তার অপরিমেয় প্রেম
স্বামী করুণানন্দ ছিলেন ভগবান বাবার ভক্তদের ভিতর খুবই শ্রদ্ধেয়। তিনি একটি ছোট কুষ্ঠ হাসপাতাল এবং পরিত্যক্ত ও প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি আশ্রম চালাতেন। একদিন অতি দরিদ্র আসন্ন-প্রসবা এক মহিলাকে, তার প্রতি দায়পরবশ হয়ে কেউ একজন এইভেবে এই হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন যে, অন্ততঃ এখানে মহিলাটি আশ্রয় ও সাহায্য পাবে। মহিলাটি আবার কোলে করে একটি দুই বৎসরের শিশু সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন। স্বামী করুণানন্দ মহিলাটিকে হাসপাতালে ভর্তি করে নিয়েছিলেন এবং শিশুটিকে আশ্রমের কয়েকজন মহিলার কাছে রেখেছিলেন।
তারপর এক সন্ধ্যায় হাসপাতালে কর্মরত সকলেই একটি সিনেমা দেখতে চলে গিয়েছিল। প্রায় মধ্যরাত্রে তারা ফিরে এসেছিল এবং কোনও এক নবজাতক শিশুর কান্না শুনে ভীত চকিত হয়ে গিয়েছিল। ঐ ছোট হাসপাতালে মাত্র একজন ডাক্তার ও একজন নার্স ছিল এবং তারা ভেবেছিল সন্তান প্রসব হতে আরও অনেক সময় বাকী রয়েছে। তারা ঐ কান্না শুনে তাড়াতাড়ি করে হাসপাতালে ঢুকে দেখতে পেল যে, ঐ মহিলা ইতিমধ্যেই সন্তান প্রসব করেছে। শিশুটিকে ভাল করে ধুয়ে, তোয়ালে দিয়ে মুড়ে দোলনায় রাখা হয়েছে। মাতার প্রতিও প্রয়োজনীয় যত্ন নেওয়া হয়েছে। ঐ ডাক্তার ও নার্স আশ্চর্য হয়ে মহিলাটিকে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, কে তার যত্ন নিয়ে প্রসব করিয়েছে। মহিলাটি উত্তরে বলেছিল আমি চেঁচিয়ে ডেকেছিলাম এবং প্রার্থণা জানিয়েছিলাম এবং সৌভাগ্যবশতঃ অন্য এক নার্স আমার ডাক শুনে এসেছিলেন। “কোন নার্স?”, তারা অবিশ্বাসের সুরে জিজ্ঞেস করেছিলেন, এখানে অন্য কোনও নার্স নেই। মহিলাটি বলেছিলেন, “ঐ নার্সটি”, তিনি দেওয়ালে বাবার ছবির দিকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছিলেন। “ঐ নার্সটি একটু আগেই এখানে ছিলেন, এখন তিনি অন্য রোগীদের দেখতে গেছেন।”
এরপর স্বামী করুণানন্দ যখন পূট্টাপর্তীতে গিয়েছিলেন, তখন তিনি বাবাকে কিছু বলবার আগেই তাকে ধমক দিয়ে অতি মধুর স্বরে বাবা বলেছিলেন, দেখ বাছা, হাসপাতালের জিনিষপত্রগুলোকে যেন সাজিয়ে সুন্দরভাবে রাখা হয়। আমার যে জিনিষগুলোর প্রয়োজন হয়েছিল সেগুলোকে পেতে অনেকটা সময় লেগেছিল!”