কোন কাজই বড় কিংবা ছোট নয়
ভারতীয়রা মহাত্মা গান্ধীকে জাতির জনক বলে শ্রদ্ধা করে। তেমনি, আমেরিকাবাসীর জর্জ ওয়াশিংটন কে তাদের দেশের জনক বলে মান্য করে। তিনি একজন সাহসী সৈনিক ছিলেন, তার অন্তঃকরণ মহৎ ছিল। তাঁর মনে ছিল দেশবাসী ও স্বজাতীয়দের সেবা করার বিরাট আকাক্ষা আমেরিকার স্বাধীনতার যুদ্ধের সময়ে জর্জ দেশের সেনাবাহিনীর অধিনায়ক ছিলেন।
একদিন তিনি, সৈন্যদের তাঁবুতে সব কিছু ঠিক মতো চলছে কিনা দেখার জন্য ঘোড়ার পিঠে চড়ে গিয়েছেন। তাঁবুর এক প্রান্তে নতুন ইমারতের নির্মাণ কাজ চলছিলো। একজন সেনাধ্যক্ষ দুজন সৈন্যকে দিয়ে ইমারতের মাথায় একটা লম্বা, ভারী লোহার বরগা উঠাচ্ছেন। অত্যধিক ওজনের ঐ বর্গার সঙ্গে ধ্বস্তাধ্বস্তি করে ছয় জন সৈন্য, আদেশ পালন করার চেষ্টায় হয়রান হয়ে পড়েছিল। কিন্তু, সৈন্যদের জন্য সেনাধ্যক্ষর বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা লক্ষণ দেখা গেল না। তিনি তাদের সাহায্য করার পরিবর্তে দূরে দাঁড়িয়ে চিৎকার করতে লাগলেন, “ওঠাও, ওঠাও, এগিয়ে এসো।” জর্জ এই দৃশ্য সহ্য করতে পারলেন না। তিনি সেনাধ্যক্ষের কাছে গিয়ে তাকে বললেন, “বরগাটা খুবই ভারী।
আপনি ওদের সঙ্গে গিয়ে একটু হাত লাগান না কেন ?” উত্তর এলো, “আরে এতো সৈন্যদের কাজ। দেখছেন না আমি ক্যাপ্টেন? জর্জ বললেন, ও আচ্ছা! আমি দুঃখিত, এ কথা জানতাম না।” ঘোড়ার পিঠ থেকে নেমে এসে তিনি সৈন্যদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বরগা উপরে ওঠা পর্যন্ত সাহায্য করলেন। তারপর সেনাধ্যক্ষের দিকে ফিরে বললেন, “ক্যাপটেন, এর পরে কোন সময়ে এই ধরনের কাজে, পর্যাপ্ত সৈন্য না থাকলে আমাকে ডেকে পাঠাবেন। আমি আমেরিকা স
েনাবাহিনীর অধিনায়ক। আমি খুশি মনে চলে আসবো।” এই কথা শুনে সেনাধ্যক্ষ স্তম্ভিত হয়ে গেলেন। তিনি কিছু বলতে পারার আগেই জর্জ তার ঘোড়ার পিঠে চড়ে দ্রুতবেগে তার তাঁবুর দিকে রওনা হলেন। দাম্ভিক সেনাধ্যক্ষকে জর্জ এক বিরাট শিক্ষা দিলেন। সমস্ত মানুষই সমান, পেশা যার যাই হোক কিংবা যে, যে কাজই করুক না কেন, প্রত্যেককেই শ্রদ্ধা করা ও ভালবাসা উচিত। কার কি পেশা তাই দিয়ে মানুষের ছোট বড় বিচার হয় না, তার সৎ বা অসৎ বৃত্তি তাকে বড় কিংবা ছোট করে।
প্রশ্নঃ
- সেনাধ্যক্ষের কি ভুল হয়েছিল?
- জর্জ ওয়াশিংটনের কথায় সেনাধ্যক্ষ স্তম্ভিত হয়ে গেলেন কেন?
- তুমি যদি ক্যাপটেনের জায়গায় থাকতে, তুমি কি করতে?
- কয়েকটি সৎ বৃত্তির উল্লেখ কর যা মানুষকে বড় করে এবং কয়েকটি অসৎ বৃত্তির উল্লেখ কর যা মানুষকে ছোট করে।