এগুলো বিড়ালের জন্য
দিনটি ছিল ২৪শে নভেম্বর, ১৯৭২। সুদুর গুয়াহাটি (আসাম রাজ্যের রাজধানী) হতে এক বিরাট দল পুট্টাপর্তীতে জন্মোৎসব দর্শন করতে এসেছিলেন। এখন তাদের ফিরে যাবার সময় হয়েছে বলে বাবা খুবই প্রেমের সঙ্গে তাদের সবাইকে বিভূতির প্যাকেট নিজের হাতে দিচ্ছিলেন। লক্ষ্মী নামে ঐ দলের এক বালিকাকে বিভূতি দিয়ে তিনি এগিয়ে যাচ্ছিলেন, কিন্তু হঠাৎ ফিরে এসে মেয়েটির হাতে আরও দুটো প্যাকেট দিয়ে বলেছিলেন, “ইয়ে বিল্লিকে লিয়ে” – (অর্থাৎ এগুলো বিড়ালের জন্যে)। এই মহাভাগ্যবতী বিড়ালটি কে, যে নিজের উপর ভগবান বাবার করুণাকে আহ্বান করেছে? বিড়ালটির নাম ছিল ‘মিংকল’। ঐ শহরের ড্রেন থেকে লক্ষ্মী তাকে এক বৃষ্টির দিনে উদ্ধার করেছিল। বিড়ালটিকে বাড়ি এনে তাকে খাইয়েছিল ও শরীর গরম করে দিয়েছিল। কিন্তু লক্ষ্মীর দিদি বিড়ালটিকে পছন্দ করত না এবং ঐ বিরক্তিকর প্রাণীটি বাড়ীতে এলে পোষা প্রাণী বলে বাড়ীতে রাখবার জন্য লক্ষ্মীর উপর দোষারোপ করত।
এক রাত্রে বোনেরা কয়েকজন অতিথিকে রাত্রে খাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ করেছিল এবং মিংকল খুবই আগ্রহের সঙ্গে সব কিছু লক্ষ্য করছিল। পুরো মাছ দিয়ে ভর্তি একটি প্লেটের উপর বিড়ালটির লোভ খুবই বেশী ছিল এবং নীরবে কিছু নিজের জন্য নিতে চাইল। একটি মাছের টুকরো তুলে নিয়ে সে দৌড়ে চলে গেল। বড় বোন তা দেখে লক্ষ্মীর উপর চিৎকার করল। লক্ষ্মী তখন মিংকলের গলাটা ধরে একটি লাঠি দিয়ে খুব মারল। বেচারা বিড়াল ব্যাথায় চিৎকার করতে লাগলো।
হঠাৎ সারা বাড়ীর ও পূজোর ঘরের সব কয়টি সাইবাবার ছবি রহস্যজনকভাবে দুলতে লাগল এবং দুটো ছবি দেওয়াল হতে টেবিলের উপর পড়ে গেল। ভূমিকম্প হচ্ছে ভেবে সকলেই বাড়ীর বাইরে চলে গেল। ধীরে ধীরে লক্ষ্মী বুতে পারল যে এটা নিশ্চয়ই পশুদের প্রতি দয়া সম্পর্কে শিক্ষা দেবার জন্য বাবার নিজস্ব পদ্ধতি। দুই বোনের চোখে অনুতাপের অশ্রু বয়ে গেল – লক্ষ্মী ছোট বিড়ালটিকে কোলে নিয়ে হাত বুলোতে লাগল, বিড়ালটি তখন কঁপছিল, লক্ষ্মী আবিষ্কার করল যে বিড়ালের গায়ের লোম সুগন্ধি বিভূতিতে ঢাকা হয়ে রয়েছে। বিভূতি প্রমাণ করল যে বাবা সর্বত্র রয়েছেন এবং তিনি বিড়ালটিকে ভালবাসেন।
[Source : Lessons from the Divine Life of Young Sai, Sri Sathya Sai Balvikas Group I, Sri Sathya Sai Education in Human Values Trust, Compiled by: Smt. Roshan Fanibunda]