ধারণা
পরীক্ষামূলক শিক্ষাই হলো শিক্ষা পদ্ধতিতে এক সার্বিক পদক্ষেপ যা আমাদের কৃত্রিম ও নির্দিষ্ট ব্যবহারবিধি বা চিরাচরিত কৌশলের বন্ধন থেকে মুক্ত করে এক সুস্হ এবং ইতিবাচক ভাবধারা প্রদান করে থাকে। প্রত্যেকটা ঘটনার পেছনে সঠিক যুক্তি বা বিজ্ঞানটি বুঝতে পেরে সেগুলি ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের জীবনে অভিজ্ঞতার নিরিখে এক পরিপূর্ণতা উপলব্ধি করে। এর ফলে সত্যম শিবম সুন্দরম অর্থাৎ সত্য, উৎকর্ষতা ও সৌন্দর্য হয়ে ওঠে পরীক্ষা মূলক শিক্ষার মাপকাঠি। এই অন্তর্দূষ্টি/প্রজ্ঞা ছাত্র-ছাত্রীর অভ্যন্তরে মূল্যবোধ স্হাপন করার ভূমিকা পালন করে থাকে।
এই বিশেষ পদ্ধতির দুইটি প্রধান উদ্দেশ্য:
- প্রথমত, এতে শ্রেণীকক্ষের সমস্ত শিশুরই অংশ গ্রহণ করার সুযোগ থাকে। শ্রেণী-শিক্ষক বিষয়টি নির্বাচন করার পর বিষয়বস্তুর কোন কোন দিক আলোচিত হবে এবং কিভাবে উপস্থাপিত হবে তা শিক্ষার্থীরাই জানাবে। তারা যখন তাদের ভূমিকা সঠিক ভাবে বুঝতে পারবে , তখন তারাই প্রয়োজনীয় সবকিছু সংগ্রহ করে পরম উৎসাহ সহকারে গোটা বিষয়টি উপস্থাপন করে দেখাবে।
- যখন শিশুরা শুধু শোনে , তার মাত্র 20% তারা গ্রহণ করে । কিন্তু তারা যখন সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে এবং নিজেরা কি বুঝেছে , কতটা বুঝেছে জানায় – তখন 70 % বা তার অধিক তারা গ্রহণ করতে সমর্থ হয় । শিশুরা যা প্রত্যক্ষ করে , তা তারা গ্রহণ করে । সেটাই তাদের জ্ঞান বলে দাবি করা যেতে পারে । যা তারা অন্তঃস্থ করতে পারল না , তাদের হৃদয়-মনের সঙ্গে জড়িত হল না , তা তারা কোনমতে উগরে দেয়, যা আজকাল পরীক্ষায় ঘটে থাকে। শ্রী সত্য সাইবাবার মতে এটা নিতান্তই পুঁথিগত শিক্ষা । কেবলমাত্র ব্যবহারিক জ্ঞান ই গ্রহণযোগ্য এবং সেটিই সঠিক শিক্ষালাভ।
দ্বিতীয়ত, দলগত ভাবে একটা বিষয় নিয়ে কাজ করলে , শিশুদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার মানসিকতা গড়ে ওঠে। বিভিন্ন ধারণা ও পারস্পরিক দক্ষতা আদানপ্রদানের মাধ্যমে কোনো কিছুকে ভাগ করে নেওয়ার যে আনন্দ বা মূল্য আছে , তা তারা বুঝতে পারে । তাদের মধ্যে সহমত হওয়ার মানসিকতা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ গড়ে ওঠে ।
এই ভাবে দলগতভাবে কাজ করলে সহপাঠীদের সমর্থনে স্নেহ ও ঐকতার প্রসার ঘটে ।