তুষারতীর্থ অমরনাথ দর্শন
প্লেগের প্রকোপ প্রশমিত হওয়ার পর, স্বামীজি এবং তাঁর পাশ্চাত্য দেশীয় ভক্তরা নৈনীতাল ও আলমোড়ার উদ্দেশে যাত্রা করলেন। তারপর তাঁরা কাশ্মীর যান এবং সেখান থেকে পুণ্যতীর্থ’ অমরনাথে ১৮৯৮ খ্রীষ্টাব্দের ২ আগস্ট গিয়ে পৌঁছান। এই ভ্রমণ তাঁর আধ্যাত্মিক জীবনে অন্যতম সন্ধিক্ষণ রূপে পরিগণিত হয়েছিল- যেমন হয়েছিল ১৮৮০ খ্রীস্টাব্দে শ্রীরামকৃষ্ণের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ এবং ১৮৯৩ খ্রীস্টাব্দে ধর্ম মহাসভায় তাঁর যোগদান। এইবার অন্যান্য যাত্রীদের সঙ্গে মিলে তাঁদের মতো গুহার পাশে বরফ গলা স্রোতে স্নান করেন এবং কেবল মাত্র কটিদেশ আচ্ছাদিত করে শিবমন্দিরে যখন তিনি প্রবেশ করেন তখনই তাঁর এক অতীন্দ্রিয় রোমাঞ্চকর উপলব্ধি হয় যার ফলে তাঁর হৃদযন্ত্রের স্থায়ী প্রসারণ ঘটে। বিবেকানন্দের শিবের প্রতি বিশেষ ভক্তি ছিল। বস্তুত তিনি ছিলেন তাঁর মাতার কাছে শিবের দান, কারণ তাঁর মাতা বারাণসীর বিশ্বেশ্বরের কাছে পুত্রকামনা করেছিলেন। তাই এতে আশ্চর্যের কিছু নেই যে যখন তিনি বিখ্যাত তুষারতীর্থে তুষারমণ্ডিত প্রতিমূর্তির কাছে গেলেন স্বভাবতই তিনি বিচলিত হলেন। দর্শনের পর কয়েকদিন তিনি শুধুমাত্র বলতেন ‘শিব’ ‘শিব’- সেই চিরসন্ন্যাসীর নাম, যিনি তুষারাবৃত হিমালয়ে ধ্যানানন্দে মগ্ন থাকেন। তিনি পরে বলেন, ‘যখন আমি অমরনাথে গেছি, তখনই শিব আমার মধ্যে প্রবেশ করেছেন। তিনি আমায় ত্যাগ করবেন না।’
অমরনাথের পরে তিনি শ্রীনগরের কাছে পবিত্র তীর্থ ‘ক্ষীর ভবানী মাতা’র মন্দিরে গেলেন। এখানেও তাঁর এক স্মরণীয় উপলব্ধি হয়- ‘মা’ তাঁকে সম্পূর্ণ প্রভাবিত করেন।