একদিন ঈশ্বরাম্মা আমাকে বলেছিলেন, “স্বামী, আমাদের পুট্টাপর্তি একটি ছোট্ট গ্রাম। যেহেতু গ্রামে কোনো স্কুল নেই, ছেলেমেয়েরা বাধ্য হয় অনেকটা পথ হেঁটে পাশের গ্রামের স্কুলে যেতে। আমি জানি তুমি দয়ার সমুদ্র। দয়া করে এই গ্রামে একটা ছোট স্কুল প্রতিষ্ঠা ক’রো।” আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম তিনি কোথায় স্কুল স্থাপনের ইচ্ছা পোষণ করেন। তিনি বললেন তাঁর বাড়ির পিছনে তার নিজের একখণ্ড জমি আছে। তিনি চান সেখানেই স্কুল স্থাপিত হোক। যেহেতু তিনি চেয়েছিলেন, তাই আমি স্কুল স্থাপন করেছি। যদিও স্কুলটি ছোট ছিল, এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান খুব ধুমধাম করে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং সেখানে অনেক ভক্ত যোগদান করেছিলো। পরের দিন ঈশ্বরাম্মা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বিষয়ে তার সন্তুষ্টি ও আনন্দের অভিব্যক্তি প্রকাশ করলেন এবং বললেন যে তার আরো একটা বাসনা রয়েছে। তিনি চেয়েছিলেন এই গ্রামে একটি হাসপাতালও স্থাপিত হোক। তিনি বলেছিলেন, “স্বামী, তোমাকে আমি সমস্যায় ফেলতে চাইনা। তুমি যদি সমস্যা কবলিত হও, সারা পৃথিবী সমস্যা কবলিত হবে। তুমি যদি সুখী হও, সারা পৃথিবী সুখী হবে। হাসপাতাল নির্মাণের কাজটি যদি তোমাকে সুখ প্রদান করে তবে দয়া করে এখানে একটা হাসপাতাল স্থাপন ক’রো।” তাঁর ইচ্ছা অনুসারে আমি এই হাসপাতাল স্থাপন করেছি। সেই সময়ের একজন স্বনামধন্য ব্যক্তি বিজয়ওয়াড়া গোপাল রেড্ডি এই হাসপাতালটি উদ্বোধন করার জন্য আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। প্রতিবেশী গ্রামগুলি থেকে হাজারে হাজারে মানুষ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিল। এমন বিরাট ব্যাপার যে হতে পারে তা ঈশ্বরাম্মা কল্পনাও করতে পারেন নি। পরের দিন তিনি আমার কাছে এলেন ও বললেন, “স্বামী, আমার যদি এখন মৃত্যুও হয়, আমার কিছু যায় আসে না। আমার আর কোনও চিন্তা নেই, তুমি আমার সব ইচ্ছা, সব বাসনা পূর্ণ করেছো এবং গ্রামের মানুষদের দূঃখ কষ্ট প্রচুর পরিমাণে প্রশমিত করেছো।” আমি বললাম, “তোমার যদি আর কোনো বাসনা থাকে আমাকে এখন ব’লো।” উত্তরে তিনি দ্বিধাগ্রস্থ ভাবে বললেন যে তার আরো একটি ছোট্ট ইচ্ছে রয়েছে। তিনি বললেন, তুমি জানো যে বর্ষাকালে চিত্রাবতী নদীতে জলস্ফীতি ঘটে, প্লাবন হয়, কিন্তু গ্রীষ্মকালে এটি অতি ক্ষীণধারায় প্রবাহিত হয় এবং লোকেরা পানীয় জল পায় না। তাই তুমি দয়া করে দেখো যাতে গ্রামে কিছু কুয়ো খনন করা হয়।” আমি তাকে বললাম যে আমি কতগুলো ছোট ছোট কুয়ো খনন করেই থেমে থাকবো না, আমি সম্পূর্ণ রায়লসীমা অঞ্চলে পানীয় জল সরবরাহের ব্যবস্থা করবো। ঈশ্বরাম্মা বলেছিলেন,” “আমি জানিনা রায়লসীমা কি, আমি সন্তুষ্ট ও খুশি হব যদি আমাদের গ্রামে পানীয় জলের ব্যবস্থা হয়।”–বাবা
শ্রী সত্য সাই ‘ঈশ্বরাম্মা নন্দন’, ‘ঈশ্বরাম্মা প্রিয় তনয়া’ এইসব আদরের ডাকে সম্বর্ধিত হতে ভালোবাসতেন। যেসব ভজনগুলি দিব্য মাতা ও দিব্য অবতারের সুন্দর সম্পর্ককে সম্মানিত করে স্তুতি করে, সেগুলি যে শুধু আমাদের হৃদয়কে দিব্য আনন্দে পূর্ণ করে তাই নয়, এই গানগুলি যখন প্রভুর জন্য আমরা নিষ্ঠা ভক্তি ও প্রেমের সাথে গাই, তা প্রভুর হৃদয়কেও আনন্দে পরিপূর্ণ করে।