তাতো যাবেই। দেখো, আমার জামার চেয়ে ওর গায়ের রঙটা আরো বেশী পরিষ্কার করা দরকার। আমি তোমায় আর একটা সাবান এনে দিচ্ছি।”
এই নাসিরুদ্দীন একদিন রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে দেখলেন একটি লোক খুব বিষন্ন হয়ে মুখটি ভারাক্রান্ত করে বসে আছে। নাসিরুদ্দীন জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার কি হয়েছে?”
লোকটি বললেন, “ভাই আমার জীবনে কোনো সুখ নেই। আমার ঘরে টাকা আছে, ভালো স্ত্রী রয়েছে, সুন্দর ছেলেমেয়ে — তবু আমি একদম মনে শান্তি পাচ্ছি না।”
নাসিরুদ্দীন কোনো কথা না বলে লোকটির কাছে যে টাকা ভর্ত্তি থলেটি ছিলো সেটি নিয়েই দৌড়তে লাগলেন। লোকটি নাসিরুদ্দীনকে ধরবার জন্য পেছনে পেছনে দৌড়তে লাগল। নাসিরুদ্দীন খুব জোরে দৌড়তে লাগলেন। লোকটি চেষ্টা করেও নাসিরুদ্দীনকে ধরতে পারলেন না। অনেকদূর যাওয়ার পর লোকটি যখন আর নাসিরুদ্দীনকে ধরতে পারলেন না তখন নাসিরুদ্দীন নিজেই সেই থলেটি একটি গাছের তলায় দেখে দিয়ে কিছু দূরে আড়াল থেকে দেখতে লাগলেন লোকটি কি করে। লোকটি হাঁফাতে হাঁফাতে এল এবং ব্যাগটিকে পেয়ে খুব খুশী হল এবং আনন্দে ব্যাগটিকে জড়িয়ে ধরল।
নাসিরুদ্দীন তখন আড়াল থেকে বেরিয়ে এসে বললেন, “ভাই এইটিই আনন্দ, এইটিই তুমি খুঁজছিলে, এখন এটা পেলে?”
প্রশ্নঃ
- নাসিরুদ্দিনের স্ত্রী কেন রেগে গেল?
- নাসিরুদ্দিন কি উত্তর দিল?
- নাসিরুদ্দিন কি ভাবে পথিককে আনন্দ খুঁজে পেতে সাহায্য করল?