প্রকৃত সাহায্য
একজন লোক বীণা বাজিয়ে গান করে তার ভিক্ষা সংগ্রহ করে জীবন চালাত। ক্রমে ক্রমে এই লোকটি বৃদ্ধ হল, তার গলা খারাপ হয়ে গেল। চোখের দৃষ্টি কমে গেল এবং আস্তে আস্তে সে অন্ধ হয়ে গেল। তার বীণাটি সে আর তেমন ভাল করে বাজাতে পারত না। এর ফলে তার ভিক্ষা পাওয়াও কমে যেতে লাগল। এই ভিক্ষা পাওয়া কমে যাওয়ার ফলে তার মধ্যে কেমন যেন একটা হতাশা, সন্দেহ ও মনোকষ্ট এসে গেল। একদিন এই লোকটি রাস্তায় যেতে যেতে হঠাৎ পড়ে গেল। এমন সময় তিনটি ছেলে এসে তাকে ধরে ধরে তুলল। প্রথম জন বলল, “চলো, একে আমরা বাড়ীতে নিয়ে যাই।” দ্বিতীয় জন বলল, “যদিও বাড়ী নিয়ে যাওয়া সবচেয়ে সহজ কিন্তু তাতে সমস্যার কিছু সমাধান হবে না।” তৃতীয় জন বলল, “না, আমাদের কিছু কষ্ট করতে হবে যাতে এই লোকটির প্রকৃত কিছু সাহায্য হয়।”
প্রথম জন বলল, “শুনুন, আপনি দুঃখ পাবেন না, কষ্ট পাবেন না, যাতে প্রকৃত কিছু উপকার হয় তার জন্য আমরা চেষ্টা করছি।”
দ্বিতীয় জন ওর বীণাটিকে নিয়ে সুর ঠিক করল এবং তৃতীয় জন ওর সাথে সাথে গান করতে লাগল। এই ছেলেটির গলাও ছিল ভারী সুন্দর আর যে বীণা বাজাচ্ছিল, সে বাজাচ্ছিলও ভাল। তাদের এই গান ও বীণা শুনে লোকেরা ভীড় করতে লাগল আর পয়সাও দিতে লাগল। কিছুক্ষণের মধ্যেই অনেক পয়সা জমে গেলো। তখন প্রথম ছেলেটি পয়সাগুলি ঘুরে ঘুরে সংগ্রহ করে বৃদ্ধের হাতে দিল। এতে অনেক পয়সা জমা হল।
বৃদ্ধ এই ব্যাপার দেখে ভীষণ আনন্দ পেলেন। আনন্দে তার চোখে জল এসে গেল। বললেন, “বাবা, তোমরা ভারী মিষ্টি ছেলে। তোমাদের নামগুলি আমায় বলবে?”
প্রথম জন বলল, “আমার নাম বিশ্বাস।”
দ্বিতীয় জন বলল, “আমার নাম আশা।”
আর তৃতীয় জন বলল, “আমার নাম প্রেম।”
তারা বলল, “দাদু, এবার কি আমরা যেতে পারি?” বৃদ্ধ এতক্ষণে বুঝতে পারলেন যে, সত্যিই তিনি এতদিন হারিয়ে ফেলেছিলেন বিশ্বাস, তিনি হারিয়ে ফেলেছিলেন আশা, তার হৃদয় থেকে চলে গিয়েছিল প্রেম। বুঝতে পারলেন সেইজন্যই ভগবান তাকে বুঝিয়ে দিলেন যে, মানুষের দুঃখের দিনে তাকে প্রকৃত সাহায্য করে এই বিশ্বাস, আশা ও প্রেম।
প্রশ্নঃ
- ছেলেরা বৃদ্ধকে বাড়ি নিয়ে গেল না কেন?
- তাদের পরিকল্পনার আসল উদ্দেশ্য কি ছিল?
- প্রত্যেকের তিনটি প্রধান গুণ থাকা উচিত। সেগুলি কি কি?