হে শিব শঙ্কর – বিশদ পাঠ
ভবানীশঙ্কর কথার অন্তনিহিত অর্থ (প্রথম বিভাগের জন্য ভজন “হে শিব শঙ্কর”)
ভগবান বাবা বলেন, ‘ভবানীশঙ্কর’ শিব ও শক্তিকে বোঝায়। ‘ভবানী’ হল শ্রদ্ধার প্রতীক (উদ্দেশ্য সমন্ধে সচেতন) এবং ‘শঙ্কর’ অর্থ বিশ্বস্ততা (বিশ্বাস)। যখন দেবী ভবানী শ্রদ্ধার প্রতিমূর্ত্তি উপস্থিত, সেখানে নৃত্যরত শিব বিশ্বাসরূপে প্রতিভাত। উদ্দেশ্য সম্বন্ধে সচেতনতা ও বিশ্বাস ছাড়া জীবন অর্থহীন। যদিও ‘ভবানী’ ও ‘শঙ্কর’ সকলের মধ্যেই বিরাজিত তবু মানুষ আজ বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে। সমগ্র সৃষ্টি হল অর্ধনারীশ্বর তত্ত্ব। যা হল পুরুষ ও প্রকৃতি তত্ত্বের প্রতিমূর্ত্তি। প্রত্যেক ব্যক্তি, তার অর্ন্তনিহিত দিব্যত্বকে বোঝার চেষ্টা করা উচিত। এর ওপরে কোনো আধ্যাত্মিকতা হয় না। এই প্রেমপূর্ণ ‘ভবানীশঙ্কর’ তত্বকে বোঝা হল প্রতিটি মানুষের প্রাথমিক কর্ত্তব্য।
[Source: http://sssbpt.info/summershowers/ss1978/ss1978-23pdf]
প্রভু শিবের পরিবার- একসাথে সঙ্গতি রেখে করার যথার্থ উদাহরণ।
আমাদের মহাকাব্য থেকে একটি সুন্দর উদাহরণ উদ্ধৃত করা যায়। ‘আমাদের প্রভু শিবের পরিবার’ কে বিশ্লেষণ কর। শিবের জটায় গঙ্গাকে ধারণ করে রেখেছেন এবং দু নেত্রের মধ্যখানে কপালে অগ্নির অবস্থান। সুতরাং, তিনি ‘ত্রিনেত্রধারী’ ঈশ্বর। জল ও অগ্নি, তারা পরস্পরের বিপরীত প্রকৃতির এবং একসাথে থাকতে পারেনা। শিব হলেন পন্নগধরা, নাগভূষণা কারণ তার কণ্ঠদেশে বিষধর সাপ জড়িয়ে আছে।
তাঁর জ্যেষ্ঠ সন্তান প্রভু সুব্রমণ্যর বাহন হল ময়ূর। সাপ এবং ময়ূর পরস্পরের শত্রু। শিবের সঙ্গী, দেবী পার্বতীর বাহন হল এক সিংহ। তিনি সিংহবাহিনী। শিবের দ্বিতীয় পুত্রের মুখমণ্ডল এক হস্তীর, সে জন্য গনেশকে বলা হয় গজানন। একটি হস্তী স্বপ্নের মধ্যেও সিংহকে দেখতে চায় না। পার্বতী সর্বালঙ্কার ভুষিতা, কিন্তু তাঁর স্বামী দিগম্বর, অঙ্গে সামান্য পরিধেয় এবং অঙ্গ ভস্মভূষিত, তার মানে তাঁর সর্ব অঙ্গে বিভূতি বিচ্ছুরিত। যদিও ভগবান শিবের পরিবার বৈপরীত্য ও অসঙ্গতিতে ভরা, কিন্তু তাঁর পরিবারে সংমিশ্রন, সমন্বয়, ঐক্যতান ও একত্ব বিদ্যমান। একইভাবে, তোমাদের পরিবারে পরস্পরের মধ্যে অমিল থাকতে পারে, তথাপি তুমি শিবের পরিবারের মতন একত্বের সুরে থাকতে সক্ষম হবে। যুগ যুগ ধরে প্রভু শিব জগতকে এই শিক্ষাই দিয়েছেন।
[উৎসঃ Conversation with Sai. Sathyapanisad. Part 4.]