সন্তুষ্টঃ – বিশদ পাঠ
সন্তুষ্টঃ সততং যোগী যতাত্মা দৃঢ়নিশ্চয়ঃ।
ময্যর্পিতমনোবুদ্ধির্যো মদ্ভক্তোঃ স মে প্রিয়ঃ।।
(chap. 12, verse 14)
যিনি সদা সন্তুষ্ট, আমার প্রতি সতত ভক্তি ভাবাপন্ন, আত্মসংযমী, দৃঢ়প্রত্যয়ী হয়ে মন বুদ্ধি আমাতে সম্পূর্ণ নিবদ্ধ, এমন ভক্তই আমার প্রিয়। ঈশ্বরের সর্বত্র বিরাজমানতা এবং তাঁর প্রেমের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রেখে যারা আনন্দে থাকে ঈশ্বরের ভালোবাসা তাদের প্রতি বিশেষভাবে বর্ষিত হয়। অচঞ্চল ও অবিচলিত মন নিয়ে এবং স্থির দৃষ্টি শক্তি দিয়ে সেই সমগ্র সৃষ্টির মধ্যে স্রষ্টাকে দেখতে পায়। ভগবানের কৃপায় যাই ঘটে তাতেই সে সন্তুষ্ট। সে কখনো কাউকে ঘৃণা করে না। সে কখনো কাউকে ছোট করে না বা আঘাত করেনা। তার নিজের প্রতি অপর সকলের আচরণ যেমনই হোক না কেন তা গ্রাহ্য না করে সে সকলের প্রতি সহানুভূতিশীল। যাই ঘটুক না কেন ধর্ম ও প্রেমের পথ অনুসরণে সে তার সিদ্ধান্তে অবিচল। তার চিন্তা, বাক্য ও কর্মে সে সংযমী। নিম্নবর্ণিত গল্পের দৃষ্টান্ত স্বরূপ সে চূড়ান্ত পর্যায়ের প্ররোচনাতেও কখনো আত্মসংযম হারায় না।
এক সাধু তার শিষ্যকে নিয়ে কোথাও যাচ্ছিলেন। পথে তাদের এমন একজন লোকের সাথে সাক্ষাৎ হলো যে ওই শিষ্যকে অন্যায় ভাবে দোষদুষ্ট করে গালমন্দ করতে শুরু করল। শান্তভাবে কিছুক্ষণ সে সব অপমান সহ্য করলো কিন্তু তারপর সে মেজাজ হারিয়ে তাকে গালাগাল দিতে শুরু করল। তাদের একে অপরকে অপমান করতে দেখে সাধু তাদের ত্যাগ করলেন এবং তাঁর নিজের পথ ধরে চলতে শুরু করলেন। কিছুক্ষণ পর শিষ্য সাধুকে ধরে ফেলল, “প্রভু, আপনি আমাকে ওই দুষ্টু লোকটার কাছে একা রেখে চলে এলেন কেন?” সাধু উত্তরে বললেন, “তুমি কোথায় একা ছিলে? তুমি তো কুরুচিকর ভাষার সংস্রবে ছিলে। যতক্ষণ তুমি একা ছিলে আমি তোমার সাথে ছিলাম। আমি এও দেখলাম যে সকল দেব দেবী তোমার সাথে ছিলেন। কিন্তু যখন তুমিও গালমন্দ শুরু করলে তারা চলে গেলেন এবং তাদের সাথে আমিও স্থান ত্যাগ করলাম।