সাইবাবা নামের অর্থটা একবার ভেবে দেখো। স মানে দিব্য, আই মানে মা এবং বাবা মানে পিতা। নামটাই বলে দিচ্ছে যে এর অর্থ হল দিব্য মা ও বাবা, ঠিক যেমন সাম্বা- শিব (স অম্বা শিব) যার অর্থও হল দিব্য মা ও বাবা। তোমার জন্ম দাতা / দাত্রী মা বাবার ভালোবাসা প্রদর্শনের ক্ষেত্রে স্বার্থপরতা তো থেকেই যায়। কিন্তু এই সাই ‘মা ও বাবা’ তোমাদের ওপর স্নেহ প্রেম ও তিরস্কার বর্ষন করে শুধু মাত্র তোমার আত্মপোলব্ধির সংগ্রামে তোমাকে জয়ের পথে পরিচালিত করার জন্য। কারণ এই সাই পৃথিবীতে এসেছেন সমগ্র মানবজাতিকে এক করার সেই মহোত্তর কর্ম সম্পাদনের উদ্দেশ্যে – প্রতিটি মানুষকে এটা বোঝাবার জন্য যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনের মধ্য দিয়ে ও সেই এক পরমেশ্বরকে প্রকাশ করার জন্য প্রতিটি প্রাণের দৃঢ় ও আলোকিত আত্মিক সত্যতার মধ্য দিয়ে উপলব্ধি করা যায় যে সমগ্র মানব জাতি একটিই পরিবার। এই পরম দিব্য চৈতন্যই হল মূল ভিত্তি যার ওপর সমগ্র বিশ্বব্রহ্মান্ড নির্ভর করে আছে এবং সেই পরম দিব্য চেতনাই সকলেই নির্দেশ দিচ্ছে সেই এক পরম দিব্য ঐতিহ্যকে চিনতে পারার, আবিস্কার করার, – যে পরম দিব্য ঐতিহ্য প্রতিটি মানুষের সাথে প্রতিটি মানুষের আত্মিক বন্ধন গড়ে তোলে যাতে মানুষ তার পাশবিক প্রবৃত্তি থেকে মুক্ত হয় এবং ‘দিব্যত্ব’ – যা মানব জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য, সেখানে উন্নিত হয়। আমি প্রেম স্বরূপ। প্রেমই আমার হাতিয়ার। প্রেমহীন কোনো প্রাণীর অস্তিত্ব নেই। হীন প্রাণীও নিজেকে ভালোবাসে। এবং এই আত্মাই ঈশ্বর। সুতরাং নাস্তিক বলে কেউ নেই, যদিও কেউ কেউ ঈশ্বরকে অপছন্দ করেন ও অস্বীকার করেন, ঠিক যেমন ম্যালেরিয়া রোগীরা মিষ্টি অপছন্দ করেন অথবা ডায়েবেটিক রোগীরা মিষ্টি প্রত্যাখান করা ছাড়া উপায় নেই। যারা নিজেরা নাস্তিক বলে গর্ব বোধ করেন, তারাও একদিন রোগমুক্ত হবার পর ঈশ্বরের মহিমার রসাস্বাদন করতে পারবেন ও তাঁকে শ্রদ্ধা করবেন। আমার সত্যতা সম্পর্কে এতকিছু আমাকে বলতেই হয় কারণ আমি চাই তোমরা এই দিব্য চিন্তায় মগ্ন থাকো এবং তা থেকে দিব্য আনন্দের অভিজ্ঞতা অর্জন করো যাতে আমার নির্দেশিত নিয়ম ও আধ্যাত্মিক শৃঙ্খলা পর্যবেক্ষণে ও অনুশীলনে তোমরা উৎসাহিত হও এবং আত্মপোলব্ধির পথে, তোমাদের হৃদয়ে আলোকিত সাই উপলব্ধির পথে এগিয়ে যেতে পারো।
চলো আমরা স্বামী ভজনের মধ্য দিয়ে আমাদের দিব্য মাতা পিতার বন্দনা করি।