জীবের প্রতি দয়া (২)
স্যার আইজাক নিউটন একজন মস্ত বড় বৈজ্ঞানিক ছিলেন। তিনি তার জীবনের অধিকাংশ সময় গণিত আর বিজ্ঞানের গবেষণায় কাটিয়ে দিয়েছেন। তার ডায়মণ্ড নামে একটি কুকুর ছিল, তাকে তিনি তার বন্ধুর মতন ভালবাসতেন। বস্তুতঃ, ডায়মণ্ড মূক প্রাণী হলেও, পরিবারের একজনের মতনই ব্যবহার পেতো।
একদিন রাত্তিরে, নিউটন একলা নিশ্চিন্ত মনে বিজ্ঞানের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা নিয়ে, টেবিলের উপরে কাজ করছিলেন। সমাধান হলে তিনি খুশি হয়ে, কিছুক্ষণের জন্যে বাইরে গিয়ে খোলা হাওয়ায় বেড়িয়ে আসবেন ভাবলেন। তিনি তার সমস্ত কাগজপত্র, যে ফাইলে আগেকার গবেষণার সব কিছু রয়েছে, তার মধ্যে রেখে দিয়ে ঘরের বাইরে যাবার জন্যে বার হলেন। ডায়মণ্ড সারাক্ষণ টেবিলের তলায় শুয়েছিল, এখন সে নিউটন কে ঘরের বাইরে যেতে দেখে, সঙ্গে যেতে চাইলো। কিন্তু সে দরজার দিকে যাবার জন্য লাফ দিতেই, অজান্তে টেবিলের উপর জোরে একটা ধাক্কা লাগলো; তার ফলে জ্বলন্ত মোমবাতি টেবিলের উপরে পড়ে গিয়ে, নিউটনের কাগজপত্রে আগুন ধরে গেল নিউটন আগুন জ্বলতে দেখে ঘরে ছুটে আসার মধ্যেই তার এত বছরের গবেষণার কাগজপত্র শুদ্ধ ফাইল পুড়ে ছাই হয়ে গেল।
নিউটন তার সুদীর্ঘ পরিশ্রমের ও মূল্যবান গবেষণার শেষ পরিণতি দেখে প্রচণ্ড আঘাত পেলেন। তিনি কিছুক্ষণ তার কুকুরটার দিকে তাকিয়ে রইলেন; সে তখন পোড়া কাগজ গুলোর গন্ধ শুঁকছিলো আর লেজ নাড়ছিলো। কিন্তু,তাঁর পোষা প্রাণীর উপর তাঁর ভালবাসাই প্রাধান্য পেল। রাগের কিছুমাত্র লক্ষণ না দেখিয়ে, তিনি তার বন্ধুকে চাপড়িয়ে বললেন, “হায় প্রিয় ডায়মণ্ড, তুমি যে কতদূর ক্ষতি করলে তা কোনদিনই জানতে পারবে না।” নিউটন একজন প্রতিভাবান বৈজ্ঞানিক ছিলেন বলেই যে বড় হয়েছিলেন তা নয়;অপর প্রাণীর প্রতি প্রেম, ধৈর্য ও ক্ষমা ইত্যাদি সদগুণ গুলিও তাকে বড় করেছিল।
প্রশ্নঃ:
- জীবের প্রতি দয়া করলে কি পাওয়া যায়?
- ডায়মন্ডকে তার দুষ্কর্মের জন্য শাস্তি না দিয়ে নিউটন তাকে ক্ষমা করলেন কেন?
- নিউটনের জায়গায় তুমি হলে কি করতে?