রামের নিকট বিভীষণের আশ্রয়লাভ
বিভীষণের বারবার অনুরোধ অগ্রাহ্য হলো। উপরন্তু ক্রুদ্ধ রাবণ তাকে পদাঘাত করে বিশ্বাসঘাতক বলে অভিযুক্ত করলেন। এই অপমান বিভীষণ আর সহ্য করতে পারলেন না। সুতরাং চারজন অনুচরসহ তিনি রাজসভা ত্যাগ করলেন। রামের চরণে আশ্রয় নেবেন এই তাদের ইচ্ছা। এই পাঁচজন আকাশ পথে উড়ে বানরবাহিনীর কাছে গেলে বানরগণ তাদের হত্যা করতে উদ্যত হল। বিভীষণ তখন আকাশ থেকে চিৎকার করে বললেন, আমরা শত্রু নই ; রামের চরণে আশ্রয় নিতে এসেছি। একথা বলে তারা অবতরণ করলে তাদের রামের কাছে নিয়ে যাওয়া হলো।
বিভীষণ রামের চরণে আশ্রয় প্রার্থী। সুগ্রীবের ঘোরতর আপত্তি, সন্দেহ—ইনি বুঝি রাবণের গুপ্তচর। লক্ষ্মণেরও ঐ কথা। কেবল হনুমান বললেন, ‘আমার মতে বিভীষণ আশ্রয় পেতে পারেন। তিনি ধার্মিক—নিত্য পূজা করেন—লঙ্কায় গিয়ে ওনারই গৃহে বেদমন্ত্র ধ্বনি শুনেছি।’ রাম বললেন, ‘রাবণকে ত্যাগ করার যথেষ্ট কারণ আছে, কিন্তু আমাকে ত্যাগ করার কোন কারণ থাকবে না। তাছাড়া আমি ক্ষত্রিয়, আশ্রয়প্রার্থীকে আশ্রয় দেওয়া আমার কর্তব্য।’
রাম বিভীষণকে ডেকে বন্ধু বলে গ্রহণ করলেন এবং এক উৎসবের মধ্যে বিভীষণ লঙ্কার রাজা বলে স্বীকৃত হলেন। সন্দিগ্ধ সুগ্রীব বললেন, প্রভু, রাবণ স্বয়ং যদি আপনার আশ্রয় চায়। রাম তৎক্ষণাৎ উত্তর দিলেন, “নিশ্চয়ই সে আশ্রয় পাবে’। শ্রীরামের মহত্ব ও ধর্মশীলতায় সকলে মুগ্ধ।
প্রশ্নঃ
- বিভীষণ কেন রাবণের সভা ছেড়ে চলে গেলেন?
- সুগ্রীবের মনে কি কি দন্দ্বের উদ্রেক হয়েছিল? রাম কিভাবে সেই সব দন্দ্বের সমাধান করলেন?
- বিভীষণকে আশ্রয় দেওয়ার মধ্যে দিয়ে রামের কোন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পেল?