বিবেকানন্দের জন্ম
বিবেকানন্দের জন্মস্বামী বিবেকানন্দ, যিনি সন্ন্যাস গ্রহণের পূর্বে’ নরেন্দ্রনাথ দত্ত নামে পরিচিত ছিলেন, তিনি ১৮৬৩ খ্রীস্টাব্দের ১২ জানুয়ারি কলিকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতা ছিলেন বিশ্বনাথ দত্ত, মাতা ভুবনেশ্বরী দেবী। দত্ত পরিবার ছিলেন ধনী ও সম্ভ্রান্ত, এবং দানশীলতা ও শিক্ষার জন্য সুবিদিত। নরেন্দ্র- নাথের পিতামহ দুর্গাচরণ দত্ত সংস্কৃত ও পারসী ভাষায় সুপণ্ডিত ছিলেন। পুত্র বিশ্বনাথের জন্মের পর তিনি সন্ন্যাস গ্রহণ করে গৃহত্যাগ করেন বিশ্বনাথ কলিকাতা হাইকোর্টের বড়ো উকিল ছিলেন। তিনি খুব বিদ্বানও ছিলেন। ভুবনেশ্বরী দেবী খুব ধর্মপ্রাণা মহিলা ছিলেন। তাঁর কেবল কয়েকটি কন্যা ছিল, তাই তিনি বারাণসীতে তাঁর এক আত্মীয়কে অনুরোধ করেছিলেন তাঁর পুত্রকামনা করে বিশ্বেশ্বরের পুজা দিতে। এর অল্প কিছুদিন পরই শিব তাঁকে দর্শ’ন দেন ও বলেন, তিনি স্বয়ং ভুবনেশ্বরীর সন্তানরূপে জন্মগ্রহণ করবেন।
বিবেকানন্দের জন্মশৈশবে নরেন্দ্রনাথ যদিও খুব চঞ্চল ও কৌতুকপ্রিয় ছিলেন তবুও ধর্ম সম্বন্ধে তিনি খুব আগ্রহী ছিলেন। রাম, সীতা ও শিব মূর্তি’র পূজা ও ধ্যান করতে তিনি ভালোবাসতেন। মায়ের কাছে শোনা রামায়ণ মহাভারতের গল্প তাঁর শিশুমনে অবিস্মরণীয় ছাপ ফেলেছিল। শৈশবে তিনি ছিলেন সুশ্রী এবং সিংহশিশুর মতো বিক্রম ও রাজকীয় মর্যাদা বিশিষ্ট। আবার তিনি খুবই দয়ার্দ্র ‘চিত্তও ছিলেন এবং দরিদ্র বা প্রার্থী’ এলে, তাঁর হাতের কাছে যা-কিছু, থাকত তা সবই দান করতেন। এ ছাড়াও তাঁর মনে সন্ন্যাসী ও ধার্মি’ক ব্যক্তির জন্য স্বতঃস্ফূর্ত’ আকর্ষ’ণ ও শ্রদ্ধা ছিল। অত্যন্ত জিজ্ঞাসুমনা হওয়াতে তিনি প্রত্যেক সমস্যা বা প্রস্তাবের যুক্তিপূর্ণ প্রমাণ সহ সমাধান ও উত্তর চাইতেন। এই ভাবে বাল্যকাল থেকেই তাঁর বুদ্ধির ও হৃদয়ের সদ গুণাবলী প্রকাশিত হয়।