কর্তব্য
ধর্ম অনুসারে করা কাজকে কর্তব্য বলা হয় । সাধারণত কাউকে কোন কাজ করার দায়িত্বকে কর্তব্য বলা হয় । একজন ছাত্রের কর্তব্য পড়াশোনা করা, একজন চিকিৎসকের কর্তব্য সঠিকভাবে চিকিৎসা করা, ঠিক সেভাবেই একজন রেলওয়ে কর্মচারীর কর্তব্য যাত্রীদের টিকিট দেওয়া।
কোনগুলি আমাদের প্রধান কর্তব্য
- পিতা-মাতার প্রতি কর্তব্য- ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, বাধ্যতা, কৃতজ্ঞতার মাধ্যমে পিতা মাতার প্রতি কর্তব্য পালন।
- গুরুজনদের প্রতি কর্তব্য- ভালোবাসার মাধ্যমে পিতা- মাতা ও পিতামহ- পিতামহীর প্রতি যত্নশীল হওয়া আমাদের অবশ্য পালনীয় কর্তব্য।
- শিক্ষক ও গুরুর প্রতি কর্তব্য- শিক্ষক, যিনি জ্ঞান প্রদান করেন ও গুরু, যিনি মানবিক মূল্যবোধের বিকাশ ঘটান এবং মনকে ঈশ্বরমুখী করে তোলেন, তাঁদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত।
- সমাজের প্রতি কর্তব্য – আমরা শারীরিক, মানসিক, বৌদ্ধিক, আবেগ সংক্রান্ত ও আধ্যাত্মিক দক্ষতা সমাজ থেকেই অর্জন করি। এইসব গুণাবলী অর্জন ক’রে আমরা সমাজের কল্যাণে অংশ নিতে পারি। সমাজ ছাড়া কখনোই আমরা জীবন কল্পনা করতে পারি না।
- স্বামী বলেন, সকলকে ভালোবাসা ও সকলকে সাহায্য করার মাধ্যমেই সবচেয়ে ভালোভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা যায় । এর মাধ্যমে ‘ সর্বদা সাহায্য করো, কখনো আঘাত করো না ‘ এই ধারণাটির সর্বশ্রেষ্ঠ প্রকাশ হয় । সমাজের সকলের অধিকার ও স্বাধীনতা কে সম্মান জানানো আমাদের কর্তব্য । কর্তব্যের অর্থ আচার আচরণ, কথাবার্তা, কাজকর্মের দ্বারা কাউকে আঘাত না দিয়ে দায়িত্ব পালন করা । রাস্তায় চলার সময় একটি বড়ো লাঠি ঘোরাতে ঘোরাতে গেলে পিছনে যে ব্যক্তি আছেন, তার বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত।
- পৃথিবীর প্রতি কর্তব্য- প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে আমরা খাদ্য, পোশাক ও আশ্রয় পেয়ে থাকি । এই কারণে, প্রাকৃতিক সম্পদের সংরক্ষণ প্রয়োজনীয় । কোন অবস্থাতেই প্রকৃতির দূষণ ঘটানো উচিত নয়।
- দেশের প্রতি কর্তব্য – দেশকে ভালোবাসা উচিত ও দেশের সার্বভৌমত্ব বিঘ্নিত করে- এমন শক্তিকে প্রতিরোধ করা উচিত । আদর্শ নাগরিক হিসেবে আমাদের কর্তব্য পালন করা উচিত।
- ঈশ্বরের প্রতি কর্তব্য – আমরা ঈশ্বরের সন্তান । আমাদের আচরণ দ্বারা পরমপিতা ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে হবে। চিন্তা, বাক্য ও কর্মে্র মধ্যে সংহতি স্থাপনের জন্য আমাদের অনবরত প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
ভগবান বাবা বলেছেন, এই কাজটি জীবদ্দশাতেই আমাদের সম্পূর্ণ উদ্যম নিয়ে সম্পন্ন করতে হবে ও তা ভগবানের চরণে সমর্পণ করতে হবে । কর্তব্যকে বলা যায় পূজা।
গুরুরা স্বামীর জীবনী থেকে কাহিনী বলবেন- তাঁর শিশুকাল, মাতা ঈশ্বরাম্মাকে করা প্রতিশ্রুতি কীভাবে তিনি পালন করেছিলেন, কীভাবে পরিবারের জন্য জল বহন ক’রে নিয়ে যেতেন । এই কাহিনী গুলি শোনার মাধ্যমে শিশুরা বুঝতে পারবে যে স্বামী শিশুকাল থেকেই তাঁর যাবতীয় কর্তব্যে অবিচল ছিলেন।