গৃহ
শিরোনামঃ সবাই এক! সবার সঙ্গে একই ভাবে থাকো। দৃশ্যপট:বাড়ির বসার ঘর। চরিত্র:ঠাকুরমা, বাবা, মা, হরি আর রামু (বাড়ির কাজের ছেলে/চাকর)। সহ মূল্যবোধ ঃসমবেদনা, স্বনির্ভরতা, অধীনস্থদের সন্মান করা।
দৃশ্য ১ ঃ (হরির বাড়িতে একটি ব্যস্ত সকাল।- হরি স্কুলে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে। রামু নামে কাজের ছেলেটি ঘরে সকলকে কাজে সাহায্য করছে)। মা ঃ (চিৎকার করে) রামু …! রামু…! কোথায় তুই? তুই কি জানিস না এই সময় হরি স্কুলে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়? রামু ঃ আসছি, কাকিমা। আমি গাছে জল দিচ্ছিলাম। মা ঃ এখন সেটা করা কি খুব জরুরি? তুই কি স্কুল বাসের হর্ন শুনতে পাস নি? হরি ঃ মা! দেখ! রামু আমার জুতো জোড়াও পালিশ করেনি। মা ঃ ও আজকাল খুব অলস হয়ে গেছে। হরির টিফিন বাক্স কি হল? বাবা ঃ (রেগে) তুই স্তম্ভের মতো দাঁড়িয়ে আছিস কেন? তুই ওর ব্যাগটা নিতে পারছিস না? কি ভারি ওটা। রামু ঃ হ্যাঁ বাবু …হরি…! দাও তোমার ব্যাগটা দাও (দুজনে বেরিয়ে যায়) বাবা ঃ ও, এখন মনে পড়ল। ওর কাকা ফোন করে বলেছিল ওর মা অসুস্থ আর ওকে দেখতে চায়। ঠাকুরমা ঃ বেচারা ছেলেটা! ওকে ৩/৪ দিনের ছুটি দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দে, ওখানে কটা দিন মায়ের সাথে কাটিয়ে আসুক। বাবা ঃ ঠিক আছে। (রামুর কাকা এসে ওকে গ্রামে নিয়ে যায়। তিন দিন পর…)
দৃশ্য ২ ঃ মা ঃ আমি খুব ক্লান্ত। অনেক কাজ। ও আমাকে প্রচুর সাহায্য করত। হরি ঃ ও আমার স্কুলে যাওয়ার সব কিছু গুছিয়ে রাখত। ওকে ভীষণ মিস করছি। ঠাকুরমা ঃ তোমরা সবাই ছোট থেকে ছোট কাজের জন্য ওর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছ। বাবা ঃ সত্যি। বাগানটা দেখ। রামুর অনুপস্থিতিতে গাছ গুলো শুকিয়ে গেছে। ঠাকুরমা ঃ কিন্তু, কেউ না কেউ গাছে জল দিতে পারত। এটা আমাদের বাগান। আমাদেরও সমান দায়িত্ব বর্তায় এটি কে ঠিক মতো দেখাশোনা করার। বাবা ঃ হরি, রামু তোরই বয়সী মাত্র। এখন সময় হয়েছে, রামু তোর সব কাজ করে দেবে এই ভরসায় না বসে থেকে নিজের কাজগুলি নিজে স্বাধীনভাবে করতে শুরু কর। বাবা ঃ ধর পরে যদি তোকে হোস্টেলে গিয়ে থাকতে হয়। তখন কি করে তোর কাজ সামলাবি। মা ঃ হে ভগবান! আমি তো কল্পনাই করতে পারছিনা। ঠাকুরমা ঃ ওর ওপর কাজ চাপিয়ে দেওয়ারও একটা সীমা আছে। বাবা ঃ মা, তুমি ঠিক বলেছ। ঠাকুরমা ঃ ও ফিরে এলে আর আমরা ওরকম করব না। না হলে সুদূর ভবিষ্যতে আমরা বড্ড বেশি অলস হয়ে যাব। হরি ঃ আমি প্রথমে ঘুম থেকে উঠে আমার বিছানা তোলা, জুতো পালিশ করা, জলের বোতল ভরা ও নিজের টিফিন বাক্স নিজেই গোছাতে শুরু করব। বাবা ঃ এটাই ভালো। আমরা যদি ওর কাজ ভাগ করে নি তাহলে ও আরও একটু বেশি খালি সময় পাবে । আমি ঠিক করেছি , ওকে পড়াশোনা শেখাব যাতে সামনের বছর ওকে স্কুলে ভর্তি করে দিতে পারি। ঠাকুরমা ঃ (খুশি হয়ে) উত্তম ভাবনা।