শৈশব লীলা কাহিনী – ১

Print Friendly, PDF & Email
শৈশব লীলা কাহিনী – ১

শুধু এখন নয়, এমনকি তখনকার দিনেও বাবা নিঃস্বার্থ সেবা ও অহিংসা তত্ত্বের শিক্ষা দিতেন। কোন্ডাম্মা রাজুর পুত্রেরা এবং তার কন্যাদের ভিতর একজন একই সঙ্গে সকলে বাস করতেন বলে, সত্য প্রায় কুড়িজন শিশুর ভিতর বড় হয়েছিলেন। বিভিন্ন ধরণের রঙীন কাপড় হতে পোষাক তৈরী করবার জন্য বুক্কাপটনম বাজার হতে দর্জি এলে অন্য সব শিশুরা দৌড়ে এগিয়ে গিয়ে তাদের পছন্দমত কাপড় বেছে নিত। কিন্তু শিশু সত্য এক ধারে দাঁড়িয়ে থাকতেন এবং তাঁর মা যখন তাকে পছন্দমত কাপড় বেছে নিতে বলতেন তখন শিশু সত্য বলতেন, “প্রতিটি শিশু যে কাপড় পছন্দ করবে তা তাদের দেওয়া হোক, তারপর যেটা পড়ে থাকবে সেটাই আমার কাছে যথেষ্ট।”

একদিন সত্য যখন স্কুল হতে ফিরছিলেন তখন তার ভাল গুণের জন্য ঈর্ষান্বিত কিছু সহপাঠী তাঁকে ঠেলে কাদায় ফেলে দিয়েছিল। তারা তাঁর সার্ট ছিঁড়ে দিয়েছিল এবং পা ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু সত্য শান্ত ও চুপ করেছিলেন। এমন কি তাঁর সহপাঠীরা যখন সত্যের সঙ্গে এভাবে অভদ্র আচরণ করেছিল তাতেও কিন্তু তিনি কখনই অভিযোগ করেননি কিংবা সব কথা বলেন নি এবং তাঁর পিতা মাতা তাঁর অল্পবয়সী বন্ধুদের কাছ হতেই শুধু এই ঘটনার কথা জানতে পেরেছিলেন।

একাদশী উৎসবের সময় চিত্রাবতী নদীগর্ভের শুকনো জায়গায় গরুর গাড়ীর দৌড় প্রতিযোগীতা হোত। বলদরা যাতে খুব জোরে দৌড়ায় তার জন্য তাদের লাঠি দিয়ে মারা হত কিংবা তাদের লেজ মুচড়ে দেওয়া হত। এই নিষ্ঠুর দৌড় প্রতিযোগিতা সত্য তার বন্ধুদের দেখতে দিতেন না এবং শিশুদের বলতেন যে, তারা যেন বলদদের না মারতে তাদের পিতাদের পীড়াপীড়ি করে বলে। বেশ কয়েক বছর পর কিছু ভক্ত গরুর গাড়ী করে নদী পার হয়ে তাদের নিজেদের গাড়ীতে উঠবার জন্য প্রশান্তি নিলয়ম হতে রওয়ানা দিয়েছিলেন, তখন স্বামী তাদের ডেকে পাঠিয়ে বলেছিলেন, “শোন! তোমরা যখন বালির কাছে পৌঁছুবে তখন সবাই গরুর গাড়ি হতে নেমে হেঁটে বালি পার হবে। তোমাদের সকলের ওজন বালির উপর দিয়ে টেনে নেবার জন্য বলদদের যেন জোর করা না হয়, বুঝলে?”

মোরগের যুদ্ধও তখনকার দিনে, গ্রামে দেখা যেত। এই মোরগদের পায়ে ছোট ছোট ছুরি বেঁধে দেওয়া হোত এবং যতক্ষণ পর্যন্ত একটি মোরগ মরে না যেত ততক্ষণ তাদের দিয়ে যুদ্ধ করানো হোত। আবার এই যুদ্ধে বিজয়ী মোরগটিও খুবই মারাত্মক ভাবে আহত হত। এই সকল খেলা ও প্রতিযোগীতাকে সত্য কঠোরভাবে নিন্দা করতেন এবং বলতেন “ভালো কাজের প্রতিযোগিতা কর, এমন নিষ্ঠুর কাজে নয়।”

[Source : Lessons from the Divine Life of Young Sai, Sri Sathya Sai Balvikas Group I, Sri Sathya Sai Education in Human Values Trust, Compiled by: Smt. Roshan Fanibunda]

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।